শিরোনাম
ক্রীড়া প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:৫৮, ৩০ মে ২০২৫ | আপডেট: ১৩:২৩, ৩০ মে ২০২৫
ছবি: সংগৃহীত
ফারুক আহমেদকে বিসিবি সভাপতি পদে আর দেখতে চায় না সরকার— বুধবার (২৮ মে) রাতে তাকে এমন আভাস দিয়েছিলেন যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া। কিন্তু ফারুক তার অবস্থানে অনড় থেকে জানিয়ে দেন, তিনি পদত্যাগ করবেন না।
ফারুকের এই সিদ্ধান্তের পর বিসিবির আট পরিচালক ফারুকের প্রতি অনাস্থা প্রকাশ করে ক্রীড়া মন্ত্রণালয় বরাবর চিঠি দেন। পরিচালকদের সেই অনাস্থা প্রস্তাবে সাড়া দিয়ে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসি) ফারুকের মনোনয়ন বাতিল করল।
বৃহস্পতিবার (২৯ মে) রাত ১১টায় এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এনএসসি বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। ফলে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, সভাপতির পদেও তার থাকা আর সম্ভব নয়।
এদিকে ফারুক পদত্যাগের বিষয়ে অনড় অবস্থানের পরপরই বিসিবির আট পরিচালক তার বিরুদ্ধে অনাস্থা জানিয়ে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠান। সেই চিঠি ও বিপিএল নিয়ে গঠিত সত্য অনুসন্ধান কমিটির প্রতিবেদনকে বিবেচনায় নিয়েই এনএসসি তার মনোনয়ন বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আট জন পরিচালকের অনাস্থা প্রস্তাব এবং বিপিএল সংক্রান্ত অনুসন্ধান কমিটির প্রতিবেদনের আলোকে বিসিবির কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখতে ফারুক আহমেদের মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে।
বিসিবির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, সভাপতি হতে হলে বোর্ডের পরিচালক হওয়া আবশ্যক। ফারুক এনএসসির মনোনয়নে বোর্ডে পরিচালক হয়েছিলেন এবং পরে পরিচালকদের ভোটে সভাপতি নির্বাচিত হন। তার মনোনয়ন বাতিল হওয়ায় তিনি আর সভাপতি থাকার শর্ত পূরণ করছেন না।
তবে এ সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে ফারুক জানিয়েছেন, চিঠি আমি দেখেছি। তবে এখনো পদত্যাগ করিনি। বিষয়টি নিয়ে আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত নেব।
সরকারি হস্তক্ষেপে বোর্ড সভাপতির অপসারণ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সংস্থা (আইসিসি)-এর নীতিমালার পরিপন্থী। অতীতে এমন হস্তক্ষেপের কারণে জিম্বাবুয়ে ও শ্রীলঙ্কার মতো দেশ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিষেধাজ্ঞার শিকার হয়েছে। ফারুককে সরানোর প্রক্রিয়াটি যদি রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ হিসেবে চিহ্নিত হয়, তাহলে বাংলাদেশের ক্রিকেটও ঝুঁকিতে পড়তে পারে।
ফারুকের জায়গায় নতুন পরিচালকের মনোনয়নের প্রস্তুতি ইতোমধ্যে শুরু হয়ে গেছে। জানা গেছে, জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক ও দেশের প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরিয়ান আমিনুল ইসলাম বুলবুলকে বিসিবির অন্তর্বর্তী সভাপতি হিসেবে ভাবছে সরকার। এনএসসি তাকে কাউন্সিলর হিসেবে মনোনীত করেছে; যা সভাপতি হওয়ার জন্য প্রথম শর্ত।
আমিনুল বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেছেন, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় থেকে বিসিবিতে কাজ করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। আমি যেকোনো দায়িত্ব নিতে প্রস্তুত।
তবে তিনি বিসিবির আসন্ন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন না এবং দীর্ঘমেয়াদি দায়িত্বও নেবেন না বলে জানিয়েছেন।
আগামী অক্টোবরের মধ্যে বিসিবির নির্বাচন আয়োজনের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এর আগে অন্তর্বর্তী সময়ের জন্য সভাপতির দায়িত্বে কে থাকবেন, তা নিশ্চিত হওয়ার অপেক্ষায় দেশের ক্রিকেট প্রশাসন।
ঢাকা এক্সপ্রেস/আরইউ