ঢাকা, শনিবার, ১৯ জুলাই ২০২৫

৩ শ্রাবণ ১৪৩২, ২৩ মুহররম ১৪৪৭

ঋণের দায়ে মিশুক ছিনতাই করে বন্ধুকে হত্যা, আদালতে রিফাত

কুমিল্লা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২০:০২, ১৭ জুলাই ২০২৫

ঋণের দায়ে মিশুক ছিনতাই করে বন্ধুকে হত্যা, আদালতে রিফাত

ছবি: ঢাকা এক্সপ্রেস

কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলায় ঋণের দায়ে বন্ধুদের পরামর্শে মিশুক ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে এক চালককে নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনার দুই সপ্তাহ পর মূল আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে থানা পুলিশ। বৃহস্পতিবার দুপুরে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন চৌদ্দগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ হিলাল উদ্দিন আহমেদ।

থানা সূত্রে জানা যায়, গত ৩ জুলাই বৃহস্পতিবার বিকালে চৌদ্দগ্রামের মুন্সিরহাট ইউনিয়নের নাঙ্গুলিয়া খালের লক্ষীপুর কালভার্টের নিচে এক অজ্ঞাত যুবকের মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেয়। নিহতের শরীরে ছুরিকাঘাত ও কুপিয়ে হত্যার স্পষ্ট চিহ্ন ছিল। পরবর্তীতে নিহতের পরিচয় শনাক্ত করেন পৌর এলাকার পূর্ব চান্দিশকরা গ্রামের বাসিন্দা খায়রুল ইসলাম। তিনি জানান, নিহত যুবক তার মেজো ছেলে তাফরুল ইসলাম সৈকত (২৬), যার বাড়ি রংপুর জেলার গঙ্গাচড়া থানার চর ঈশ্বরকাল গ্রামে।

খবর পেয়ে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের পর স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করে। এ ঘটনায় অজ্ঞাত আসামির বিরুদ্ধে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন নিহতের পিতা খায়রুল ইসলাম। মামলা তদন্তে নামেন চৌদ্দগ্রাম থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. মুরাদ হোসেন।

তথ্যপ্রযুক্তি ও গোয়েন্দা নজরদারির ভিত্তিতে গত বুধবার দিবাগত রাতে অভিযান চালিয়ে কনকাপৈত ইউনিয়নের তারাশাইল এলাকা থেকে রিফাত (২৮) নামের এক যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি একই এলাকার আবুল কাশেমের ছেলে এবং নিহত তাফরুলের পাশের বাসার ভাড়াটিয়া। রিফাতের কাছ থেকে নিহতের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটিও উদ্ধার করা হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে রিফাত হত্যার দায় স্বীকার করে। পরে আদালতে দেওয়া ১৬৪ ধারার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে রিফাত জানান, তিনি ও নিহত সৈকত উভয়েই মিশুক চালাতেন এবং একই বাসায় ভাড়াটিয়া হিসেবে থাকতেন। রিফাত ঋণ ও কিস্তির চাপে পড়ে দুই বন্ধুর সঙ্গে আলোচনা করে একটি মিশুক ছিনতাই করে বিক্রির পরিকল্পনা করেন। তারা মাঝে মধ্যে একসঙ্গে মাদকও সেবন করতেন।

পরিকল্পনা অনুযায়ী, ২ জুলাই রাত ১১টার দিকে রিফাত ও সৈকত মিশুক নিয়ে নাঙ্গুলিয়া খালের পাশে যায়। দীর্ঘক্ষণ গল্প করার পর রিফাত পূর্বপরিকল্পিতভাবে ঘটনাস্থলে লুকিয়ে রাখা একটি ধারালো ধামা দিয়ে সৈকতের মাথায় আঘাত করেন। সৈকত কালভার্টের উপর পড়ে গেলে রিফাত তাকে আরো কয়েকবার কুপিয়ে হত্যা করেন। পরে তার মোবাইল, নগদ টাকা ও মিশুকের চাবি নিয়ে মরদেহ খালের নিচে ফেলে দিয়ে মিশুক নিয়ে পালিয়ে যান।

চৌদ্দগ্রাম থানা পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার সঙ্গে আরো দুইজন জড়িত থাকার তথ্য পাওয়া গেছে। তদন্তের স্বার্থে তাদের নাম প্রকাশ করা হয়নি। তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

ঢাকা এক্সপ্রেস/ইউকে

আরও পড়ুন