শিরোনাম
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৯:১৬, ২৬ মে ২০২৫ | আপডেট: ২১:২৬, ২৬ মে ২০২৫
সোমবার জাতীয় সংসদের এলডি হলে অনুষ্ঠিত এক ব্রিফিংয়ে অধ্যাপক রীয়াজ বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলো এখনো বিচার বিভাগের বিকেন্দ্রীকরণ, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও মেয়াদ নির্ধারণ, জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল গঠন, প্রধানমন্ত্রী পদের মেয়াদকাল, সংসদ সদস্যদের দায়িত্ব সীমা, রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের প্রক্রিয়া এবং সংবিধান সংশোধন পদ্ধতির মতো মৌলিক কাঠামোগত বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছায়নি।’
তিনি জানান, এসব বিষয়ে মতপার্থক্য থাকলেও অধিকাংশ দল আলোচনায় বসার আগ্রহ প্রকাশ করেছে এবং নমনীয়তা দেখিয়েছে। তবে তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে “কোনো দ্বিমত নেই” বলে জানান তিনি।
সংবিধানের মূলনীতি হিসেবে “সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক সুবিচার এবং গণতন্ত্র”—এই চারটির বিষয়ে অধিকাংশ দলের মধ্যে ঐকমত্য রয়েছে বলে জানান অধ্যাপক রীয়াজ। তবে “বহুত্ববাদ” অন্তর্ভুক্ত করা নিয়ে ভিন্নমত দেখা দিয়েছে।
নারীদের জন্য জাতীয় সংসদের নিম্নকক্ষে ১০০ আসন সংরক্ষণের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে এক ধরনের ঐকমত্য রয়েছে। তবে আসন বণ্টন এবং নির্বাচনের পদ্ধতি নিয়ে এখনো মতভেদ রয়েছে।
দ্বিকক্ষবিশিষ্ট আইনসভা গঠনের বিষয়ে বেশিরভাগ রাজনৈতিক দল নীতিগতভাবে একমত হলেও, কিছু দল এককক্ষবিশিষ্ট সংসদের পক্ষেও রয়েছে। তবে দুটি পক্ষই সংসদের ডেপুটি স্পিকারের পদ বিরোধী দলের সদস্যকে দেওয়ার বিষয়ে একমত।
উচ্চকক্ষ গঠন নিয়ে যারা সমর্থন দিয়েছেন, তারা ১০০ জন সদস্য নিয়ে উচ্চকক্ষ গঠনের পক্ষে একমত হয়েছেন। তবে এই প্রতিনিধিদের নির্বাচনের প্রক্রিয়া কেমন হবে—সেই বিষয়ে এখনো চূড়ান্ত ঐকমত্য হয়নি।
রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা নির্ধারণে ব্যবহৃত সংবিধানের ৪৮(ক) অনুচ্ছেদে পরিবর্তনের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য আছে। তবে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ভারসাম্য কেমন হবে, তা নিয়ে ভিন্নমত অব্যাহত রয়েছে।
সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদে সংসদ সদস্যদের দলীয় সিদ্ধান্তের বিপক্ষে ভোট দেওয়ার নিষেধাজ্ঞা সংশোধনের বিষয়েও দলগুলো নীতিগতভাবে একমত। তবে কোন কোন বিষয়ে দলীয় সিদ্ধান্ত বাধ্যতামূলক হবে, সে বিষয়ে এখনো পূর্ণ ঐকমত্য হয়নি। অর্থ বিল, আস্থা ভোট, সংবিধান সংশোধন বিল ও রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট বিল এই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হতে পারে বলে জানান অধ্যাপক রীয়াজ।
সংসদীয় স্থায়ী কমিটিগুলোর মধ্যে পাবলিক একাউন্টস কমিটি, এস্টিমেট কমিটি, পাবলিক আন্ডারটেকিং কমিটি ও প্রিভিলেজ কমিটির সভাপতিত্ব বিরোধী দলের হাতে তুলে দেওয়ার বিষয়ে প্রায় সব রাজনৈতিক দল একমত বলে জানান জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের এই সহ-সভাপতি।
সংবিধান সংস্কার এবং অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পথচিত্রে জাতীয় ঐকমত্য এখনও অনেক পথ বাকি, তবে আলোচনা অব্যাহত রয়েছে বলে আশা প্রকাশ করেছেন অধ্যাপক আলী রীয়াজ।
ঢাকা এক্সপ্রেস/ এমআরএইচ