ঢাকা, বুধবার, ২৩ জুলাই ২০২৫

৭ শ্রাবণ ১৪৩২, ২৬ মুহররম ১৪৪৭

অচেতন করে সর্বস্ব লুট: চট্টগ্রাম থেকে গ্রেপ্তার লুণ্ঠনকারীরা

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১৯:০০, ২২ জুলাই ২০২৫

অচেতন করে সর্বস্ব লুট: চট্টগ্রাম থেকে গ্রেপ্তার লুণ্ঠনকারীরা

ছবি: ঢাকা এক্সপ্রেস

নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লার মুসলিমপাড়া এলাকায় এক দম্পতির জীবনে নেমে এসেছিল এক বিভীষিকাময় রাত। খাবারে চেতনানাশক মিশিয়ে তাদের অজ্ঞান করে বাসার সমস্ত মূল্যবান সম্পদ লুটে নিয়েছিল অজ্ঞান পার্টির সদস্যরা। রবিবার (২০ জুলাই) চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকা থেকে স্বামী-স্ত্রীসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা হলেন, হারুন জমাদ্দার (৫৩), তার স্ত্রী শাহানাজ ওরফে কুলসুম (৩৮), এবং তাদের সহযোগী রেজাউল গাজী (৩৮)। এদের মধ্যে কুলসুম ঘটনাস্থলে গৃহপরিচারিকার ছদ্মবেশে কাজ করছিলেন।

ফতুল্লা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শরিফুল ইসলাম জানান, গত ২৪ জুন রাতে মুসলিমপাড়ার তাজুর মাঠ সংলগ্ন নিজাম মিয়ার দ্বিতীয় তলার ফ্ল্যাটে বসবাসকারী এক দম্পতির সঙ্গে এই ভয়ঙ্কর প্রতারণার ঘটনা ঘটে। দম্পতিকে কুলসুম নামের গৃহপরিচারিকা রাতের খাবারে ভাতের সঙ্গে চেতনানাশক ওষুধ মিশিয়ে অজ্ঞান করে ফেলে। পরে বাসার নগদ অর্থ, মোবাইল ফোন ও স্বর্ণালঙ্কার লুট করে পালিয়ে যান তারা।

ভুক্তভোগীরা পরদিন জ্ঞান ফিরে আসার পর অসুস্থ অবস্থায় চিকিৎসা নিতে গেলে ঘটনাটি ধরা পড়ে এবং থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এরপরই পুলিশ প্রযুক্তির সহায়তায় অনুসন্ধান শুরু করে এবং প্রথমে গৃহপরিচারিকা কুলসুমকে চট্টগ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে গ্রেপ্তার করা হয় তার স্বামী হারুন ও সহযোগী রেজাউল গাজীকেও।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গ্রেপ্তারকৃতদের কাছ থেকে লুণ্ঠিত মালামালের কিছু অংশ উদ্ধার করা হয়েছে। বাকি টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার উদ্ধারের জন্য তাদের আদালতে হাজির করে রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছে। পুলিশের ধারণা, এই তিনজন একটি অজ্ঞানপার্টির সক্রিয় সদস্য এবং এর আগেও তারা একই কৌশলে বিভিন্ন এলাকায় লুটপাট চালিয়েছে।

ফতুল্লা থানার ওসি বলেন, ‘এই অপরাধীদের গ্রেপ্তারে আমরা সফল হয়েছি। তবে তাদের কাছে থাকা সমস্ত লুটের মালামাল এখনও উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। আমরা তাদের রিমান্ডে নিয়ে বিস্তারিত জিজ্ঞাসাবাদ করব। আশা করছি পুরো চক্র সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য বেরিয়ে আসবে।’

এই ঘটনায় ফতুল্লা এলাকায় নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে। প্রশাসনের প্রতি জনগণের দাবি, শুধু দোষীদের গ্রেপ্তার নয়, তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে হবে এবং এই ধরনের অপরাধ যেন ভবিষ্যতে আর না ঘটে, সে জন্য ব্যাপক সচেতনতা কর্মসূচি ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে বলে জানান সচেতন মহল।

ঢাকা এক্সপ্রেস/ইউকে

এ সম্পর্কিত খবর

আরও পড়ুন