ঢাকা, শুক্রবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৫

১২ বৈশাখ ১৪৩২, ২৬ শাওয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম

Scroll
ভারতের সঙ্গে উত্তেজনা ‘সর্বাত্মক যুদ্ধে’ রূপ নিতে পারে: পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী
Scroll
ট্রাম্পের বর্ধিত শুল্ক বন্ধ করতে দেশটির ১২ রাজ্যে মামলা
Scroll
পোপের শেষকৃত্যানুষ্ঠানে যোগ দিতে কাতার থেকে ভ্যাটিকানে গেলেন প্রধান উপদেষ্টা
Scroll
কারখানায় গ্যাস সরবরাহে স্থলভিত্তিক এলএনজি টার্মিনাল স্থাপন করবে অন্তর্বর্তী সরকার: প্রেস সচিব
Scroll
পারভেজ হত্যার প্রধান আসামি মেহেরাজ ৫ দিনের রিমান্ডে
Scroll
‘জনতা পার্টি বাংলাদেশ’ নামে নতুন রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশ- চেয়ারম্যান চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন, মহাসচিব শওকত মাহমুদ
Scroll
সাবেক সংসদ সদস্য সালেহা খানম মারা গেছেন
Scroll
লাইন অব কন্ট্রোলে ভারত ও পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর মধ্যে গোলাগুলি
Scroll
গাজায় নিহত আরও ৬০ ফিলিস্তিনি, মারা গেলেন একই পরিবারের ১২ সদস্য
Scroll
ভারত-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া পর্যটক হত্যাকাণ্ড ছিল ‘পরিকল্পিত একটি ঘটনা’: পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ

জীবন বাজি রেখে ১১ পর্যটককে বাঁচান নাজাকাত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ: ১৩:১৫, ২৫ এপ্রিল ২০২৫ | আপডেট: ১৬:১১, ২৫ এপ্রিল ২০২৫

জীবন বাজি রেখে ১১ পর্যটককে বাঁচান নাজাকাত

নিজের জীবন বাজি রেখে ১১ পর্যটককে জঙ্গি হামলা থেকে বাঁচিয়েছেন কাশ্মীরি যুবক নাজাকাত শাহ। ঘটনাচক্রে, ওই একই হামলায় মৃত্যু হয় তাঁর মামাতো ভাই আদিলের। ভাইকে হারিয়ে বিষণ্ণতায় ভেঙে পড়েও নিজের কর্তব্যে অবিচল ছিলেন নাজাকাত। ১১ পর্যটককে শ্রীনগরে সুরক্ষিত জায়গায় পৌঁছে দিয়ে তবেই স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছেন।

নজাকত পেহেলগামেরই বাসিন্দা। বৈসরন উপত্যকা থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে তাঁর গ্রাম। শীতের সময় নাজাকাত সোয়েটার, শাল-সহ নানা রকম গরম পোশাক নিয়ে চলে যান ছত্তিশগড়। সেখানে চিরমিরি শহরের আশপাশের গ্রামে এই গরম পোশাক বিক্রি করেন। ব্যবসার সূত্রে ওই এলাকাতেই ঘর ভাড়া নিয়ে থাকেন তিনি। কয়েক বছর ধরে এ ভাবে যাতায়াত আর ব্যবসার সুবাদে গ্রামেরই অরবিন্দ আগরওয়াল এবং তাঁর পরিবারের সঙ্গে পরিচয় হয়। আর সেই পরিচয় এবং আলাপ সূত্রে নাজাকাত আগরওয়াল পরিবারকে কাশ্মীরে ঘুরতে আসার আহ্বান জানান।

নাজাকাতের আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে আগরওয়াল পরিবারের ১১ জন সদস্য গত ১৭ এপ্রিল জম্মু গিয়েছিলেন। ২২ এপ্রিল পেহেলগামের বৈসরন উপত্যকা ঘুরে বাড়ি ফেরার কথা ছিল। শ্রীনগর, গুলমার্গ, সোনমার্গ ঘুরে ভ্রমণের শেষ দিন পেহেলগামে তাঁদের নিয়ে যান নাজাকাত। দুপুর ১২টায় বৈসরন উপত্যকায় পৌঁছোন তাঁরা। পরিবারের সকলে বৈসরনে পৌঁছেই ছবি তুলতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন। দুপুর দেড়টায় আগরওয়াল পরিবারেরই এক সদস্য কুলদীপ অন্যদের বলেন যে, অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে, এ বার ফেরা উচিত। নাজাকাত জানান, ঠিক তখনই গুলির আওয়াজ শোনা যায়। লোকজন এ দিক ও দিক ছুটে পালাতে থাকেন। নাজাকাত তখন আগরওয়াল পরিবারের তিন শিশুকে নেন এবং বাকিদের বলেন ছুটতে। যদিও হামলাস্থল থেকে বেশ কিছুটা দূরে ছিলেন আগরওয়াল পরিবারের সদস্যরা। কিন্তু নাজাকাত বিপদ বুঝে নিজে আগরওয়াল পরিবারকে সুরক্ষিত জায়গায় নিয়ে যান। পাহাড়ি রাস্তা ধরে প্রায় ১৪ কিলোমিটার দূরে নিয়ে যান নাজাকাত। আগরওয়াল পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, নাজাকাত যেহেতু স্থানীয় যুবক, তাই এই ধরনের পরিস্থিতিতে কী করা উচিত, কোন রাস্তা দিয়ে যাওয়া উচিত, সবই জানেন। ফলে নিজের সুরক্ষার কথা না ভেবে তাঁদের ১১ জনকে সুরক্ষিত জায়গায় পৌঁছে দিয়ে তবেই স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছেন।

গত ২২ এপ্রিল পেহেলগামের বৈসরণে জঙ্গি হামলায় ২৬ জন নিহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ২৫ জন পর্যটক এবং এক জন স্থানীয় যুবক। আর সেই স্থানীয় যুবকের নাম আদিল হুসেন শাহ। পর্যটকদের বাঁচাতে তিনি এক জঙ্গির হাত থেকে বন্দুক ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। তখনই তাঁকে ঝাঁঝরা করে দেয় জঙ্গিরা। ঘটনাচক্রে, এই আদিলই নাজাকাতের মামাতো ভাই।

ভারতীয় এক সংবাদমাধ্যমকে নাজাকাত বলেন, ‘পর্যটকদের নিরাপদ স্থানে পৌঁছে দেওয়াকেও বেশি গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে হয়েছে। ওদের সুরক্ষা আমার কাছে প্রথম।’ 

এর পরই নজাকত জানান, জঙ্গিদের হাতে নিহত ভাই আদিলের শেষকৃত্যেও যেতে পারেননি। কারণ, তাঁর ভরসায় আসা পর্যটকদের সুরক্ষিত বিমানবন্দরে পৌঁছে দেওয়াকেই গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়েছে।

এ সম্পর্কিত খবর

আরও পড়ুন