শিরোনাম
ক্রীড়া প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশ: ১৭:৪৬, ১০ জুন ২০২৫
সাদা জার্সি গায়ে চাপিয়ে, মুখে লাল-সবুজ রঙ মেখে জাতীয় স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে ঢুকে পড়েছেন হাজারো দর্শক। ঈদের ছুটির মাঝেও যেন ‘জাতীয় দায়িত্ব’ বলে মনে করে অনেকেই ছুটে এসেছেন ম্যাচ দেখতে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অ্যাডভোকেট মোশারফ হোসেন জানালেন, “ফিরোজ কামাল একাডেমি থেকে আমরা ১৬-১৭ জন ফুটবলার নিয়ে এসেছি। ইনশা আল্লাহ, বাংলাদেশ আজ ২-১ গোলে জিতবে।” শুধু তারাই নন, তাদের পরিচিত আরেকটি একাডেমিও এসেছে ঢাকায়।
চট্টগ্রাম থেকে সকালে এসে হাজির মারুফ ইসলাম। হাতে ‘Fantastic Four’ লেখা প্ল্যাকার্ড। হাসিমুখে বললেন, “জামাল, হামজা, শমিত আর ফাহামিদুল—এটাই আমার ফ্যান্টাস্টিক ফোর। আশা করছি ২-১ গোলে জিতব। আমি চাই ফাহামিদুল গোল করুক, আর হামজা-শমিত অ্যাসিস্ট দিক।”
সবার ভালোবাসা ছাপিয়ে যায় মোহাম্মদ শাহজাহানের গল্প। বয়স ৬৮। গেট খুলেছে দেরিতে, তবু ক্লান্ত পা নিয়ে তিনি পৌঁছে গেছেন গ্যালারিতে। বললেন, “ছেলে টিকিট কিনে দিয়েছে। অনেক দিন ধরেই খেলা দেখি। আমি শুধু চাই বাংলাদেশ জিতুক।”
নারায়ণগঞ্জ থেকে খেলা দেখতে এসেছেন মাসুদ। সঙ্গে তার ১১ বছরের ছেলে খানজাদা। বাবার মুখে হাসি, ছেলের চোখে স্বপ্ন—“হামজা আমার ছেলের প্রিয় খেলোয়াড়। গত তিন দিন ধরে সে ঘুমায়নি উত্তেজনায়! আমরা বিশ্বাস করি বাংলাদেশ জিতবে।”
ভুটানের বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচে জাতীয় দলের হয়ে অভিষেক হয় আল আমিনের। ছেলের খেলায় চোখ রাখবেন বাবা আমিনুল ইসলাম। জানালেন, “ছেলের খেলা দেখতে এসেছি। শুরু থেকে মাঠে নামলে আরও ভালো লাগবে। ইনশা আল্লাহ গোলও করবে।”
কনটেন্ট ক্রিয়েটর সিহাব হাসান নিয়নের প্রত্যাশা সবার মতোই সরল, কিন্তু দৃঢ়—“যত গোলেই হোক, জিতলেই খুশি। ১-০ হলেও চলবে, কিন্তু জেতাটা জরুরি।”
আজকের ম্যাচ শুধু ১১ জন ফুটবলারের লড়াই নয়, এটি লাখো মানুষের ভালোবাসা, স্বপ্ন ও গর্বের প্রতিচ্ছবি। গ্যালারিতে বসে থাকা প্রতিটি মানুষের চোখে আজ একটাই ছবি—জয়। একটি গোল মানেই উল্লাস, একটি অ্যাসিস্ট মানেই বিস্ময়, আর একটি জার্সি মানেই আত্মপরিচয়ের গর্ব।
আজ সন্ধ্যা ৭টা—বাংলাদেশের লড়াই শুরু হবে সিঙ্গাপুরের বিরুদ্ধে। কিন্তু জয়টা অনেক আগেই শুরু হয়েছে গ্যালারিতে, স্টেডিয়ামের বাইরে, হাজারো দর্শকের হৃদয়ে।
ঢাকা এক্সপ্রেস/ এমআরএইচ