ঢাকা, শুক্রবার, ১১ জুলাই ২০২৫

২৭ আষাঢ় ১৪৩২, ১৫ মুহররম ১৪৪৭

‘কুদস ফোর্স’ এখন ইসরায়েলের প্রধান টার্গেট

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ: ২১:৩৯, ২১ জুন ২০২৫

‘কুদস ফোর্স’ এখন ইসরায়েলের প্রধান টার্গেট

ইসরায়েল কুদস ফোর্সের দুই শীর্ষস্থানীয় কমান্ডারকে হত্যা করার দাবি করার পর মধ্যপ্রাচ্যের নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা বিশ্লেষণে ফের আলোচনায় এসেছে এই গোপনতম বাহিনীর নাম। নিহত দুইজন হলেন বেহনাম শাহরিয়ারি ও সাঈদ ইজাদি। এই হামলাগুলো ইঙ্গিত দিচ্ছে, গাজা, লেবানন বা সিরিয়ার সীমান্ত ছাড়িয়ে এখন ইসরায়েল সরাসরি ‘রুট কজ’ অর্থাৎ ইরানের অভ্যন্তরীণ সেনাঘাঁটি ও নেতাদের টার্গেট করছে।

কে এই বেহনাম শাহরিয়ারি?

ইসরায়েলের দাবি অনুযায়ী, বেহনাম শাহরিয়ারি ছিলেন কুদস ফোর্সের দ্বিতীয় শীর্ষস্থানীয় কমান্ডার। তিনি মূলত ইরান থেকে হিজবুল্লাহ, হামাস ও অন্যান্য মিত্র গোষ্ঠীর কাছে অস্ত্র সরবরাহের দায়িত্বে ছিলেন। তার মৃত্যুকে কুদস ফোর্সের জন্য কৌশলগত ক্ষতি হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।

এর আগে ইসরায়েলি বাহিনী সাঈদ ইজাদিকেও হত্যার দাবি করে। তিনি কুদস ফোর্সের ‘প্যালেস্টাইন শাখার’ প্রধান হিসেবে কাজ করছিলেন বলে যুক্তরাজ্যের তথ্য। ইজাদির বিরুদ্ধে মার্কিন নিষেধাজ্ঞাও জারি ছিল।

কী এই কুদস ফোর্স?

ইরানের ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কর্পস (IRGC)-এর একটি বিশেষ শাখা হচ্ছে কুদস ফোর্স। এদের কাজ দেশের বাইরে সামরিক প্রভাব ও ‘ছায়া-সক্ষমতা’ বিস্তার করা। ১৯৭৯ সালের বিপ্লবের পর গঠিত এই বাহিনী সরাসরি ইরানের সর্বোচ্চ নেতা খামেনির নিয়ন্ত্রণে পরিচালিত হয়।

হিজবুল্লাহ, হামাস, ইয়েমেনের হুথি, ইরাকের মিলিশিয়া গোষ্ঠী—সব জায়গায় কুদস ফোর্সের উপস্থিতি ইরানকে মধ্যপ্রাচ্যে ‘মাল্টি-ফ্রন্ট পাওয়ার’ হিসেবে গড়ে তুলেছে।

একের পর এক টার্গেট কিলিং

২০২০ সালে কুদস ফোর্সের সবচেয়ে পরিচিত মুখ জেনারেল কাসেম সোলাইমানিকে বাগদাদে ড্রোন হামলায় হত্যা করে যুক্তরাষ্ট্র। তিনি ২২ বছর ধরে কুদস ফোর্সের নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন। তার মৃত্যুর পরও কুদস ফোর্স বিস্তৃত নেটওয়ার্ক বজায় রেখেছে। তবে সম্প্রতি একের পর এক কমান্ডারকে হত্যা করা যেন এক নতুন বার্তা বহন করছে।

ইসরায়েলের কৌশলগত বার্তা

বিশ্লেষকদের মতে, ইসরায়েল এই বার্তা দিতে চাইছে যে তারা শুধু গাজায় হামাস বা উত্তরে হিজবুল্লাহকে লক্ষ্য করছে না—তারা এখন এই গোষ্ঠীগুলোর পেছনের রাষ্ট্রীয় কাণ্ডারিকেও টার্গেট করছে। এ ধরনের অভিযানগুলো তেহরানের জন্য চাপ তৈরি করবে, বিশেষ করে যখন তাদের অভ্যন্তরে রাজনৈতিক উত্তরাধিকার নিয়েও উদ্বেগ বাড়ছে।

পরিণতি কী হতে পারে?

কুদস ফোর্স দীর্ঘদিন ধরে অঞ্চলজুড়ে সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর মাধ্যমে ছায়া-যুদ্ধ পরিচালনা করেছে। কিন্তু এখন ইসরায়েল তাদের সরাসরি কৌশলগত হত্যার শিকার করছে। এর ফলে ভবিষ্যতে ইরানের প্রতিক্রিয়া কতটা সরাসরি হবে, তা নিয়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নতুন করে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।

ঢাকা এক্সপ্রেস/ এমআরএইচ

আরও পড়ুন