নির্বাচনের তারিখ কিন্তু আমরাই ঘোষণা দিয়ে দেবো: দুদু

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টাকে দ্রুত নির্বাচন ঘোষণার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু। তিনি বলেন, “আমাদের নেতা বলেছেন, ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন হতে হবে। আপনি যদি তারিখ দিতে না পারেন, তাহলে আরেকটু অপেক্ষা করুন—আমরাই তারিখ দিয়ে দেব।”

বৃহস্পতিবার (২৯ মে) খুলনা প্রেসক্লাবে মহানগর বিএনপি আয়োজিত ‘গণতন্ত্র ও বাক্‌স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠায় জিয়াউর রহমান’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা।

দুদু বলেন, “আপনি (প্রধান উপদেষ্টা) নববধূর মতো আচরণ করছেন। পাত্রী আমরা দেখতে গেছি, পছন্দ হয়েছে। এখন একটা দিন না বললে তো কাউকে দাওয়াত দিতে পারব না। দিন বলবেন না, দাওয়াত দিয়ে কী হবে? তারেক রহমান যখন চূড়ান্ত কথা বলবেন, তখন সারা দেশ স্থবির হয়ে যাবে।”

তিনি আরও বলেন, “একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য জনগণের মতো আমাদেরও একটি নির্দিষ্ট দিনের প্রয়োজন। এই দৃষ্টিকোণ থেকে নির্বাচন নিয়ে নাটক না করে সোজাসাপ্টা তারিখ ঘোষণা করতে হবে।”

বিএনপির চলমান আন্দোলন নিয়ে সমালোচনার জবাবে দুদু বলেন, “যদি বিএনপি গত ১৭ বছর আন্দোলনে না থাকত, তবে মাত্র এক মাসের আন্দোলনেই শেখ হাসিনার পতন হতো না। ’২৪ সালের আন্দোলনে তারেক রহমান হাজার হাজার নেতাকর্মীকে মাঠে পাঠিয়েছেন। যারা আজকের আন্দোলনকে ছোট করে দেখছেন, তারা ইতিহাস পড়েননি।” তিনি বলেন, “ভবিষ্যতে বিএনপি রাষ্ট্রক্ষমতায় এলে চলমান আন্দোলনে নিহত-আহতদের পরিবারের দায়িত্ব দল নেবে।”

বর্তমান সরকারের ব্যর্থতা তুলে ধরে শামসুজ্জামান দুদু বলেন, “ড. ইউনূস সংস্কারের কথা বলছেন, কিন্তু আগে তো তাঁর নিজের সংস্কার হওয়া দরকার। হাইকোর্টের আদেশ সত্ত্বেও ইশরাক হোসেনকে শপথ নিতে দেওয়া হয়নি। তিনি নাটক করেছেন, বিনিয়োগ সম্মেলনের নামে পাঁচ কোটি টাকা খরচ করেছেন—ঠিক শেখ হাসিনার পথ অনুসরণ করে।”

দুদু আরও অভিযোগ করেন, “তারেক রহমান বলেছেন ‘সবার আগে বাংলাদেশ’, আর ড. ইউনূসের কাছে দেখা যায়, ‘সবার আগে গ্রামীণ ব্যাংক’, ‘সবার আগে টাকা’, ‘সবার আগে বিদেশে লোক পাঠানো’। তিনি রাষ্ট্রের প্রতিনিধি হয়ে কোথাও যাননি, ব্যবসার স্বার্থেই গেছেন।”

জামায়াত ৩০০ আসনে প্রার্থী দেওয়ার প্রসঙ্গ টেনে বিএনপি নেতা বলেন, “ওদের স্ত্রীরা যদি ভোট দেন, তাও ধানের শীষেই যাবে। নারীসহ সকলের ভোটাধিকার রক্ষায় আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।”

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদল নেতা সাম্য হত্যাকাণ্ড, রাজশাহী ও চট্টগ্রামে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা নিয়ে তিনি বলেন, “এসব ঘটনার সঙ্গে গুপ্ত সংগঠন জড়িত। জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার করতে হবে।”

সভায় সভাপতিত্ব করেন মহানগর বিএনপির সভাপতি এস এম শফিকুল আলম মনা। বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপির তথ্যবিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, সহসাংগঠনিক সম্পাদক জয়ন্ত কুমার কুণ্ডু, সাবেক সংসদ সদস্য আলী আসগর লবি, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান মন্টু, যুগ্ম আহ্বায়ক মোমরেজুল ইসলাম প্রমুখ। সভা সঞ্চালনা করেন মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শফিকুল আলম তুহিন ও সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ সাদী।