শিরোনাম
যশোর প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৯:২৮, ১৯ জুলাই ২০২৫
ছবি: ঢাকা এক্সপ্রেস
ননী ফলের বৈজ্ঞানিক নাম ‘মরিন্ডাসিট্রিফলিয়া’। এটি আফ্রিকা অঞ্চলের একটি ফল। তবে ফলটি ক্রান্তীয় অঞ্চল অর্থাৎ ভারত উপমহাদেশেও জন্মায়। ননী গাছে বারো মাস ফল ধরে। বর্তমানে এ ফল বাজারে দেড় থেকে দুই হাজার টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়। এর চারাও ৫০০ থেকে ১ হাজার টাকায় বিক্রি হয়ে থাকে। ননী গাছের পাতা ও ফল মানব দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির এক মহৌষধ। যদিও এখন পর্যন্ত খুব কম মানুষের কাছেই এ ফলটি পরিচিত। তবে বর্তমানে বিভিন্ন খাদ্য-দ্রব্য ও ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান ননী ফলের রস বোতল-ভর্তি করে বাজারজাত করছেন।
চাষি ইস্রাফিল হোসেন শার্শা উপজেলার বেনাপোল পৌরসভার নারায়ণপুর গ্রামে দুই বছর আগে দশ শতক জমি নিয়ে ১৫০টি চারা লাগিয়ে বাগান তৈরি করেন। বাগানটি সুরক্ষিত রাখতে তিনি পুরো জায়গায় কাটাতারের বেড়া দিয়েছেন। বাগানের এক পাশে ননী গাছের নার্সারিও গড়ে তুলেছেন ইস্রাফিল হোসেন। বাকি অংশে ৬ ফুট দূরত্ব রেখে গাছ রোপন করেছেন। ছোট-বড় মিলিয়ে তার বাগারে ১৫০টি গাছ রয়েছে। এ বছর কম বেশি সব গাছে ফল ধরেছে। বাগান শুরুর পর পরিচর্যায় তেমন কোনো খরচ নেই। পরবর্তীতে সামান্য সার ওষুধের প্রয়োজন হয়। গাছের বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ফলনও বাড়তে থাকে। শীত মৌসুমে ফলের দাম বেশি থাকে। তিনি আশা করছেন এবার প্রায় দুই থেকে আড়াই লাখ টাকার ফল বিক্রি করতে পারবেন।
চাষী ইস্রাফিল হোসেন বলেন, বাগান করতে তার খরচ হয়েছে দেড় লাখ টাকা। এখন থেকে এ বাগানে আর খরচ নেই। শুধু সার-ওষুধে হয়তো হাজার দুয়েক টাকা খরচ হবে বছরে। তা ছাড়া আর এক টাকাও ইনভেস্ট করা লাগবে না। ২০ বছর পর্যন্ত আর কোনো ইনভেস্ট ছাড়াই ইনকাম করতে পারবেন। এ বছর দুই থেকে আড়াই লাখ টাকা আয় হলে সামনে বছর ১০ লাখ টাকা হবে। গাছ যত বৃদ্ধি পাবে, ফলও বাড়বে। ফলের দামও বৃদ্ধি পাবে।
তিনি আরো জানান, তার বাগানে থাকা আফ্রিকান ননি ফল ব্রেস্ট ক্যানসারের মহৌষধ। অনেকেই কৌতুহল নিয়ে তার এই বাগান দেখতে আসেন। যাওয়ার সময় গাছের চারা ও ফল কিনে নিয়ে যান তারা।
বাগান দেখতে আসা বিল্লাল হোসেন বলেন, আমার এলাকায় নতুন একটি ফল চাষ হয়েছে। আমি সেটা দেখতে আসলাম। লোকমুখে শুনলাম এটা নাকি ননী ফল। তার ১০ শতাংশ জমিতে খরচ হয়েছে ১ থেকে দেড় লক্ষ টাকা। আমি আগামীতে দুই থেকে তিন বিঘা জমিতে চাষ করবো।
বাগান দেখতে আসা শফিকুল ইসলাম বলেন, বেনাপোল নারায়নপুর গ্রামে আমার এক ভাই লাভ জনক ব্যবসা ননী ফল লাগায়ছে। ফলটা ক্যান্সার রোগের জন্য নাকি অত্যান্ত উপকারী। আমি সেটা দেখার জন্য আছি। আশা করছি আগামীতে আমিও এফলের চাষ করবো।
বাগান দেখতে আসা তবিবর রহমান বলেন, আমি এ বাগান পরিদর্শনে আছি। এই ফলটি অত্যান্ত উপকারী। ক্যান্সারসহ আরো মারাত্বক ধরনের রোগর ঔষধ হিসাবে কাজ করে।
শার্শা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দীপক কুমান সাহা বলেন, বেনাপাল নারায়ণপুর এলাকায় ইস্রাফিল হোসেন নামে এক চাষী ১০ শতাংশ জমিতে ঔষধি গুন সম্পন্ন আফ্রিকান ননী ফল চাষ করেছেন। এ ফলে রয়েছে অনেক ঔষধি গুন। বিশেষ করে বেষ্ট ক্যান্সার রোগীদের জন্য এফল অত্যন্ত উপকারী।
ঢাকা এক্সপ্রেস/ইউকে