ঢাকা, শুক্রবার, ০৯ মে ২০২৫

২৬ বৈশাখ ১৪৩২, ১১ জ্বিলকদ ১৪৪৬

শিরোনাম

Scroll
হত্যা মামলায় সাবেক মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভীকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত
Scroll
আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার সামনে রাত থেকে বিক্ষোভ
Scroll
নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভীকে নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ
Scroll
নারায়ণগঞ্জে সাবেক মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভীকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যাওয়ার পথে পুলিশের গাড়িবহরে হামলা, আহত ৫
Scroll
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে বাদ জুমা জমায়েতের ডাক হাসনাত আবদুল্লাহর
Scroll
গুম থাকা বিএনপি নেতা সাজেদুল ইসলাম সুমনের রাজধানীর শাহিনবাগ বাসায় পরোয়ানা নিয়ে পুলিশ, এসআই প্রত্যাহার
Scroll
প্রাইম এশিয়ায় পারভেজ হত্যা: আসামি ফারিয়া হক টিনা গ্রেপ্তার
Scroll
চাঁপাইনবাবগঞ্জে এবারো থাকছে না ম্যাঙ্গো ক্যালেন্ডার, পরিপক্ক হলেই পাড়া যাবে আম
Scroll
পাকিস্তান ও ভারত সংঘাত আমাদের কোনো বিষয় নয়: মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স
Scroll
ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনার মাঝে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল) স্থগিত করার সিদ্ধান্ত

হামলার নাম কেন ‘অপারেশন সিঁদুর’

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ: ১২:৩৫, ৭ মে ২০২৫ | আপডেট: ১২:৫৬, ৭ মে ২০২৫

হামলার নাম কেন ‘অপারেশন সিঁদুর’

ছবি: সংগৃহীত

ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে ২৬ জন পর্যটক হত্যার জবাবে মঙ্গলবার (৬ মে) গভীর রাতে পাকিস্তানে বিমান হামলা চালিয়েছে ভারত। এতে আট জন নিহত ও কমপক্ষে ৩৫ জন বেসামরিক মানুষ আহত হয়েছেন। এই অভিযানের নাম দেওয়া হয়েছে ‘অপারেশন সিঁদুর’।

ঠিক কোন কৌশলে এই নাম বেছে নিয়েছে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ, তা নিয়ে সামাজিকমাধ্যমে নিজের প্রতিক্রিয়া তুলে ধরেছেন নিউইয়র্কভিত্তিক পাকিস্তানি লেখক আজাদ ইসার। যিনি মিডল ইস্ট আইয়ের সাংবাদিক এবং জম্মু ও কাশ্মীর নিয়ে গবেষণা করছেন।

তার মতে, পাকিস্তানের চালানো অভিযানে সিঁদুর নামকরণ চরমপন্থি হিন্দু চিন্তার প্রতিফলন। সিঁদুর মাধ্যমে যেমন একজন নারীকে বিবাহ করা হয়, তেমনি পাকিস্তানসহ এই অঞ্চলের দেশগুলোকে অখণ্ড ভারতের অংশ বানানোর চেষ্টা করছে হিন্দু উগ্রবাদী সংগঠনগুলো।  

সামাজিকমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) আজাদ লেখেন, ‘ভারত অপারেশন সিঁদুর নামকরণ করেছে— এর প্রতীকী অর্থকে অবহেলা করা উচিত নয়। সিঁদুর হলো এক ধরনের লাল রঙ, যা হিন্দু বর তার কনের কপালে পরিয়ে দেয়— বিবাহের প্রতীক হিসেবে। এটি একটি ফ্যাসিস্ট হিন্দু জাতীয়তাবাদী মানসিকতা, যেখানে পাকিস্তানকে নিজেদের ভূখণ্ড হিসেবে চিহ্নিত করে ভারত নিজেকে একটি সাম্রাজ্য হিসেবে উপস্থাপন করছে।’

এই নামকরণের পেছনে যে প্রতীকী তাৎপর্য রয়েছে, সেটিকে তুলে ধরেছেন সাংবাদিক আজাদ ইসার। মূলত এই টুইটে তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, কেন একটি সামরিক অভিযানের নাম এমন একটি ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক প্রতীকের নামে রাখা হলো; যার মধ্য দিয়ে একটি ভূখণ্ডকে দখল বা মালিকানার চিহ্ন হিসেবে দেখানো হয়।

আজাদ ভারত সরকারের সাম্প্রতিক পদক্ষেপকে কেবল সামরিক নয়, বরং ধর্মীয় জাতীয়তাবাদের প্রতিফলন হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। 

আজাদ ইসার এই বিশ্লেষণের সঙ্গে একমত প্রকাশ করেছেন আরেক পাকিস্তানের প্রগতিশীল রাজনৈতিক কর্মী আম্মার আলি জান।

সামাজিকমাধ্যম ফেসবুকে আজাদ ইসার টুইট শেয়ার করে তিনি লেখেন, ‘আমি জানি না এই বিশ্লেষণ কতটা সঠিক, কিন্তু যেহেতু আমি নিজেও হিন্দু উগ্রপন্থা নিয়ে গবেষণা করেছি, এতটুকু নিশ্চিতভাবে বলা যায়—হিন্দুত্ববাদীরা পুরো উপমহাদেশে আধিপত্য বিস্তারের স্বপ্ন দেখে। এই কারণেই মোদি সরকারের মন্ত্রীরা এবং সামাজিকমাধ্যমে উগ্র হিন্দুত্ববাদীরা গাজায় গণহত্যার সমর্থন করে এবং বারবার বলে যে পাকিস্তান ও কাশ্মীরিদের সাথেও একই ব্যবহার করা উচিত।’

আম্মারের ভাষ্য, এই পশ্চাদপদ চিন্তার এখন মার্কিন সহায়তাও রয়েছে, কারণ যুক্তরাষ্ট্র চায় চীনের বিরুদ্ধে ভারতকে ব্যবহার করতে। ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে ট্রাম্প ও মোদি একটি চুক্তি সই করেন যার নাম ছিল ‘মার্কিন-ভারত কমপ্যাক্ট (২১০০ শতাব্দীর জন্য সামরিক অংশীদারত্ব, বাণিজ্য সম্প্রসারণ ও প্রযুক্তির ত্বরান্বিত সম্ভাবনা উন্মোচনের উদ্যোগ)’ —এই চুক্তির মাধ্যমে ভারতকে আরো অস্ত্র দেওয়া হবে এবং ভারত ও ইসরাইল একসঙ্গে একটি বাণিজ্যিক করিডোর গড়ে তুলছে।

আম্মার আরো লেখেন, ‘পাকিস্তানের উদারপন্থি মহলের প্রতি আমার অনুরোধ, অনুগ্রহ করে ভারতের প্রতি প্রেমমুগ্ধতা থেকে বেরিয়ে আসুন। যদি ধরে নেওয়া হয় ভারত এক সময়ে লিবারেল ও ধর্মনিরপেক্ষ ছিল, তবে এখন আর তেমনটি নেই। এখন গুজরাটে সহস্রাধিক নিরীহ মানুষ হত্যা করা মোদি ভারতের প্রধানমন্ত্রী, যিনি ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে হাত মিলিয়ে গোটা অঞ্চলকে ধ্বংসের পথে ঠেলে দিচ্ছেন। তার চীন ও পাকিস্তানের পাশাপাশি নেপাল, শ্রীলঙ্কা ও বাংলাদেশের সঙ্গেও সম্পর্ক তলানিতে পৌঁছেছে। মোদি সরকারের কৌশলগত নীতির মূল লক্ষ্য পাকিস্তানে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করা— কোনো প্রগতিশীল আন্দোলনের সহায়তা নয়।’

আম্মারের যুক্তি, ‘উপমহাদেশের প্রতিটি দেশেই নিপীড়ন ও অবিচার রয়েছে। তবে যদি সামগ্রিকভাবে অঞ্চলগত হুমকির দিক থেকে বিশ্লেষণ করা হয়, তাহলে মার্কিন হস্তক্ষেপ এবং ভারতের দক্ষিণ এশিয়ার ‘ইসরাইল’ হয়ে ওঠার আকাঙ্ক্ষাই এই অঞ্চলের সবচেয়ে বড় হুমকি— শুধু প্রতিবেশীদের জন্য নয়, ভারতের সাধারণ জনগণের জন্যও। এ কারণেই মিথ্যা অভিযোগ তুলে ভারত প্রথমে পাকিস্তানের পানি বন্ধ করেছে, আর এখন পাকিস্তানে সামরিক হামলা চালিয়েছে। এই মৌলিক দ্বন্দ্বকে কেন্দ্র করেই অঞ্চলটির বাস্তব অবস্থা সঠিকভাবে বিশ্লেষণ করা সম্ভব।’

ভারত সরকার কিংবা সামরিক নেতৃত্বের কেউ অবশ্য ‘অপারেশন সিঁদুর’ অভিযান নামকরণ নিয়ে কোনো মন্তব্য করেননি।  

ঢাকা এক্সপ্রেস/আরইউ

আরও পড়ুন