ঢাকা, রোববার, ০১ জুন ২০২৫

১৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, ০৪ জ্বিলহজ্জ ১৪৪৬

গভীর নিম্নচাপটি স্থলভাগে, পাঁচ বিভাগে ভারী বৃষ্টির শঙ্কা

নিজস্ব প্রতিবেদক 

প্রকাশ: ০৯:৩২, ৩০ মে ২০২৫

গভীর নিম্নচাপটি স্থলভাগে, পাঁচ বিভাগে ভারী বৃষ্টির শঙ্কা

ছবি: সংগৃহীত

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়া গভীর নিম্নচাপটি এখন স্থলভাগে উঠে এসেছে। পরিণত হয়েছে স্থল গভীর নিম্নচাপে। বৃহস্পতিবার (২৯ মে) রাতেই এটি স্থলভাগে উঠে আসে। আর ধীরে ধীরে দুর্বল হতে থাকে। যদিও এর প্রভাব শুক্রবার (৩০ মে) সারা দিন ধরেই থাকবে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদেরা।

তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী,  এর প্রভাবে আজ দেশের পাঁচ বিভাগে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে। শনিবারও (৩১ মে) এর প্রভাবে বৃষ্টি হতে পারে বেশ কিছু এলাকায়।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের দেওয়া সর্বশেষ সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, গভীর নিম্নচাপটি বৃহস্পতিবার রাতে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের সাগরদ্বীপ ও বাংলাদেশের খেপুপাড়ার মধ্য দিয়ে পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশ উপকূল অতিক্রম করে সাতক্ষীরা এবং এর কাছাকাছি অঞ্চলে ছিল। পরবর্তীতে এটি স্থল নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। এটি ধীরে ধীরে আরো দুর্বল হয়ে উত্তর থেকে উত্তর-পূর্ব দিকে এগিয়ে যেতে পারে। এর প্রভাবে শুক্রবার ময়মনসিংহ ,খুলনা , বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে।

ভারী বৃষ্টি বলতে ৪৪ থেকে ৮৮ মিলিমিটার বৃষ্টিকে বোঝায় আর অতি ভারী বৃষ্টি হয় ৮৮ মিলিমিটারের ওপর।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ এ কে এম নাজমুল হক বলেন, গভীর নিম্নচাপটি এখনো স্থল গভীর নিম্নচাপ রূপে আছে। এটি ধীরে ধীরে উত্তর থেকে উত্তর-পূর্ব দিকে  এগোচ্ছে। এর প্রভাবে শুক্রবার দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বৃষ্টি হবে।

শুক্রবার সকাল থেকেই রাজধানীর আকাশ মেঘলা এবং বৃষ্টি হচ্ছে ঝিরঝির করে। রাজধানীতেও আজ সারা দিন এভাবে বৃষ্টি হতে পারে বলে আবহাওয়া অধিদপ্তর সূত্র জানিয়েছে।

এটিএম নাজমুল হক বলেন, আগামীকাল শনিবার রংপুর, রাজশাহী ও ঢাকা বিভাগের অনেক জেলায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে। গভীর নিম্নচাপের পরবর্তী সময়ে সক্রিয় মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে এই বৃষ্টি হতে পারে।

গত মঙ্গলবার বঙ্গোপসাগরে একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হয়। পরদিন বুধবার এটি সুস্পষ্ট লঘুচাপে  পরিণত হয়। বৃহস্পতিবার ভোরের দিকে প্রথমে নিম্নচাপ পরে এটি গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়। এর প্রভাবে রাজধানীসহ দেশের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে বৃষ্টি শুরু হয়। বৃহস্পতিবার সর্বোচ্চ বৃষ্টি হয় নোয়াখালীর মাইজদী কোর্টে ১৬৮ মিলিমিটার। রাজধানীতে ৮৬ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়।

নিম্নচাপের প্রভাবে ব্যাপক বৃষ্টির মধ্যে বৃহস্পতিবার দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ফেরি চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন শহরে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয় অতি বর্ষণের কারণে।

এদিকে জলাবদ্ধতা নিরসনে কন্ট্রোল রুম স্থাপন করেছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন। জলবদ্ধতা দেখা দিলে ১৬১০৬ অথবা কন্ট্রোল রুমে (০১৭৩৩৯৮২৪৮৬) তথ্য দিতে বলা হয়েছে। দ্রুত জলাবদ্ধতা নিরসনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ।

দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা এয়ার কমডোর মো. মাহাবুবুর রহমান তালুকদার বলেন, বৃষ্টি কমে গেলে অনেক জায়গার পানি স্বাভাবিকভাবেই সরে যাবে। তবে যেসব এলাকায় নিয়মিত জলাবদ্ধতা দেখা যায়, সেসব জায়গায় সিটি করপোরেশন কাজ করছে।

দেশের দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায় ভারী বৃষ্টি ও জোয়ারের পানিতে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। উঁচু জোয়ারে নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। ভোলা-পটুয়াখালীসহ কয়েকটি এলাকায় বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়। টানা বৃষ্টিতে অনেক এলাকায় দেখা দিয়েছে জলাবদ্ধতা। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন উপকূলের বাসিন্দারা।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক রেজওয়ানুর রহমান বলেন, নিম্নচাপের প্রভাবে বৃষ্টি ও জলোচ্ছ্বাসে ক্ষয়ক্ষতির তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে অনেক এলাকা পানির নিচে তলিয়ে গেছে। উপকূলে খাদ্য, চিকিৎসাসহ সব ব্যবস্থা রয়েছে।

ঢাকা এক্সপ্রেস/আরইউ

আরও পড়ুন