শিরোনাম
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:৫২, ১৭ মে ২০২৫ | আপডেট: ১৪:৩২, ১৭ মে ২০২৫
ছবি: সংগৃহীত
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, নির্বাচনের প্রস্তুতি হিসেবে কূটনৈতিক কৌশল ও প্রচারণা পরিকল্পনা ইতোমধ্যে চূড়ান্ত হয়েছে। নির্বাচনটি অনুষ্ঠিত হবে ২০২৬ সালের জুনে। নির্বাচিত হলে তৌহিদ হোসেন ২০২৬ সালের সেপ্টেম্বরে শুরু হয়ে ২০২৭ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৮১তম সাধারণ অধিবেশনের সভাপতির দায়িত্ব পালন করবেন।
দ্বিতীয়বারের মতো বাংলাদেশি প্রার্থী
এর আগে ১৯৮৬ সালে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৪১তম অধিবেশনে সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন বাংলাদেশের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও জাতীয় সংসদের স্পিকার হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী। এবার তৌহিদ হোসেন নির্বাচিত হলে তিনি হবেন দ্বিতীয় বাংলাদেশি, যিনি এই পদে আসীন হবেন।
প্রার্থিতা নিয়ে প্রচারণা শুরু
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, আমরা ইতোমধ্যে প্রচারণা শুরু করেছি এবং এটি পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন স্তরে পরিচালিত হবে। তিনি আরো বলেন, জাতিসংঘে বাংলাদেশের সক্রিয় অংশগ্রহণ, শান্তিরক্ষা মিশনে অবদান এবং প্রার্থীর গ্রহণযোগ্যতা—এই সবকিছু মিলিয়ে আমরা আত্মবিশ্বাসী যে বিজয়ের সম্ভাবনা উজ্জ্বল।
প্রার্থিতার পেছনের ইতিহাস
এই নির্বাচন অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল ২০২০ সালে, যখন তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন জাতিসংঘে বাংলাদেশের আগ্রহ প্রকাশ করেন এবং এশিয়া-প্যাসিফিক গ্রুপ থেকে প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দেন। জাতিসংঘের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন আঞ্চলিক গ্রুপভিত্তিক এবং পর্যায়ক্রমে প্রতিটি অঞ্চল থেকে প্রতিনিধি নির্বাচিত হয়। বর্তমানে পদটি ক্যারিবিয়ান অঞ্চলের একজন প্রতিনিধির দখলে।
তৌহিদ হোসেনের পরিচয়
তৌহিদ হোসেন ১৯৮১ সালের বিসিএস ব্যাচের পররাষ্ট্র ক্যাডারের কর্মকর্তা। ১৯৮২ সালে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যোগদানের পর তিনি প্রশাসন, প্রটোকল এবং ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন। বিদেশে ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকায় রাষ্ট্রদূত হিসেবে কাজ করেছেন। রাজশাহী ক্যাডেট কলেজের প্রাক্তন শিক্ষার্থী তৌহিদ হোসেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইতিহাস বিভাগে পড়াশোনা করেছেন।
তিনজন প্রার্থী, তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা
বাংলাদেশ ছাড়াও জাতিসংঘে ফিলিস্তিনের স্থায়ী প্রতিনিধি এবং সাইপ্রাসের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পার্মানেন্ট সেক্রেটারিও এই পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। যদিও সাইপ্রাস ইউরোপে অবস্থিত, তবে জাতিসংঘে এটি এশিয়া-প্যাসিফিক গ্রুপের অন্তর্ভুক্ত।
সাধারণত কনসেনসাসের মাধ্যমে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হলেও এবার তিন প্রার্থী থাকায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা বেশি তীব্র হতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
একটি বড় কূটনৈতিক সুযোগ
বর্তমানে এই পদটি পূর্ণকালীন দায়িত্বে পরিণত হয়েছে। একজন সাবেক কূটনীতিকের ভাষায়, আন্তর্জাতিক রাজনীতির বর্তমান প্রেক্ষাপটে এই দায়িত্ব অনেক বেশি জটিল ও গুরুত্বপূর্ণ। নির্বাচিত হলে বাংলাদেশের অবস্থান আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আরো জোরালো হবে। এটি হবে দেশের জন্য একটি বড় কূটনৈতিক অর্জন।
ঢাকা এক্সপ্রেস/আরইউ