শিরোনাম
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ১৯:৪৬, ২৫ এপ্রিল ২০২৫
ছবি: সংগৃহীত
পোপ ফ্রান্সিস নিজের উইলে লিখে গেছেন, তার সমাধি হবে মাটির নিচে, সাধারণ রীতিতে, কোনো অলঙ্করণ ছাড়াই। সমাধিস্তম্ভে লেখা থাকবে শুধুই ‘ফ্রান্সিসকাস’। তার দাফনের সব খরচ একজন দানশীল ব্যক্তি বহন করবে বলে জানিয়েছে ভ্যাটিকান।
শনিবার (২৬ এপ্রিল) সেন্ট পিটার্স স্কয়ারে অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার পর তার মরদেহ নিয়ে যাওয়া হবে নির্ধারিত সমাধিস্থলে।
যদিও সমাধিটি হবে সাধারণ, তবে সান্তা মারিয়া মাজ্জোরে ব্যাসিলিকাটি (বিশেষ মর্যাদাসম্পন্ন গির্জা) নিজেই এক রাজকীয় স্থাপনা। এটি প্রাচীন রোমের সাতটি পাহাড়ের একটি, এস্কুইলাইনের চূড়ায় অবস্থিত। রোমের চারটি পোপীয় ব্যাসিলিকার অন্যতম এটি। এর ২৪৬ ফুট উঁচু বেল টাওয়ার শহরের সর্বোচ্চ বিন্দু হিসেবে পরিচিত।
চতুর্থ শতকে গির্জাটির উৎপত্তির সঙ্গে জড়িয়ে আছে একটি অলৌকিক কাহিনি। ধারণা করা হয়, তৎকালীন পোপ লিবারিয়াস ও এক ধনকুবেরের স্বপ্নে মাদার মেরি এসেছিলেন। তিনি তাদের নির্দেশ দিয়েছিলেন একটি গির্জা নির্মাণ করতে, যার স্থান অলৌকিকভাবে ধরা দেবে। ৩৫৮ খ্রিস্টাব্দে গ্রীষ্মের প্রচণ্ড গরমে এস্কুইলাইনের চূড়ায় তুষারপাত ঘটে। সেই ঘটনা থেকেই গির্জাটি নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বর্তমানে প্রতি বছর ৫ আগস্ট এখানে 'মিরাকল অব দ্য স্নো' উৎসব পালিত হয়।
বর্তমান ব্যাসিলিকার নির্মাণ শুরু হয় ৪৩১ সালে, পোপ তৃতীয় সিক্সটাসের নির্দেশে। এর মোজাইকগুলোর ইতিহাস সেই সময়কার, আর ভেতরের কলামগুলো প্রাচীন রোমান স্থাপনা থেকে আনা। বাইরের কাঠামো নির্মিত হয় আঠারো শতকে।
সান্তা মারিয়া মাজ্জোরে গির্জাটি পোপ ফ্রান্সিসের কাছে ছিল বিশেষ প্রিয়। প্রায় প্রতি রবিবার তিনি এখানে যেতেন প্রার্থনায়। প্রতিটি বিদেশ সফরের আগে এবং পরে, এমনকি হাসপাতাল থেকে ফিরেও তিনি মাদার মেরির প্রতিকৃতির সামনে গিয়ে প্রার্থনা করতেন।
২০১৩ সালে পোপ হওয়ার পর নিজের প্রথম দিনটিও কাটিয়েছিলেন এই গির্জায়। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরেই তিনি প্রথমবারের মতো জানিয়ে দেন, এখানেই তিনি সমাহিত হতে চান।
তবে তিনিই প্রথম নন—এ পর্যন্ত আরও সাতজন পোপকে এই ব্যাসিলিকায় সমাহিত করা হয়েছে। তাদের মধ্যে সর্বশেষ ছিলেন নবম ক্লেমেন্ট, ১৬৬৯ সালে। ভ্যাটিকানের বাইরে সর্বশেষ সমাহিত পোপ হলেন ত্রয়োদশ লিও, যিনি মারা যান ১৯০৩ সালে। তার পর থেকে সব পোপই শায়িত হয়েছেন সেন্ট পিটার্স ব্যাসিলিকায়।
ঢাকা এক্সপ্রেস/এসএআর