ব্রেকিং
মাদারীপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৫:১৯, ১০ মে ২০২৫
মাদারীপুরের রাজৈরে হরিদাসদী-মহেন্দ্রদী ইউনিয়ন দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে জেলা বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। ছবি: ঢাকা এক্সপ্রেস
একাধিক বিএনপি নেতাকর্মী ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মাদারীপুর জেলার পৌরসভা ও ইউনিয়নগুলোতে বিএনপির কমিটি গঠনের জন্য ২২ জন নেতাকর্মীকে দায়িত্ব দেন কেন্দ্রীয় বিএনপি। তাদেরকে নিয়ে গঠন করা হয়েছে ৭ টি গঠনতন্ত্র মূলক কমিটি। ৬ টি কমিটিতে ৩ জন করে এবং একটি কমিটিতে ৪ জন রয়েছেন। প্রতিটি কমিটিকে দেওয়া তালিকা অনুযায়ী ইউনিয়ন ও পৌরসভায় বিএনপির কমিটি গঠনের নির্দেশ দেওয়া হয়। এর মধ্যে হরিদাসদী-মহেন্দ্রদী ইউনিয়ন বিএনপির কমিটি গঠনের দায়িত্ব পেয়েছেন মাদারীপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক এ্যাড. জাফর আলী মিয়া, আহ্বায়ক কমিটির সদস্য বজলু হাওলাদার ও এ্যাড. এইচ এম মিজানুর রহমান।
তাদের অনুমতিতে শুক্রবার বিকেলে হরিদাসদী-মহেন্দ্রদী ইউনিয়ন বিএনপির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনের আয়োজন করেন ওই ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি ডা. আবুল কালাম শিকদার। তবে পুনরায় সভাপতি পদ পেতে ইউনিয়নের ওয়ার্ড পর্যায়ের কোনো নেতাকর্মীকেই সম্মেলনের বিষয়টি জানায়নি বলে অভিযোগ। এ নিয়ে সম্মেলনের মাঝেই জেলা বিএনপির আহ্বায়ক জাফর আলী মিয়ার সাথে স্থানীয় নেতাকর্মীদের তর্কবিতর্ক হয়। পরে জাফর অনুসারী ওই ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি প্রার্থী আবুল কালাম গ্রুপ ও রাজৈর উপজেলা বিএনপি নেতা আরিফ হাওলাদার গ্রুপের মধ্যে হাতাহাতির একপর্যায়ে সংঘর্ষ হয়।
এ সময় বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় জিয়া পরিষদের কার্যকরী সদস্য মো: জিয়াউর রহমান জিয়া ও আব্বাস শিকদারসহ কয়েকজন আহত হন। পরে কমিটি ঘোষণার জন্য ৭ দিনের সময় নিয়ে সম্মেলন শেষ করেন জেলা বিএনপির নেতারা।
রাজৈর উপজেলার হরিদাসদী-মহেন্দ্রদী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি প্রার্থী ডা. আবুল কালাম শিকদার অভিযোগ করে বলেন, ‘জেলা বিএনপির আহ্বায়ক প্রোগ্রাম দিয়েছেন, এটা আরিফ হাওলাদার মানে না। এর আগে প্রোগ্রাম থামানোর জন্য ৫০-৬০ জন নিয়ে এসে আমাকে চার্জ করেছে। আমি পারবো না বলায় সম্মেলনের মধ্যেই তিনি আওয়ামী লীগের কিছু লোক সঙ্গে নিয়া এই গ্যাঞ্জামটা লাগাইছে। এর মধ্যে আমাদের গ্রামের জিয়া ও রেজাউল শিকদারও ছিলো। জিয়া উল্টাপাল্টা কথা বলায় মাইর খাইছে। ওখানে বিএনপির ৩ গ্রুপের লোকজন ছিলো। এমপি প্রার্থী মিল্টন বৈধ্য গ্রুপ, উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ওহাব মিয়া গ্রুপ ও আরিফ হাওলাদার গ্রুপ।’
এ ব্যাপারে পাল্টা অভিযোগ করে আরিফ হাওলাদার বলেন, ‘আবুল কালাম শিকদার কবিরাজপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি। বর্তমানে আলাদা করে হরিদাসদী-মহেন্দ্রদী ইউনিয়ন করা হয়েছে। তিনি পুরনো লোক হওয়ায় তাকে দায়িত্ব নিয়ে অনুষ্ঠানটি করে দেওয়ার জন্য বলেছিলো জেলা কমিটি। কিন্তু তিনি সেভাবে ব্যপক আকারে করতে পারে নাই। কিছু লোকজনরে বলছিলো, বেশিরভাগ লোকদের দাওয়াত দেয় নাই। এজন্য ওখানের স্থানীয় লোকজন যারা অরিজিনালি বিএনপি করে তারা ওনার (কালাম) উপর ক্ষিপ্ত হইছে। পরে এক কথায়-দুই কথায় গণ্ডগোল হইছে।’
তবে এ বিষয়ে জানতে মাদারীপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক এ্যাডভোকেট জাফর আলী মিয়াকে একাধিকবার মুঠোফোনে কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি। তাই তার কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এ সময় মাদারীপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক এ্যাড. জাফর আলী মিয়া, কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও মাদারীপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মিল্টন বৈধ্য, রাজৈর উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহিদুর রহমান লেবু কাজী, লন্ডন বিএনপি নেতা বাবু হাওলাদারসহ বিভিন্ন নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
রাজৈর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) সঞ্চয় কুমার ঘোষ বলেন, ‘এ ব্যাপারে আমার কিছু জানা নাই। আমি ঘটনাস্থলে ছিলাম না। ওখানে আমাদের পুলিশ অফিসার রবিউল বাশার ডিউটিতে ছিলেন।’
ঢাকা এক্সপ্রেস/এনএ