ঢাকা, রোববার, ০১ জুন ২০২৫

১৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, ০৪ জ্বিলহজ্জ ১৪৪৬

টানা বৃষ্টিতে পানির নিচে নারায়ণগঞ্জ, বিপর্যস্ত জনজীবন

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১৮:০৮, ৩০ মে ২০২৫

টানা বৃষ্টিতে পানির নিচে নারায়ণগঞ্জ, বিপর্যস্ত জনজীবন

ভারী বৃষ্টিতে শহরের প্রায় সব সড়কে এভাবে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। ছবি: ঢাকা এক্সপ্রেস 

টানা ভারী বর্ষণে জলাবদ্ধতায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে নারায়ণগঞ্জ মহানগরীর জনজীবন। বৃহস্পতিবার (২৯ মে) সকাল থেকে শুরু হওয়া প্রবল বৃষ্টিপাতে শহরের প্রধান সড়ক বিবি রোডসহ প্রায় সব এলাকাই তলিয়ে গেছে পানির নিচে সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত টানা বৃষ্টিতে শহরের অলিগলি ও মহল্লায় হাঁটুপানি জমে যায়। এতে থমকে গেছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছেন শ্রমজীবী মানুষ ও অফিসগামী নাগরিকরা। 

বিকেলে শহরের চাষাঢ়া, দেওভোগ, বাবুরাইল, খানপুর, বাংলাবাজার, নিতাইগঞ্জ এলাকায় দেখা যায়, রিকশা চলছে ঠেলেঠুলে, অটো রিকশা ও মোটরসাইকেল কোথাও অচল হয়ে পড়ে আছে। প্রধান সড়ক বিবি রোডেও যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। 

চাষাঢ়া মোড়ে দাঁড়িয়ে থাকা এক যাত্রী বলেন, ‘বৃষ্টি থেমেছে অনেকক্ষণ, কিন্তু রাস্তায় এখনও পানি জমে আছে। রিকশা পাচ্ছি না, বাধ্য হয়ে হেঁটে বাসায় ফিরছি।’ 

শুধু রাস্তাই নয়, জলাবদ্ধতার পানি ঢুকে পড়েছে অনেক বাসাবাড়ি ও দোকানে। ড্রেনের নোংরা পানি উঠে এসেছে নিচতলার ঘরে। নিরাপত্তার জন্য অনেক এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ রাখা হয়েছে। 

দেওভোগের বাসিন্দা ও রিকশাচালক সোহেল মিয়া বলেন, ‘চার্জ শেষ, গ্যারেজেও যেতে পারছি না। পানি ঢুকে গেছে ব্যাটারির ভিতরে। এখন ঠেলে নিতে হবে, আজ আর কোনো ইনকাম হলো না।’ 

নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা গেছে, অপরিকল্পিত নগরায়ণ ও দুর্বল ড্রেনেজ ব্যবস্থার কারণে প্রতি বছর বর্ষাকালে এ ধরনের জলাবদ্ধতা তৈরি হয়। বর্তমানে ৭ কিলোমিটার বর্জ্য ও পানি নিষ্কাশনের ড্রেন নির্মাণের কাজ চলছে, যার মধ্যে ৩ কিলোমিটার কাজ শেষ হয়েছে। 

নাসিকের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘ড্রেনগুলো অনেক জায়গায় বন্ধ হয়ে আছে। জনগণ নিজেরাই ড্রেনে ময়লা ফেলে, এটাও বড় সমস্যা। তবে নতুন ড্রেন নির্মাণ শেষ হলে সমস্যার সমাধান হবে।’ 

নাসিক প্রশাসক এইচ এম কামরুজ্জামান নগরবাসীর ভোগান্তির জন্য দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, ‘আমরা দ্রুত ড্রেন নির্মাণের কাজ শেষ করার চেষ্টা করছি।’ 

তবে কবে নাগাদ এ সমস্যার স্থায়ী সমাধান হবে, সে বিষয়ে কেউ স্পষ্ট করে কিছু বলেননি। 

এদিকে, আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, আগামী কয়েকদিনও বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকতে পারে। ফলে দুর্ভোগ আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। 

ঢাকা এক্সপ্রেস/এনএ 

আরও পড়ুন