ঢাকা, শনিবার, ৩১ মে ২০২৫

১৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, ০২ জ্বিলহজ্জ ১৪৪৬

কুমিল্লায় বীর মুক্তিযোদ্ধার বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ

কুমিল্লা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১২:৩২, ২৯ মে ২০২৫

কুমিল্লায় বীর মুক্তিযোদ্ধার বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ

ছবি: সংগৃহীত

কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে এক বীর মুক্তিযোদ্ধার বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে দুর্বৃত্তরা। এতে একতলা ভবনের চারটি কক্ষের আসবাবপত্রসহ মূল্যবান মালামাল পুড়ে গেছে। ঘটনার সময় বাড়িতে অবস্থান করা পরিবারটি অল্পের জন্য প্রাণে রক্ষা পেয়েছে।

মঙ্গলবার (২৭ মে) দিবাগত গভীর রাতে চৌদ্দগ্রাম উপজেলার গুণবতী ইউনিয়নের দক্ষিণ শ্রীপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ির মালিক সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আলী হোসেন। তিনি বর্তমানে পরিবারসহ কুমিল্লা শহরে বসবাস করছেন। বাড়ির দেখভাল করতেন তত্ত্বাবধায়ক জামশেদ আলম, যিনি স্ত্রী ও তিন সন্তান নিয়ে সেখানে থাকেন।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রাত দেড়টার দিকে মুখোশধারী আট থেকে ১০ জনের একটি সশস্ত্র দল বাড়িতে হামলা চালায়। তারা প্রথমে দরজা-জানালা ভাঙচুর করে এবং কেয়ারটেকার জামশেদ আলমকে জিম্মি করে। পরে ঘরের মধ্যে ঢুকে ভাঙচুর করে এবং কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণের পর ঘরে আগুন ধরিয়ে দেয়। জামশেদ ও তার পরিবার প্রাণ বাঁচাতে চিৎকার শুরু করলে আশপাশের লোকজন এসে প্রায় এক ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন।

জামশেদ জানান, হামলাটি এত দ্রুত ও ভীতিকর ছিল যে কিছুই বুঝে ওঠার আগেই আগুন ধরে যায়। আমি শুধু ভাবছিলাম, সন্তানদের বাঁচাব কীভাবে। শেষ পর্যন্ত এলাকাবাসীর সহায়তায় সবাইকে নিরাপদে বের করে আনতে পেরেছি।

আলী হোসেনের স্ত্রী রাশেদা আখতার, যিনি কুমিল্লা জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি এবং উপজেলা পরিষদের সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান, এ ঘটনায় হতবাক। তিনি বলেন, আমার স্বামী ২০১৫ সাল থেকে রাজনীতির বাইরে। তিনি বর্তমানে অসুস্থ এবং চলাফেরা করতে পারেন না। কে বা কারা, কী উদ্দেশ্যে এই বর্বর হামলা চালালো— তা বুঝে উঠতে পারছি না।

রাশেদা জানান, তারা রাতেই বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে অবহিত করেছেন। রাত ৩টা পর্যন্ত দুর্বৃত্তরা বাড়িতে তাণ্ডব চালায়। ঘরের ভেতরের সমস্ত আসবাবপত্র, মূল্যবান কাগজপত্র ও মালামাল পুড়ে যায়।

চৌদ্দগ্রাম উপজেলার সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার প্রমদ রঞ্জন বলেন, একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার বাড়িতে এমন বর্বর হামলা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। এটি স্বাধীনতার চেতনার ওপর সরাসরি আঘাত। দোষীদের দ্রুত খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনা উচিত।

চৌদ্দগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ হিলাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, হামলার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। তবে এখন পর্যন্ত কেউ লিখিত অভিযোগ করেননি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ঢাকা এক্সপ্রেস/আরইউ

আরও পড়ুন