শিরোনাম
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১৩:০১, ৩০ মে ২০২৫ | আপডেট: ১৩:০৭, ৩০ মে ২০২৫
সুনামগঞ্জের একটি নদী, ছবি: সংগৃহীত
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে টানা বৃষ্টিপাতে দেশের বেশিরভাগ নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে করে দেশের ছয় জেলায় স্বল্পমেয়াদি বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। একই সঙ্গে উপকূলীয় এলাকায় জলোচ্ছ্বাস এবং ঢাকাসহ বিভিন্ন শহরে জলাবদ্ধতায় চরম ভোগান্তির সৃষ্টি হয়েছে।
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, দেশের ৬৭টি পর্যবেক্ষণাধীন নদ-নদীর মধ্যে ৫০টির পানি বেড়েছে। ১১৬টি পর্যবেক্ষণ পয়েন্টের মধ্যে ৮৯টিতে পানির উচ্চতা বেড়েছে। এর ফলে সিলেট, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, নেত্রকোনা এবং ফেনী জেলায় নিম্নাঞ্চলে স্বল্পমেয়াদি বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে।
এই কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী সরদার উদয় রায়হান বলেন, সারিগোয়াইন, যাদুকাটা, মনু, ধলাই, খোয়াই, সোমেশ্বরী, গোমতী, মুহুরী ও ফেনী নদীর পানি বৃদ্ধি পাবে। এসব নদীর আশপাশের নিচু এলাকায় বন্যা দেখা দিতে পারে।
তবে ব্রহ্মপুত্র ও যমুনার পানি ধীরে ধীরে কমছে এবং বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। রংপুর অঞ্চলের তিস্তা, ধরলা ও দুধকুমার নদীর পানিও বাড়লেও সেসব এলাকায় বড় ধরনের বন্যার আশঙ্কা নেই।
গভীর নিম্নচাপের কারণে উপকূলীয় এলাকায় ১ থেকে ৩ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস হয়েছে। এতে চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, ভোলা, পটুয়াখালী, বরগুনা, খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাটসহ অন্তত ১৪ জেলায় নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার চালিতাবুনিয়ায় একটি খালের ৩৫ মিটার বাঁধ ভেঙে কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ভোলার তজুমদ্দিন উপজেলায়ও বাঁধ ভেঙে ঘরবাড়িতে পানি ঢুকেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় প্রশাসন।
কক্সবাজারের মহেশখালীতে জোয়ারের পানিতে ডুবে একজনের মৃত্যু হয়েছে। নিহত ব্যক্তির নাম দানু মিয়া (৪০)। তিনি কুতুবজোম ইউনিয়নের ঘটিভাঙা এলাকার বাসিন্দা।
রাজধানী ঢাকায় বৃহস্পতিবার সকাল থেকে রাত পর্যন্ত টানা বৃষ্টিতে বিভিন্ন এলাকায় হাঁটু থেকে কোমরপানি জমে যায়। বিজয় সরণি, বনানী, মিরপুর, কালশী, কাকলী মোড়, নৌ সদর দপ্তর, মগবাজার, মালিবাগসহ বিভিন্ন সড়কে পানি জমে যান চলাচলে মারাত্মক বিঘ্ন ঘটে।
বৈরী আবহাওয়ার কারণে বৃহস্পতিবার সকাল নয়টা থেকে রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ও মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া এবং মানিকগঞ্জের আরিচা ও পাবনার কাজীরহাট নৌপথে লঞ্চ চলাচল বন্ধ রাখা হয়। বরিশালের অভ্যন্তরীণ নৌপথে লঞ্চ চলাচল বন্ধ ঘোষণা করার পর ঢাকা-বরিশাল নৌপথ এবং চট্টগ্রামের দ্বীপ উপজেলা সন্দ্বীপের সঙ্গে সব ধরনের নৌযান চলাচল অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয় বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় গভীর নিম্নচাপটি বাংলাদেশের উপকূল অতিক্রম করে স্থলভাগে প্রবেশ করে। রাত ৮টার দিকে এটি সাতক্ষীরা অঞ্চলে অবস্থান করছিল। এটি এখন ক্রমশ দুর্বল হচ্ছে এবং বৃষ্টি ধীরে ধীরে কমে আসবে বলে পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে।
তবে আবহাওয়াবিদ মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক জানিয়েছেন, শুক্রবার সারা দেশে মাঝারি থেকে ভারী বর্ষণ অব্যাহত থাকতে পারে।
বৃহস্পতিবার দেশের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে নোয়াখালীর মাইজদীকোর্টে— ১৬৮ মিলিমিটার। রাজধানী ঢাকায় বৃষ্টির পরিমাণ ছিল ৮৬ মিলিমিটার।
ঢাকা এক্সপ্রেস/আরইউ