ঢাকা, রোববার, ০১ জুন ২০২৫

১৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, ০৪ জ্বিলহজ্জ ১৪৪৬

কোরবানির পশু পরিচর্যায় ব্যস্ত খামারিরা 

বাণিজ্যিক খামারগুলোতে বিক্রি শেষ পর্যায়ে 

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২২:১২, ৩০ মে ২০২৫

বাণিজ্যিক খামারগুলোতে বিক্রি শেষ পর্যায়ে 

বিক্রির জন্য প্রস্তুত দেশীয় খামারের গরু। ছবি: ঢাকা এক্সপ্রেস 

পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে নারায়ণগঞ্জের খামারগুলোতে কোরবানির পশু পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন খামারিরা। তবে গোখাদ্যের মূল্যবৃদ্ধি ও পশুর অতিরিক্ত সরবরাহ থাকায় দাম নিয়ে শঙ্কায় পড়েছেন তারা। খামারিরা চান দেশীয় চাহিদা মেটাতে বিদেশ থেকে যেনো গরু না আসে। 

জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগ জানিয়েছে, কোরবানির জন্য জেলায় পশুর চাহিদা ৯৯ হাজার ২৫২ হলেও এবার লালন-পালন করা হয়েছে ৯৭ হাজার ৪১৭ টি পশু, যা চাহিদার তুলনায় কিছুটা কম হলেও এই সময়ের মধ্যে বিভিন্ন জেলা থেকে আসা পশু সে চাহিদার চেয়েও মজুদ অনেক বেড়ে যাবে। 

জেলার পাঁচটি উপজেলায় প্রায় সাড়ে চার হাজার ছোট-বড় খামারে চলছে কোরবানির পশুর পরিচর্যা। ইতিমধ্যে অনেক খামারে পশু বেচাকেনা শুরু হয়ে গেছে। এর মধ্যে সদর উপজেলার আর কে এগ্রো ফার্ম, বন্দর উপজেলার এস এস ক্যাটেল, সোনারগাঁও নাবিল এগ্রো খামারগুলোতে বেচাকেনা প্রায় শেষ বললেই চলে। 

প্রাকৃতিক উপায়ে এসব গরু লালন-পালন করা হচ্ছে। শুধু এই সকল খামারেই নয়, জেলার অন্যান্য খামারেও চলছে অতিরিক্ত যত্ন, পরিচর্যা ও পশু চিকিৎসার ব্যবস্থা। যাতে ক্রেতা আকৃষ্ট করা হয় খুব সহজে। 
আরকে এগ্রো খামার মালিক আহমেদ রাসিব জানান, তার খামারে এ বছরের জন্য দেশীয় জাতের পাঁচ শতাধিক গরু রয়েছে। 

এ ছাড়াও, দেশি জাতের গরুর পাশাপাশি সিন্ধি, শাহিওয়াল, ব্রাম্মা, বুট্টিসহ নানা জাতের বিদেশি গরু, ছাগল ও মহিষ সাথে বেশ কয়েকটি দুম্বা বিক্রির জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। 

তবে অনেক খামারিরাও বলছেন, ‘গেলো বছরের তুলনায় গোখাদ্যের দাম অনেক বেড়েছে। পাশাপাশি অতিরিক্ত পশু থাকায় গরুর সঠিক দাম পাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।’ 

তারা জানান, গরুগুলোকে পুষ্টিকর খাবার যেমন, খৈল, ভুসি, ছোলা, সবুজ ঘাস ও গম খাওয়ানো হচ্ছে। সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক উপায়ে পশু মোটা তাজা করা হচ্ছে, কোনো হরমোন বা স্টেরয়েড ব্যবহার করা হচ্ছে না। 

অন্যদিকে, ক্রেতারা বলছেন, ‘গরুর বাজারে এখনই গত বছরের তুলনায় প্রতি পশুতে ১৫-২০ হাজার টাকা বেশি দাম গুনতে হচ্ছে।’ 

অনেকেই ইতিমধ্যে গরু কিনলেও বেশির ভাগ ক্রেতা ঈদের ক'দিন আগেই বাজারে যাবেন বলে জানিয়েছেন। জেলার মজুত অনুযায়ী পশুর কোনো ঘাটতি হওয়ার আশঙ্কা নেই বলেও মনে করছেন স্থানীয়রা। তবে সীমান্ত দিয়ে ভারতীয় গরু ঢুকলে দেশীয় খামারিরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন বলে সতর্ক করেছেন তারা। এ বিষয়ে সরকারি হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। 

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো: আব্দুল মান্নান মিয়া জানান, খামারিদের নিয়মিত পরামর্শ ও চিকিৎসা সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। জেলার চাহিদার তুলনায় পশু বেশি থাকায় ঈদে ঘাটতির কোনো আশঙ্কা নেই।  পাশাপাশি ভারত থেকে গরু আসা ঠেকাতে কড়া নজরদারিতে রয়েছে প্রাণিসম্পদ বিভাগ। কোরবানির সময় প্রতিটি হাটে পশু চিকিৎসক মোতায়েন থাকবে বলেও জানান তিনি। 

ঢাকা এক্সপ্রেস/এনএ 

আরও পড়ুন