ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই ২০২৫

১৬ শ্রাবণ ১৪৩২, ০৫ সফর ১৪৪৭

নাগরপুরে ধলেশ্বরী নদীর তীরে গড়ে উঠেছে অবৈধ সীসা কারখানা

নাগরপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১৯:১৫, ৩০ জুলাই ২০২৫

নাগরপুরে ধলেশ্বরী নদীর তীরে গড়ে উঠেছে অবৈধ সীসা কারখানা

ছবি: ঢাকা এক্সপ্রেস

টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলার এলাসিন শামসুল হক সেতুর পাশে ধলেশ্বরী নদীর তীরে সহবতপুর ইউনিয়নের বীর সলিল গ্রামের শেষ সীমানায় গড়ে উঠেছে একটি অবৈধ ব্যাটারির সীসা গলানোর কারখানা। মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কারখানাটি ইটের দেয়াল ঘেরা হলেও কোনো ধরনের ছাড়পত্র বা পরিবেশগত সুরক্ষা ব্যবস্থা ছাড়াই এটি পরিচালিত হচ্ছে।

কারখানায় দেখা যায়, সীসা গলানোর সময় নির্গত কালো ধোঁয়া ও ব্যাটারির এসিডযুক্ত তরল বর্জ্য সরাসরি নদীতে ফেলা হচ্ছে, যার ফলে আশপাশের পরিবেশ ও মানুষের স্বাস্থ্য মারাত্মক হুমকির মুখে পড়েছে। বিষাক্ত ধোঁয়ায় দূষিত হচ্ছে বাতাস, আর এসিড মিশ্রিত পানি নদীর জলজ সম্পদ ধ্বংস করছে বলে আশঙ্কা করছেন পরিবেশবাদীরা।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এই অবৈধ কারখানাটি পরিচালনা করছেন দেলদুয়ার উপজেলার নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামী লীগ সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক শিবলী সাদিকের ভাই নান্নু। তথ্য সংগ্রহের সময় কারখানার শ্রমিকদের মোবাইল দিয়ে তার সঙ্গে কথা বলানো হলে তিনি সরাসরি প্রাণনাশের হুমকি দেন।

কারখানার আশপাশে বসবাসরত বেশ কয়েকটি পরিবার, যাদের অধিকাংশই পার্শ্ববর্তী চোহালী উপজেলার নদীভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে এখানে বসতি গড়েছে, তারাও কারখানার বিষাক্ত ধোঁয়া ও গন্ধে অতিষ্ঠ। তবে তারা ভয়ে মুখ খুলতে চাইছেন না।

এ বিষয়ে নাগরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আরাফাত মোহাম্মদ নোমান বলেন, ‘এই অবৈধ সীসা কারখানার বিরুদ্ধে অতি দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অভিযান চালিয়ে এটি ভেঙে দেওয়া হবে।’

এ ছাড়াও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) দীপ ভৌমিক জানান, ‘কারখানাটি উচ্ছেদ করতে হলে প্রথমে নথিপত্র তৈরি করে ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে অভিযান চালাতে হবে। ইতিমধ্যে বিষয়টি জেলা প্রশাসক (ডিসি) স্যারের নজরে আনা হয়েছে।’

তিনি আরো জানান, ইউএনও মহোদয় অল্প সময়ের মধ্যেই স্থায়ীভাবে কারখানাটি ভেঙে ফেলার জন্য নির্দেশনা দেবেন।

এদিকে পরিবেশ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, সীসা গলানোর মতো ঝুঁকিপূর্ণ শিল্প স্থাপন করতে হলে অবশ্যই পরিবেশ ছাড়পত্র নিতে হয়। কিন্তু এই কারখানাটির কোনো বৈধ অনুমতি নেই। এ ধরনের কারখানা পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি তৈরি করে।

স্থানীয় সচেতন মহল অবিলম্বে এই কারখানার কার্যক্রম বন্ধ করে পরিবেশ ও মানুষের জীবন রক্ষার আহ্বান জানিয়েছেন।

ঢাকা এক্সপ্রেস/ইউকে

এ সম্পর্কিত খবর

আরও পড়ুন