ঢাকা, রোববার, ০১ জুন ২০২৫

১৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, ০৪ জ্বিলহজ্জ ১৪৪৬

বাইডেনের ক্যানসার নিয়ে ট্রাম্পের রাজনীতি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ: ২২:৩৮, ২০ মে ২০২৫

বাইডেনের ক্যানসার নিয়ে ট্রাম্পের রাজনীতি

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রোস্টেট ক্যানসার ধরা পড়ার খবর প্রকাশের পর হোয়াইট হাউসে তাঁর মেয়াদকালে শারীরিক অবস্থা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে। রবিবার (স্থানীয় সময়) বাইডেনের অফিস থেকে জানানো হয়, ৮২ বছর বয়সী এই ডেমোক্র্যাট নেতা শুক্রবার মূত্রজনিত উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসকের কাছে গেলে তাঁর ক্যানসার শনাক্ত হয়।

চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, বাইডেনের দেহে ক্যানসারটি ইতোমধ্যে হাড়ে ছড়িয়ে পড়েছে, এবং এটি আগ্রাসী রূপের। অনেকে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন, এতদিনে বিষয়টি কেন ধরা পড়েনি। তবে কিছু চিকিৎসক বলছেন, ক্যানসার অনেক সময় দ্রুত ছড়ায় এবং উপসর্গ ছাড়াই বেড়ে ওঠে—বিশেষ করে ৭০-এর ওপর বয়সী পুরুষদের নিয়মিত স্ক্রিনিং না করার প্রবণতা রয়েছে।

ট্রাম্প বললেন, বিষয়টি ‘লুকানো হয়েছিল’

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এ নিয়ে বলেছেন, ‘আমি বিস্মিত হয়েছি যে, এতদিন জনগণকে জানানো হয়নি। এটি খুব দুঃখজনক। মনে হচ্ছে বিষয়টি অনেক আগেই ধরা পড়া উচিত ছিল।’ তিনি দাবি করেন, এই স্তরে পৌঁছাতে ক্যানসারের ‘বছরের পর বছর’ সময় লাগে এবং এটি আড়াল করা হয়ে থাকতে পারে।

বাইডেন এই বিষয়ে এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে ট্রাম্পের মন্তব্যের জবাব দেননি। তবে জানা গেছে, ২০২৪ সালের নির্বাচনের আগে বাইডেনের শারীরিক অবস্থার কিছু বিষয় ঘনিষ্ঠ সহযোগীরা আড়াল করতে চেয়েছিলেন।

মেমোরি লস, হুইলচেয়ারের ভাবনা—বইয়ে বিস্ফোরক দাবি

সিএনএনের জেক ট্যাপার ও অ্যালেক্স থম্পসনের লেখা বই ‘অরিজিনাল সিন’-এ দাবি করা হয়েছে, প্রেসিডেন্ট থাকার শেষ বছরে বাইডেন নিজের গুরুত্বপূর্ণ সহকারীদের নাম মনে রাখতে পারছিলেন না। এমনকি তাঁর হাঁটার গতি এতটাই কমে গিয়েছিল যে, তাঁকে হুইলচেয়ারে বসানোর কথাও ভেবেছিলেন উপদেষ্টারা, কিন্তু নির্বাচনের আগে তা বাস্তবায়ন করা হয়নি।

এই বইয়ের তথ্য সামনে আসার পর ডেমোক্র্যাট নেতারা কঠিন প্রশ্নের মুখে পড়েছেন। সিনেটর ক্রিস মারফি স্বীকার করেন, ‘ভোটারদের উদ্বেগকে আগে গুরুত্ব দেওয়া উচিত ছিল। এটি আমাদের ভুল।’

‘দীর্ঘদিন ধরেই আক্রান্ত ছিলেন বাইডেন’—চিকিৎসকদের ধারণা

বাইডেন প্রশাসনের সাবেক কোভিড উপদেষ্টা ও অনকোলজিস্ট ড. ইজিকিয়েল ইমানুয়েল বলেন, ‘এই ক্যানসার বাইডেনের প্রেসিডেন্ট থাকা অবস্থায়ই ছিল, সম্ভবত ২০২১ সাল থেকেই।’ তবে ড. রবার্ট ফিগলিন, সিডারস-সিনাই ক্যানসার সেন্টারের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক বলেন, ‘এটি অস্বাভাবিক কিছু নয়। এটি ধরে নেওয়া উচিত নয় যে কোথাও কিছু মিস হয়েছে।’

অতীতে ক্যানসার হয়নি বলেই দাবি করা হয়েছিল

২০১৯ সালে বাইডেনের নির্বাচনী প্রচার চালানোর সময় তাঁর চিকিৎসা রিপোর্টে বলা হয়েছিল, প্রোস্টেটের স্বাভাবিক অকার্যকারিতা ও বড় হয়ে যাওয়া নিয়ে চিকিৎসা হয়েছে, তবে ‘প্রোস্টেট ক্যানসার হয়নি’ বলেই জানানো হয়। এই তথ্য ঘিরেই প্রশ্ন উঠেছে, প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন তিনি কী নিয়মিত রক্ত পরীক্ষা করিয়েছিলেন? তাহলে এতদিনে বিষয়টি ধরা পড়েনি কেন?

জনগণের উদ্বেগ যৌক্তিক—উপ-রাষ্ট্রপতি ভ্যান্স

উপ-রাষ্ট্রপতি জেডি ভ্যান্স বাইডেনের দ্রুত আরোগ্য কামনা করলেও বলেন, ‘স্বাস্থ্য ভালো না হলে এমন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব নেওয়া উচিত হয়নি।’

সিডিসি অনুযায়ী, প্রতি ১০০ জন আমেরিকান পুরুষের মধ্যে ১৩ জনের এটি হয়, এবং ২-৩ জন এতে মারা যান।

ঢাকা এক্সপ্রেস/ এমআরএইচ

আরও পড়ুন