কুমিল্লা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২১:১২, ১৭ জুলাই ২০২৫ | আপডেট: ২২:৪৬, ১৭ জুলাই ২০২৫
ছবি: ঢাকা এক্সপ্রেস
বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে এক অভিভাবক তার সন্তানকে স্কুলে পৌঁছাতে তাড়াহুড়ো করে ওঠেন অনিকের চালানো একটি অটোরিকশায়। যাত্রা শেষে নেমে যাওয়ার সময় ভুল করে তিনি তার টাকা ভর্তি ব্যাগটি সিটে রেখেই চলে যান। ব্যাগে ছিল প্রায় ১৫ লাখ টাকা। চোখে না পড়লে হয়তো বিষয়টি আর কখনো খেয়ালেই আসত না। কিন্তু অনিকের সততা তার চোখকে এড়িয়ে যেতে দেয়নি। টাকা ভর্তি ব্যাগ দেখে তিনি প্রথমেই ফোন করেন তার বাবাকে, যিনি নিজেও একজন অটোরিকশা চালক।
বাবার পরামর্শ ছিল স্পষ্ট ‘হারাম টাকা দিয়ে বাঁচা যায় না। যে হারিয়েছে, তাকে খুঁজে দে।’
সেই নির্দেশনা মাথায় নিয়েই অনিক শুরু করেন মানুষের খোঁজ। প্রায় ৩০-৪০ মিনিট ধরে চেনা-অচেনা গলি আর রাস্তায় খুঁজে ফেরেন সেই যাত্রীকে। একসময় তিনি নিজেই ব্যাগ নিয়ে যাত্রীর বাসার আশপাশে এসে খোঁজ শুরু করেন। সবার সামনে, অক্ষত অবস্থায় ব্যাগটি ফিরিয়ে দেন।
ঘটনাটি মুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়। কেউ বিশ্বাস করতে পারছিল না যে এই টাকাভর্তি ব্যাগ, যা হয়তো অনেককেই লোভে ফেলে দিত তা ফেরত দিয়েছে এক তরুণ অটোরিকশা চালক। ফেসবুকে অনিককে নিয়ে চলছে প্রশংসার বন্যা। অনেকে লিখেছেন, এই সমাজে এখনও অনিকের মতো সৎ মানুষ আছে বলেই আমরা আশাবাদী হতে পারি। এমন মানুষেরা সমাজের আসল রোল মডেল।
অনিক জানালেন, আমার বাবাই আমার সবচেয়ে বড় আদর্শ। ছোটবেলা থেকেই তিনি শিখিয়েছেন সৎ থাকতে, মানুষের উপকার করতে। টাকার লোভ নয়, শান্তি আসে নিজের কাজের মধ্যে।
চৌদ্দগ্রামের সাধারণ মানুষ বলছেন, অনিক শুধু টাকাই ফেরত দেননি, তিনি ফিরিয়ে দিয়েছেন হারিয়ে যাওয়া বিশ্বাস, সততা ও মানবতার এক দ্যুতিময় নজির।
অনিকের মতো যুবকদের উৎসাহ দিতে সমাজের প্রতিটি স্তরে প্রয়োজন এমন ইতিবাচক গল্পের ছড়িয়ে পড়া। এই তরুণ যেন হয়ে ওঠে আগামীর প্রজন্মের অনুকরণীয় মুখ।
ঢাকা এক্সপ্রেস/ইউকে