নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৭:০৪, ৪ জুন ২০২৫
এই সংশোধিত আইনে প্রথমবারের মতো ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা’ এবং ‘মুক্তিযুদ্ধের সহযোগী’—এই দুই শ্রেণিকে আলাদা করে বর্ণনা দেওয়া হয়েছে, যা দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ এবং রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির সুষম বণ্টনে সহায়ক হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
কে হবেন ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা’
আইনের ১০ নম্বর ধারায় বলা হয়েছে, ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা’ হলেন সেইসব ব্যক্তি, যাঁরা ২৬ মার্চ থেকে ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ পর্যন্ত সরাসরি সশস্ত্র যুদ্ধে অংশ নিয়েছেন। এর আওতায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে—
দেশের ভেতরে ও সীমান্ত পেরিয়ে প্রশিক্ষণ নিয়ে যুদ্ধে অংশগ্রহণকারীদের, সম্মুখযুদ্ধ ও গেরিলা অভিযানে যুক্ত মুক্তিযোদ্ধাদের, রাজাকার, আল-বদর, আল-শামসসহ পাকিস্তান-সমর্থিত বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলা ব্যক্তিদের, মুজিবনগর সরকারের অধীনে সেনা, পুলিশ, ইপিআর, রেডিওকর্মী, চিকিৎসক ও নার্সদের, পাকিস্তানি বাহিনীর হাতে নির্যাতিত নারী—রাষ্ট্রীয় স্বীকৃত ‘বীরাঙ্গনা’দের, আহত ও শহীদদের।
‘মুক্তিযুদ্ধের সহযোগী’ কারা?
আইনের ১৫ নম্বর ধারায় ‘মুক্তিযুদ্ধের সহযোগী’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে স্বাধীনতার লড়াইয়ে পরোক্ষভাবে অবদান রাখা এক বিশাল গোষ্ঠীকে। তাঁদের মধ্যে আছেন—
প্রবাসী সহায়ক: বিদেশে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে জনমত গড়ে তোলা ও কূটনৈতিক সহায়তা প্রদানকারী প্রবাসী বাংলাদেশিরা;
প্রশাসনিক ও স্বাস্থ্য সহায়তাকারী: মুজিবনগর সরকারের অধীনে কর্মরত প্রশাসনিক কর্মকর্তা, চিকিৎসক, নার্স প্রমুখ;
গণপ্রতিনিধি: স্বাধীনতার পক্ষে অবস্থান নেওয়া এমএনএ, এমপিএ ও গণপরিষদের সদস্যরা;
সংহতিশীল শক্তি: বিদেশে কনসার্ট, প্রচার ও স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্রের মাধ্যমে ভূমিকা রাখা ব্যক্তি ও সংগঠন;
স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল: যারা আন্তর্জাতিক খেলায় অংশ নিয়ে অর্থ সংগ্রহ ও সচেতনতা বৃদ্ধিতে অবদান রাখেন।
এই সংশোধনীতে প্রথমবারের মতো মুক্তিযুদ্ধের ‘সহযোগী’দের আইনি স্বীকৃতি প্রদান রাষ্ট্রীয় ইতিহাসকে আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক ও ন্যায্য ভিত্তির ওপর দাঁড় করাল। এত দিন এই গোষ্ঠী উপেক্ষিত থাকলেও এখন তাঁরা রাষ্ট্রীয় মর্যাদা ও সুবিধার আওতায় আসতে পারবেন।
একই সঙ্গে ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা’ শব্দটি আগের তুলনায় আরও স্পষ্টভাবে সংজ্ঞায়িত হওয়ায় তালিকা যাচাই-বাছাই ও অপব্যবহার রোধে এটি কার্যকর ভূমিকা রাখবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ঢাকা এক্সপ্রেস/ এমআরএইচ