শিরোনাম
রংপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২০:০১, ৩০ জুলাই ২০২৫
ছবি: ঢাকা এক্সপ্রেস
এলাকাবাসি সূত্রে জানা গেছে, ঐতিহ্যবাহী পলিপাড়া মাসিমপুর জামে মসজিদের ৪২ বিঘা সম্পত্তি রয়েছে। এই সম্পত্তি দিয়ে মসজিদের উন্নয়নমুলক কর্মকান্ড পরিচালনা হওয়ার কথা। কিন্তু সম্পত্তি দাতা হাজী তকের মোহাম্মদের চতুর্থ প্রজন্ম জোয়ারদার হোসেন ওরফে লিটন জমিগুলো বেদখলে নিয়েছেন। সেগুলো তিনি স্থানীয়ভাবে বন্ধক ও ব্যক্তিগতভাবে লীজ প্রদান করে অর্থ আত্মসাৎ করছেন। ওই অর্থ দিয়ে মসজিদের কোন উন্নয়নমুলক কর্মকান্ডে ব্যবহার করছেন না। এ কারণে ফুঁসে উঠেছেন স্থানীয় মুসল্লিরা।
স্থানীয় বাসিন্দা মোহাম্মদ ছালেক মিয়া বলেন, মসজিদের জমিগুলো দাতার লোকজনেরা ভোগদখল করে খাচ্ছে। জমি বন্ধক রাখছে, লীজ দিচ্ছে। এমনকি মসজিদের পাশে রাস্তার ধারের জমি বিক্রির পর দোকানঘর নির্মাণ করতে চেয়েছিল, মুসল্লিরা বাধা দিয়েছে। ওই জমিগুলো মসজিদ উন্নয়নে কোন কাজে লাগতেছে না। তিনি আরো বলেন, এই জমিগুলো সরকারিভাবে উদ্ধার করে তদারকি দরকার।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন মুসল্লি বলেন, মসজিদের জমিগুলো জোয়ারদার হোসেন লিটন আত্মসাত করেছেন। নিজের দখলে রেখে চাষাবাদ করে মসজিদে কোন আয় দেখাচ্ছেন না। এলাকাবাসি প্রতিবাদ করেও কোন সুফল আসেনি। তারা আরো বলেন, দখলকারী জোয়ারদার হোসেন লিটন একজন ভূমিদস্যু ও এলাকার প্রভাবশালী। এ কারণে এলাকার কেউ প্রতিবাদ করার সাহস পাচ্ছেনা। একই কথা বলেন আরো কয়েকজন মুসল্লি।
এ ছাড়াও প্রায় ১৫ বছর ধরে মসজিদের মোতয়াল্লি আছেন আয়মন রেছা বেগম। তার ভাতিজা জোয়ারদার হোসেন লিটন বর্তমান মোতয়াল্লি বলে দাবি করছেন।
আয়মন নেছা বেগম বলেন, আমি দির্ঘদিন ধরে মসজিদের মোতয়াল্লি। কৌশলে জোয়ারদার হোসেন লিটন মোতয়াল্লি হওয়ার চেষ্টা করছেন। জমিগুলো বেদখল করে খাচ্ছে। সে ভূমিদস্যু ও টাউট টাইপের মানুষ।
সরেজমিনে পলিপাড়া মাসিমপুর মসজিদ প্রাঙ্গণে গিয়ে দেখা গেছে, নতুন করে বর্ধিত অংশের কাজ চলছে। এ সময় কয়েকজন মুসল্লি আক্ষেপ করে বলেন, ব্যক্তিগত অর্থায়নে মসজিদ নির্মাণ করে দিচ্ছেন আবু নুর মোহাম্মদ আহসান হামিদ নামে একজন দানশীল ব্যক্তি। তারপরও ওই জোয়ারদার হোসেন লিটনের লোকজনেরা তাকে কাজে বাধা দিচ্ছেন। এ কারণে কাজ থেমে রয়েছে।
অভিযুক্ত জোয়ারদার হোসেন লিটন বলেন, 'আমি মোতয়াল্লি হওয়ার পর জমিগুলো দেখভাল করছি।' বছরে কত টাকা আয় মসজিদের দেওয়া হয়? আয়গুলো দিয়ে মসজিদের কি কি উন্নয়ন করা হয়েছে?- প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, 'আপনাকে কেন আয়-ব্যয়ের হিসাব দেব? আমার পূর্বপুরুষ জমি দিয়েছে, আমরা দেখভাল করছি।
মিঠাপুকুর উপজেলা নির্বাহি অফিসার জিল্লুর রহমান বলেন, তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
রংপুর ওয়াকফ এস্টেট কার্যালয়ের হিসাব নিরিক্ষক আমিনুল ইসলাম বলেন, হাজী তকের মোহাম্মদ ওয়াকফ এস্টেটের মোতয়াল্লী আয়মন নেছা। এ ঘটনায় উচ্চ আদালতে একটি মামলা চলমান রয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
ঢাকা এক্সপ্রেস/ইউকে