শিরোনাম
নোয়াখালী প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৫:০১, ২৫ এপ্রিল ২০২৫
বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) বিকেলে নোয়াখালী প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগ করেন আবুল বাশার পাটোয়ারী।
সংবাদ সম্মেলনে আবুল বাশার পাটোয়ারী বলেন, দীর্ঘদিন ধরে তিনি আমিশাড়া বাজারে আসবাবপত্রের (ফার্নিচার) ও হার্ডওয়ার সামগ্রীর ব্যবসা করে আসছেন। গত রমজান মাসের চার-পাঁচ দিন আগে দোকানের সার্টার খুলে দেখেন ভেতরে একটি চিঠি। তাতে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেছেন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি। চিঠি পাওয়ার পর তিনি বাজারের অন্য ব্যবসায়ীদের বিষয়টি অবহিত করেন।
গত ১৭ এপ্রিল সকালে তিনি দোকানে গিয়ে দেখেন তিনটি শার্টারে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের দেওয়া তালা। এ বিষয়ে সোনাইমুড়ী থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন তিনি। পুলিশ তদন্ত করতে গিয়ে সিসিটিভির ফুটেজ পর্যবেক্ষণ করে দেখেন আমিশাপাড়া ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের মো. কামাল তার সহযোগীদের নিয়ে দোকানে তালা দেন।
আবুল বাশার পাটোয়ারী বলেন, ‘পরে পুলিশ কামালকে থানায় ডেকে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি তালা দেওয়ার কথা স্বীকার করেন। কিন্তু পুলিশ তার বিরুদ্ধে কোনো আইনগত ব্যবস্থা নেয়নি। এরপর থেকে কামাল হোসেন নানা হুমকি-ধমকি দিয়ে বেড়াচ্ছেন।’
বর্তমানে তিনি পরিবার-পরিজন নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন জানিয়ে আবুল বাশার পাটোয়ারী এ বিষয়ে জেলা পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
আবুল বাশার পাটোয়ারী বলেন,‘এই সন্ত্রাসী কামাল এ সমাজে বিভিন্ন অপকর্মের সাথে জড়িত। এই সন্ত্রাসী কামাল তার মামির সাথে অপকর্মের কারণে তাকে সবাই মামি কামাল নামে চিনে। মাদক কারবারি কামাল টেকনাফ থেকে মাদক নিয়ে আসার সময় চট্টগ্রামে তার গাড়িসহ পুলিশের কাছে ধরা পড়ে। কামালের সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজি কার্য পরিচালনা করার জন্য নিজস্ব বাহিনী রয়েছে।’
তিনি অভিযোগ করেন, এই সন্ত্রাসী কামাল আজ থেকে ১৫ বছর আগে তার বাহিনী দিয়ে আবুল বাশার পাটোয়ারির ১৩/১৪ বছর বয়সি মেয়েকে জোরপূর্বক অস্ত্রের মুখে অপহরণ করে মুক্তিপন দাবি করে। ওই সময় আবুল বাশার পাটোয়ারির বড় ভাই ইউসুফ পাটোয়ারী এ বিষয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের করলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অপহরণকারী মামী কামালকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়। এরপর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অপহরণ কারী মামী কামালকে আদালতে সোপর্দ করে। যখন তার বিচারকার্য চলছিল, ওই সময় অপহরণকারী কামালের বাহিনী ও তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের প্রভাব বিস্তার করে মামলা তুলে নেওয়ার হুমকি দিতে থাকে। যার পরিপ্রেক্ষিতে মামলা তুলে নিতে বাধ্য হয়েছেন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে চাঁদা দাবির কথা অস্বীকার করে মো. কামাল এ বিষয়ে কোনো কথা বলতে রাজি হননি। তবে তালা দেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। কামাল দাবি করেন, তাকে সামাজিকভাবে হেয় করার উদ্দেশ্যে তার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে।
জানা যায়, আবুল বাশার পাটোয়ারীদের সঙ্গে কামালের পারিবারিক বিষয় নিয়ে পূর্বের বিরোধ রয়েছে। তাদের দায়ের করা একটি মামলায় ২০০৯ সালে তিনি কারাগারে ছিলেন। ওই বিরোধের জেরে ক্ষোভ থেকে তিনি দোকানে তালা দিয়েছেন বলে দাবি করেন কামাল।
সোনাইমুড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোরশেদ আলম বলেন, প্রাথমিক তদন্তে দোকানে তালা দেওয়ার ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে। তবে অভিযুক্ত ব্যক্তির সঙ্গে আবুল বাশারের পূর্ববিরোধ ও মামলা রয়েছে। আবুল বাশার থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন। কিন্তু মামলার অভিযোগের বর্ণনায় একটি অংশ নিয়ে তার আপত্তি থাকায় সেটি আর মামলা হিসেবে রুজু করা হয়নি। পরে ওই ব্যক্তিকে আদালতে মামলা করার পরামর্শ দেওয়া হয়।