শিরোনাম
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৫:২১, ১১ মে ২০২৫ | আপডেট: ১৫:২৪, ১১ মে ২০২৫
একইসঙ্গে আরপিওর ৯০সি (১) (৩) ধারা অনুযায়ী সরকার কর্তৃক নিষিদ্ধ ঘোষিত হলে দলটিকে পুনরায় আর নিবন্ধন দেবে না নির্বাচন কমিশন (ইসি)। জাতীয় নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার যোগ্যতা অর্জনের জন্য প্রত্যেক রাজনৈতিক দলের জন্য ইসির নিবন্ধন থাকা বাধ্যতামূলক।
আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে ক্রমবর্ধমান বিক্ষোভের পরিপ্রেক্ষিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গতকাল শনিবার (১০ মে) রাতে জরুরি উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে দলটিকে নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়। এ সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, কাল সোমবার আনুষ্ঠানিকভাবে নিষেধাজ্ঞা-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে।
বৈঠক শেষে রাত ১১টার দিকে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল সাংবাদিকদের বলেন, ‘আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও তার নেতাদের বিচারকার্য সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত দেশের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা, জুলাই আন্দোলনের নেতা-কর্মীদের নিরাপত্তা এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বাদী ও সাক্ষীদের সুরক্ষার জন্য সন্ত্রাসবিরোধী আইনের অধীনে সাইবার স্পেসসহ আওয়ামী লীগের যাবতীয় কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’
এ বিষয়ে আজ সকালে (১১ মে) প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দিন বলেন, আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বাতিলের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে ইসি এখন সরকারি গেজেট প্রকাশের অপেক্ষায় রয়েছে।
তিনি বলেন, ‘কাল গেজেট প্রকাশ হলে আমরা নির্বাচন কমিশন বিষয়টি নিয়ে আলোচনায় বসব। কমিশনের আলোচনার পরই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। কারণ আমাদের বর্তমান বাংলাদেশের স্পিরিট বুঝেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে।’
গত রাতে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে সভায় আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইনে একটি সংশোধনীও অনুমোদন করা হয়েছে। এ সংশোধনী অনুযায়ী, এখন থেকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল যেকোনো রাজনৈতিক দল, তার অঙ্গসংগঠন বা সহযোগী গোষ্ঠীকেও শাস্তির আওতায় আনতে পারবে।
উল্লেখ্য, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতৃত্বে গত বৃহস্পতিবার রাত থেকে রাজধানী ঢাকায় বিক্ষোভ শুরু হয়। আন্দোলন চলতে থাকে সরকারের সিদ্ধান্ত ঘোষণার আগপর্যন্ত।
গত বছরের ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর থেকেই চরম বিশৃঙ্খল অবস্থায় পড়ে দেশের সর্ববৃহৎ রাজনৈতিক দল হিসেবে পরিচিত আওয়ামী লীগ।
জুলাই অভ্যুত্থানের সূত্রপাত ঘটে সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে শুরু হওয়া আন্দোলনের মাধ্যমে। আওয়ামী সরকার নির্বিচারে বিক্ষোভকারীদের হত্যা শুরু করলে ওই আন্দোলনে হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করার একদফা দাবিতে পরিণত হয়।
হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করার দাবি আরও জোরালো হয়। এর মধ্যে অন্তর্বর্তী সরকারের সামনে দিয়েই সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ দেশ ছাড়ার এই দাবি আরও তীব্র হয়।
পরে এনসিপি ও অন্যান্য সমমনা দলগুলোর নেতাকর্মীরা রাস্তায় নেমে প্রথমে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে এবং পরে শাহবাগে জড়ো হয়ে আওয়ামী লীগকে অবিলম্বে নিষিদ্ধ করার দাবি জানায়।
শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের জেরে অন্তর্বর্তী সরকার গতকাল রাতে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়।