শিরোনাম
মাদারীপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৮:৪৮, ১১ জুন ২০২৫ | আপডেট: ১১:৪৮, ১১ জুন ২০২৫
হামলার সময়কার দৃশ্য। ক্লোজড সার্কিট টেলিভিশন (সিসিটিভি) ক্যামেরার ফুটেজ থেকে নেওয়া, ছবি: সংগৃহীত
মঙ্গলবার (১০ জুন) রাত আটটার দিকে রাজৈর উপজেলার সীমান্তবর্তী গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরের ছাগলছিড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
হামলায় আহত মাদারীপুর জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন যুগ্ম আহ্বায়ক আশিকুর ইসলাম (২৩) ও কিরণ আক্তারকে (২৬) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ছাড়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্যসচিব মাসুম বিল্লাহ, আরেক যুগ্ম আহ্বায়ক দিয়া ইসলাম ও মিথিলা ফারজানা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্যদের একটি দল জুলাই আন্দোলনে রাজৈর উপজেলার শহীদ ও আহত পাঁচ শিক্ষার্থীর বাড়িতে মৌসুমি ফল বিতরণ করে মাদারীপুর শহরে ফিরছিলেন। ফেরার পথে তাদের বহনকারী পিকআপ ভ্যান রাজৈর উপজেলার সীমান্তবর্তী গোপালগঞ্জের ছাগলছিড়া এলাকার একটি রেস্তোরাঁয় বিরতি দেয়। এ সময় ছাত্রদের লক্ষ্য করে কটূক্তিমূলক মন্তব্য করেন একটি বাসের কর্মীরা। এর প্রতিবাদ করতে ওই বাসে ওঠেন কয়েকজন ছাত্র। এ সময় বাসের কর্মীদের সঙ্গে তাদের কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে বাসের শ্রমিক ও রেস্তোরাঁর কর্মীরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা–কর্মীদের ওপর লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা চালান। এ সময় স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এলে হামলাকারীরা পালিয়ে যান। পরে আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে মাদারীপুর জেলা হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
মাদারীপুর জেলা হাসপাতালের মেডিক্যাল অফিসার অখিল সরকার বলেন, দুজন ছাত্রনেতা আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি আছেন। এ ছাড়া মারধরের শিকার আরো কয়েকজন প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।
মাদারীপুর জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যুগ্ম আহ্বায়ক দিয়া ইসলাম বলেন, আমরা নারী সদস্যরাও হামলাকারীদের হাতে মারধরের শিকার হয়েছি।
মুকসুদপুর উপজেলার সিন্ধিয়াঘাট পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) আলমগীর হোসেন জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্যদের একটি দল জুলাই আন্দোলনে রাজৈর উপজেলার শহীদ ও আহত পাঁচ শিক্ষার্থীর বাড়িতে মৌসুমি ফল বিতরণ করে মাদারীপুর শহরে ফিরছিল। ফেরার পথে তাদের বহনকারী পিকআপভ্যান গোপালগঞ্জ জেলার মুকসুদপুর উপজেলার চরপ্রসন্নদি এলাকার বরিশাল গেট হোটেলে বিরতি নেয়। এ সময় ছাত্রদের লক্ষ্য করে কটূক্তি করেন মিজান পরিবহন নামের একটি যাত্রীবাহী বাসের শ্রমিকরা। এর প্রতিবাদ করতে ওই বাসে ওঠেন কয়েকজন ছাত্র। এ সময় বাস শ্রমিকদের সঙ্গে তাদের বাকবিতণ্ডা হয়।
তিনি আরো বলেন, একপর্যায়ে বাস ও হোটেলের শ্রমিকরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীদের ওপর লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা চালান। চিৎকার-চেঁচামেচি শুনে গ্রামের লোকজন এগিয়ে এলে হামলাকারীরা পালিয়ে যান। পরে আহতদের উদ্ধার করে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়।
এসআই আলমগীর বলেন, মুকসুদপুর খানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তফা কামাল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে চরপ্রসন্নদি গ্রামের আজিজুল শেখের ছেলে ইব্রাহিম শেখ সাগরকে (২৫) আটক করেছে পুলিশ। মুকসুদপুর থানায় মামলা করার প্রস্তুতি চলছে। মিজান পরিবহন ও বরিশাল গেটওয়ে হোটেলের শ্রমিকরা এ হামলা চালিয়েছেন বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। মিজান পরিবহনের বাসটি ভাঙ্গা থেকে বরিশাল যাচ্ছিল। পথে বাসটি ওই হোটেলে বিরতি নেয় বলে জানান তিনি।
মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) জাহাঙ্গীর আলম বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের ওপর হামলা খবর পেয়ে ঘটনাস্থল ও হাসপাতালে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। আমরা গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর থানার সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলেছি। আহত ব্যক্তিরা অভিযোগ দিলে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ঢাকা এক্সপ্রেস/আরইউ