শিরোনাম
কুমিল্লা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৬:১৬, ১৩ জুন ২০২৫
ব্রাহ্মণপাড়া ডায়াবেটিক হাসপাতাল । ছবি: ঢাকা এক্সপ্রেস
২০০৯ সালে একুশে পদকপ্রাপ্ত চিকিৎসক ও সমাজসেবী ডা. যোবায়দা হান্নান এবং ডায়াবেটিস চিকিৎসক ডা. আতাউর রহমান জসিম যৌথভাবে এই হাসপাতালের যাত্রা শুরু করেন। শুরু থেকেই এই প্রতিষ্ঠানটি কোনো সরকারি সহায়তা ছাড়াই স্থানীয় সমাজসেবী ও দানশীল মানুষের সহযোগিতায় পরিচালিত হয়ে আসছে।
ধন্যদৌল বাজার সংলগ্ন সবুজে ঘেরা পরিবেশে গড়ে উঠা এই হাসপাতালটির চত্বরে গেলেই চোখে পড়ে রোগীদের দীর্ঘ লাইন। অধিকাংশই মধ্যবয়সী ও প্রবীণ ডায়াবেটিস আক্রান্ত মানুষ। কেউ চিকিৎসা নিয়ে ফিরছেন, কেউ অপেক্ষা করছেন। তবে চোখে-মুখে নেই কোনো ক্লান্তি, নেই বিরক্তি। সুশৃঙ্খল পরিবেশে চিকিৎসা নিচ্ছেন সবাই।
আর চিকিৎসকরা, তারাও এই মানবিক পরিবেশে কাজ করে তৃপ্ত। হাসপাতালটির শুরু থেকেই ডা. আতাউর রহমান জসিম বিনা পারিশ্রমিকে রোগী দেখে আসছেন। বর্তমানে চিকিৎসকদের সংখ্যা বাড়লেও তার অবদান অনস্বীকার্য।
তিনি বলেন, আমার বাড়িও এই উপজেলায়। তাই এখানকার মানুষের জন্য কিছু করার দায়বদ্ধতা থেকেই এই উদ্যোগ। আমরা শুরু করেছিলাম খুব ছোট পরিসরে, কিন্তু এখন অনেকদূর এগিয়েছি। ভবিষ্যতে এই হাসপাতালকে ডায়াবেটিস ছাড়াও অন্যান্য রোগের চিকিৎসা কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে চাই।
হাসপাতালটির জন্য জমি দান করেন শিক্ষানুরাগী ও সমাজসেবী মোশাররফ হোসেন খান চৌধুরী। ডা. যোবায়দা হান্নানের মৃত্যুর পরও থেমে থাকেনি এই মানবসেবার যাত্রা। ডা. জসিম তাঁর আদর্শকে ধারণ করে চালিয়ে যাচ্ছেন হাসপাতালের কার্যক্রম।
স্থানীয় বাসিন্দা আরিফুল ইসলাম লিটন বলেন, ব্রাহ্মণপাড়ায় আগে ডায়াবেটিস চিকিৎসার কোনো সুযোগ ছিল না। কুমিল্লা শহরে যেতে হতো। এখন নিজের গ্রামেই চিকিৎসা পাচ্ছি, এটা অনেক বড় সুবিধা।
আরেক রোগী সালেহা বেগম বলেন, আমি যখন প্রথম ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হই, তখন চিকিৎসার জন্য শহরে যেতে হতো। এখন এই হাসপাতালে ডাক্তার ফি ছাড়া প্রতিদিনই চিকিৎসা পাওয়া যায়, যা আমাদের জন্য আশীর্বাদ।
ডায়াবেটিস চিকিৎসার পাশাপাশি হৃদরোগ, কিডনি, চক্ষু এবং শিশু চিকিৎসার সুবিধা চালু করার উদ্যোগ নিচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এতে করে এলাকার হতদরিদ্র মানুষরা আরও বেশি উপকৃত হবেন বলে আশা করছেন স্থানীয়রা।
এই হাসপাতাল কেবল একটি চিকিৎসাকেন্দ্র নয়, এটি একটি আদর্শ ও মানবতার বাতিঘর। যেখানে চিকিৎসা নেই শুধু পেশা নয় বরং একটি দায়বদ্ধতা, একটি ব্রত।
ঢাকা এক্সপ্রেস/ এসএ