শিরোনাম
প্রকাশ: ১৯:৪৮, ২৫ এপ্রিল ২০২৫
রায় বাস্তবায়নের দাবিতে মানববন্ধন । ছবি: ঢাকা এক্সপ্রেস
এ সময় নিহত প্যানেল মেয়র ও কাউন্সিলর নজরুলের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটি বলেন, আমার স্বামীর সাথে যে সাতজনকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে তা আপনারা সবাই দেখেছেন, সারা পৃথিবীর মানুষ দেখেছে। সকলে এই হত্যার জন্য কান্না করেছে। সবাই চায় এই বিচারের রায় সম্পন্ন হবে।
তিনি আরও বলেন, এখনও রায় কেন ঝুলে আছে। আমাদের দাবি আইন ও বিচার বিভাগের প্রতি, আইন উপদেষ্টার প্রতি, এই সাতটি পরিবারের দিকে তাকিয়ে এই রায় কার্যকর করুন।
তিনি বলেন, আমাদের সাতটি পরিবার ধ্বংস হয়ে গেছে। আমরা সরকারের সহযোগিতা চাই। সার্বিক সহযোগিতা করে আমাদের মামলাটা যেন দ্রুত নিষ্পত্তি হয়। আমরা যেন বিচার পেয়ে সান্ত্বনা নিয়ে মরতে পারি।
মানববন্ধনে আরও বক্তব্য রাখেন, নিহত নাসিক প্যানেল মেয়র মোহাম্মদ নজরুল ইসলামের ভাই নূর মোহাম্মদ, আব্দুস সালাম, নিহত তাজুল ইসলামের বাবা আবুল খায়ের, তার ভাই রাজু আহমেদ, নিহত গাড়িচলক জাহাঙ্গীরের স্ত্রী নূপুরসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা।
২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল ঢাকা-নারায়ণগঞ্জের লিংক রোডের লামাপাড়া এলাকায় র্যাবের সদস্যরা চেকপোস্ট বসিয়ে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের তৎকালীন কাউন্সিলর নজরুল ইসলামের গাড়ি থামান। র্যাব নজরুল, তাঁর তিন সহযোগী ও গাড়িচালককে তুলে নিয়ে যায়। এ সময় ওই পথ দিয়ে যাচ্ছিলেন আইনজীবী চন্দন সরকার। তিনি অপহরণের বিষয়টি দেখে ফেলায় তাঁকে ও তাঁর গাড়িচালককেও র্যাব তুলে নিয়ে যায়। পরে তাঁদের সবাইকে হত্যা করে ওই রাতেই পেট কেটে এবং ইটের বস্তা বেঁধে লাশ শীতলক্ষ্যা নদীতে ডুবিয়ে দেয়। ওই বছরের ৩০ এপ্রিল ছয়জন ও পরদিন একজনের লাশ ভেসে ওঠে।
হত্যার শিকার সাতজন হলেন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ২ নম্বর ওয়ার্ডের তৎকালীন কাউন্সিলর ও প্যানেল মেয়র-২ নজরুল ইসলাম, তাঁর বন্ধু মনিরুজ্জামান স্বপন, তাজুল ইসলাম, লিটন, নজরুলের গাড়িচালক জাহাঙ্গীর আলম, আইনজীবী চন্দন কুমার সরকার ও তাঁর গাড়িচালক ইব্রাহিম। ওই ঘটনায় দুটি মামলা হয়, একটির বাদী নজরুলের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম এবং অপরটির বাদী আইনজীবী চন্দন সরকারের জামাতা বিজয় কুমার পাল।
পরে আদালত আসামীদের স্বীকারোক্তি, জবানবন্দি ও স্বাক্ষ্যগ্রহন শেষে ৩৩ মাস পর জেলা ও দায়রা জজ আদালত ২০১৭ সালের ১৬ জানুয়ারী রায় প্রদান করেন। রায়ে নারায়ণগঞ্জে ৭ খুনের মামলার প্রধান আসামী নূর হোসেনসহ র্যাব-১১ চাকুরিচ্যুত তিন কর্মকতা লেফটেনেন্ট কর্ণেল তারেক সাঈদ মোহাম্মদ, মেজর আরিফ হোসেন ও লেফটেনেন্ট কমান্ডার এম এম রানাকে ২৬ জনকে মৃত্যুদন্ড ও ৭ জনকে ১০ বছর করে এবং ২ জনকে ৭ বছর করে কারাদন্ড প্রদান করা হয়।
ওই রায়ের বিরুদ্ধে আসামিপক্ষ আপিল করলে দীর্ঘ শুনানি শেষে ২০১৮ সালে ২২ আগস্ট হাইকোর্ট ১৫ জনের মৃত্যুদন্ডের আদেশ বহাল রাখেন। আর বাকিদের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা প্রদান করেন।
ঢাকা এক্সপ্রেস/ এসএ