শিরোনাম
মাদারীপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৫:৪৩, ৯ মে ২০২৫ | আপডেট: ১৮:০২, ৯ মে ২০২৫
নিহত হাফেজ বিল্লাল ফকির ও তার পরিবারের সদস্যদের জন্য কবর খুঁড়ছেন স্থানীয়রা। ছবি: ঢাকা এক্সপ্রেস
বৃহস্পতিবার (৮ মে) রাতে মাদারীপুর সদর উপজেলার উত্তর দুধখালী ইউনিয়নের মিঠাপুর গ্রামে নিহতদের বাড়িতে গেলে এ তথ্য জানান স্বজন ও স্থানীয়রা।
একই পরিবারের নিহত চারজন হলেন, সদর উপজেলার মিঠাপুর গ্রামের মাওলানা সামাদ ফকির, তার ছেলে হাফেজ বিল্লাল ফকির, স্ত্রী সাহেদা বেগম ও মেয়ে আফসানা আক্তার।
এ ঘটনায় আহত অবস্থায় রোজিনা বেগমকে রাজধানী ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। স্বামীসহ পরিবারের ৪ সদস্যকে হারানোর কয়েক ঘণ্টা পর সেখানে রাতে সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে রোজিনা একটি পুত্র সন্তানের জন্ম দেন।
এর আগে দুপুরে মাদারীপুর সদর উপজেলার মিঠাপুর এলাকা থেকে রোগী নিয়ে অ্যাম্বুলেন্সে ঢাকা যাচ্ছিলো ১০ জন। পথে সিরাজদিখানের নিমতলা এলাকায় অ্যাম্বুলেন্সের চাকা বিকল হয়ে যায়। এরপর মহাসড়কের পাশে থেমে অ্যাম্বুলেন্সটির চাকা মেরামত করা হচ্ছিলো।
এ সময় গোল্ডেন লাইন পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাস পেছন থেকে অ্যাম্বুলেন্সটিকে ধাক্কা দেয় এবং দাঁড়িয়ে থাকা যাত্রীদের চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই একজন পরে ঢাকা মেডিকেলে ৪ জন নিহত হয়। এ ঘটনায় তিনজন গুরুতর আহত হন।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, অ্যাম্বুলেন্সে করে অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী রোজিনা বেগমকে নিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যাচ্ছিলেন হাফেজ বিল্লাল ফকির ও তার পরিবারের সদস্যরা। ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের নিমতলা তালুকদার পাম্পের সামনে এলে তাদেরকে বহনকারী অ্যাম্বুলেন্সটির সামনের চাকা ফেটে যায়। এ সময় মেরামত করার জন্য রাস্তার পাশে গাড়িটি থামিয়ে রাখা হয়। চাকা পালটানোর সময় পেছন দিক থেকে বেপরোয়া গতিতে আসা ঢাকাগামী গোল্ডেন লাইন পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাস অ্যাম্বুলেন্সের পেছনে ধাক্কা দেয়। এতে একই পরিবারের ৪ জনসহ ৫ জন মারা যায়।
স্থানীয়রা জানান, নিহত মাওলানা সামাদ ফকির ও তার ছেলে হাফেজ বিল্লাল ফকির দুইজনেই ছিলেন দুইটি মসজিদের ইমাম। নিহত বিল্লালের স্ত্রী রোজিনা অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। তাকে নিয়েই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যাচ্ছিলো পরিবারটি। এ সময়ই ঘটে এ দুর্ঘটনা।
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য শারাফ উদ্দিন বলেন, ‘সড়ক দুর্ঘটনায় ৫ জন নিহত হয়েছে। এদের মধ্যে একই পরিবারের ৪ জন রয়েছে। দ্রুতগতির একটি বেপরোয়া বাস অ্যাম্বুলেন্সকে পেছন থেকে চাপা দেয়। এতেই তাদের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় আমরা বাস চালকের শাস্তি চাই এবং সরকারের কাছে অনুরোধ নিহতদের পরিবারকে যেনো অর্থিক সহযোগিতা করা হয়।’
মাদারীপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওয়াদিয়া শাবাব বলেন, ‘একই পরিবারের ৪ জন নিহত হয়েছে। বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। নিহতের পরিবার আবেদন করলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে আর্থিক সহযোগিতার ব্যবস্থা করা হবে।’
ঢাকা এক্সপ্রেস/এনএ