শিরোনাম
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১২:০৫, ২৯ মে ২০২৫
ছবি: সংগৃহীত
ঢাকার জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের কর্মচারীদের সঙ্গে জুলাই যোদ্ধাদের সংঘর্ষের জেরে বৃহস্পতিবারও (২৯ মে) সেবা কার্যক্রম বন্ধ আছে।
কর্মচারীদের কর্মবিরতির কারণে বুধবার (২৮ মে) সকাল থেকেই হাসপাতালের সব ধরনের চিকিৎসা কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। বৃহস্পতিবার সকালেও তা চালু হয়নি।
হাসপাতালের কর্মচারী আশরাফুল আলম বলেন, বুধবারের সংঘর্ষের পর বৃহস্পতিবার চিকিৎসক, নার্স, কর্মচারীদের কেউ হাসপাতালে যাননি। এ কারণে কোনো কার্যক্রম চলছে না।
হাসপাতালটির কর্মচারীরা বুধবার সকাল থেকে কর্মবিরতি শুরু করলে সকাল ১০টার পর তাদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায় সেখানে চিকিৎসাধীন জুলাই যোদ্ধা এবং চিকিৎসা নিতে আসা রোগীর স্বজনরা। দুপুরের দিকে সেনা সদস্যরা এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করেন। তবে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসে বিকালের দিকে।
কর্মচারী আশরাফুল বলেন, তারা কাল আমাদের ডাক্তারদের মারছে, যারা ১১ মাস ধরে এদের চিকিৎসা দিছেন। স্টাফদের মারছে, কয়েকজনের মাথা ফাটাইছে। রড, লাঠি, তাদের সবকিছু রেডি থাকে। তারা মারামারি করে, আবার পঙ্গু থেকেও আইসা যোগ দেয়। আমরা উপর থেকে নির্দেশ না আসা পর্যন্ত কাজে যাব না।
সেলিনা বেগম নামে হাসপাতালের একজন সিনিয়র স্টাফ নার্স বৃহস্পতিবার সকালে বলেন, আমিসহ কয়েকজন নার্স সকালে হাসপাতালে গিয়েছিলাম, তবে গেট বন্ধ থাকায় ফেরত চলে এসেছি। তিনি বলেন, সকালে হাসপাতালে গিয়ে দেখি গেইট বন্ধ। সিকিউরিটিরা গেইটে দাঁড়ায়া আছে, পুলিশও আছে। আমাদের ঢুকতে দেয় নাই, বলে হাসপাতাল বন্ধ। আমাদের মেট্রন ম্যাডামকে কল দিয়েছিলাম। তিনি একটা ট্রেনিংয়ে, এ কারণে কল ধরেননি হয়তো। পরে আমরা বাসায় চলে এসেছি।
হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ডা. জানে আলম বৃহস্পতিবার সকালে বলেন, হাসপাতাল বন্ধ, কোনো কার্যক্রম চলছে না; এর বেশি ইনফরমেশন দিতে পারব না।
বুধবার যা ঘটেছিল: উন্নত চিকিৎসা বা পুনর্বাসনের বিষয়ে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ার অভিযোগ তুলে গত রবিবার চক্ষু বিজ্ঞান হাসপাতালে চিকিৎসাধীন চার জুলাইযোদ্ধা বিষপান করেন। সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় তারা সহযোদ্ধাদের নিয়ে মঙ্গলবার দুপুরে চক্ষু বিজ্ঞান হাসপাতালের পরিচালককে অবরুদ্ধ করেন।
প্রায় দেড় ঘণ্টা বাদে সেনাবাহিনীর সহায়তায় অবরুদ্ধ দশা থেকে মুক্তি পান হাসপাতাল পরিচালক। এর মধ্যে আন্দোলনকারীদের কেউ কেউ গায়ে কেরোসিন-পেট্রোল ঢেলে আগুন লাগানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিল বলে পুলিশের ভাষ্য।
পরিচালককে অবরুদ্ধ করে রাখা এবং আহতদের আত্মহত্যার চেষ্টার ঘটনায় নিরাপত্তার দাবিতে বুধবার সকাল থেকে কর্মবিরতি পালন করছিলেন হাসপাতাল কর্মচারীরা। এ অবস্থায় হাসপাতালের কর্মচারীদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন জুলাইযোদ্ধারা। পরে আহতদের সঙ্গে যোগ দেন বহির্বিভাগে চিকিৎসা সেবা নিতে আসা রোগীর স্বজনরা।
হাসপাতালের এক চিকিৎসকের ভাষ্য, জুলাইয়ের আহতরা হাসপাতালের চিকিৎসক-কর্মচারীদের আবাসিক ভবনেও হামলা চালায় এবং কর্মচারীদের শাস্তির দাবিতে তারা সেখানে স্লোগানও দেন।
ঢাকা এক্সপ্রেস/আরইউ