ঢাকা, রোববার, ২৭ এপ্রিল ২০২৫

১৩ বৈশাখ ১৪৩২, ২৮ শাওয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম

Scroll
বৈদ্যুতিক গোলযোগে বিকেল সোয়া পাঁচটা থেকে মেট্রোরেলের চলাচল বন্ধ
Scroll
ইরানের বন্দরে ভয়াবহ বিস্ফোরণ, আহত ৪ শতাধিক
Scroll
রাঙামাটিতে পিকআপ-অটোরিকশার সংঘর্ষে নিহত ৫
Scroll
শি জিনপিং ফোন করেছেন, চীনের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি হচ্ছে: যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প
Scroll
পহেলগাম হত্যাকাণ্ড : আসামে গ্রেপ্তার করা হলো ৬ মুসলিমকে
Scroll
গাজায় নতুন করে হামলায় নিহত আরও ৪৫
Scroll
রোমে বাংলাদেশ হাউস পরিদর্শন প্রধান উপদেষ্টার
Scroll
কুয়েটের ভিসি ও প্রো-ভিসিকে অব্যাহতির প্রজ্ঞাপন জারি
Scroll
টিভিতে খেলা: ক্রিকেট [কলকাতা নাইট রাইডার্স-পাঞ্জাব কিংস (রাত ৮টা, স্টার স্পোর্টস), লাহোর কালান্দার্স-মুলতান সুলতানস (রাত ৯টা, নাগরিক টিভি], ফুটবল [চেলসি-এভারটন (বিকেল ৫.৩০ মি., স্টার স্পোর্টস), বার্সোলোনা-রিয়াল মাদ্রিদ (রাত ২টা, স্পোর্টসজেডএক্স)]

ভারত-পাকিস্তান: সামরিক সক্ষমতায় কে বেশি এগিয়ে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ: ১৯:১৯, ২৬ এপ্রিল ২০২৫ | আপডেট: ১৯:৪২, ২৬ এপ্রিল ২০২৫

ভারত-পাকিস্তান: সামরিক সক্ষমতায় কে বেশি এগিয়ে

ভারতীয় সেনাবাহিনীর ভীষ্ম ট্যাংক। ছবি: ডিফেন্স সিকিউরিটি এশিয়া

যেকোনো দেশের সামরিক শক্তি মূল্যায়নের ক্ষেত্রে বিবেচনায় আসে দেশটির জনবল, অস্ত্রভাণ্ডার, প্রতিরক্ষা বাজেট, পারমাণবিক সক্ষমতা এবং কৌশলগত নীতির মতো নানা জটিল উপাদান। ১৯৪৭ সালের বিভক্তির পর থেকেই ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতার সম্পর্ক বিদ্যমান, যার ধারাবাহিকতায় একাধিক যুদ্ধেও জড়িয়েছে তারা। ভূ-রাজনৈতিক বাস্তবতায় দীর্ঘদিন ধরেই উল্লেখযোগ্য সামরিক শক্তি ধরে রেখেছে দেশদুটি। 

সম্প্রতি জম্মু ও কাশ্মীরের পেহেলগামে বন্দুকধারীদের হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা আরও বেড়েছে। পাকিস্তানের মদদের অভিযোগ তুলে দেশটির বিরুদ্ধে একাধিক পদক্ষেপ নিয়েছে ভারত। পাল্টা প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে পাকিস্তানও।

এমন উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতিতে দেখা দিয়েছে সামরিক সংঘাতের আশঙ্কা। এই প্রেক্ষাপটে দুই দেশের সামরিক সক্ষমতা নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে। বিশ্বের সামরিক শক্তি পর্যবেক্ষণকারী প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল ফায়ারপাওয়ার (জিএফপি) প্রতি বছর একটি সূচক প্রকাশ করে, যেখানে ১৪৫টি দেশের সামরিক শক্তি মূল্যায়ন করা হয়।  

‘গ্লোবাল ফায়ারপাওয়ার সূচক ২০২৫’ অনুসারে মালয়েশিয়াভিত্তিক ওয়েবসাইট ‘ডিফেন্স সিকিউরিটি এশিয়া’ শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, যেখানে ভারত ও পাকিস্তানের সামরিক সক্ষমতার গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলো বিশ্লেষণ করা হয়েছে।  প্রতিবেদনের উল্লেখযোগ্য অংশ পাঠকের জন্য তুলে ধরা হলো।

সামগ্রিক সামরিক র‍্যাঙ্কিং ও সক্ষমতা সূচক

‘গ্লোবাল ফায়ারপাওয়ার সূচক ২০২৫’-এ জনশক্তি, সামরিক সরঞ্জাম, অর্থনীতি ও ভৌগোলিক বৈশিষ্ট্যসহ ৬০টিরও বেশি সূচকের উপর ভিত্তি করে ১৪৫টি দেশের সামরিক শক্তি মূল্যায়ন করা হয়েছে। এই র‍্যাঙ্কিংয়ে ভারত সামগ্রিকভাবে বিশ্বের চতুর্থ শক্তিশালী দেশ হিসেবে স্থান পেয়েছে। দেশটির সক্ষমতা সূচক স্কোর ০.১১৮৪ (স্কোর যত কম, সামরিক শক্তি তত বেশি)। অন্যদিকে, পাকিস্তান তালিকায় ১২তম অবস্থানে রয়েছে, সক্ষমতা সূচক স্কোর ০.২৫১৩।  

ভারতের এ উচ্চ অবস্থান বড় জনসংখ্যা, ব্যাপক প্রতিরক্ষা বাজেট ও বিস্তৃত সামরিক সক্ষমতার প্রতিফলন। বিপরীতে, ছোট অর্থনীতির সীমাবদ্ধতা ও বিদেশি সরবরাহ, বিশেষ করে চীনের ওপর নির্ভরতা সত্ত্বেও পাকিস্তান কৌশলগত দিক থেকে ভারসাম্য রক্ষায় মনোযোগী থেকেছে, ফলে নির্দিষ্ট খাতগুলোয় প্রতিযোগিতামূলক অবস্থানে রয়েছে দেশটি।

সামরিক-বেসামরিক জনশক্তি

প্রচলিত যুদ্ধের জন্য জনবল একটি গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। ভারত ও পাকিস্তানের সামরিক কাঠামোয় জনশক্তির ওপর নির্ভরতা বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষ করে উভয় দেশের বিশাল জনসংখ্যা ও শক্তিশালী স্থলবাহিনীর কারণে।   

ভারতের জনসংখ্যা বর্তমানে ১৪০ কোটি, যা বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। সক্রিয় জনবল ৬৬ কোটি ২০ লাখ। এর মধ্যে সক্রিয় সেনা সদস্য ১৪ লাখ ৬০ হাজার (বিশ্বে দ্বিতীয়)। রিজার্ভ বাহিনীর সদস্য ১১ লাখ ৬০ হাজার (বিশ্বে সপ্তম) এবং আধাসামরিক বাহিনীর সদস্য সংখ্যা ২৫ লাখ ৩০ হাজার (বিশ্বে দ্বিতীয়)। সব মিলিয়ে ভারতের মোট সামরিক জনবল ৫১ লাখ।    

২৫ কোটি ২০ লাখ জনসংখ্যা নিয়ে বিশ্বে পঞ্চম স্থানে রয়েছে পাকিস্তান। এর মধ্যে সক্রিয় জনবল ১০ কোটি ৮০ লাখ। সক্রিয় সেনা সদস্য ৬ লাখ ৫৪ হাজার (বিশ্বে সপ্তম), রিজার্ভ বাহিনীর সদস্য ৬ লাখ ৫০ হাজার। যদিও আধাসামরিক বাহিনীর সুনির্দিষ্ট সংখ্যা ‘জিএফপি’তে আলাদাভাবে উল্লেখ করা হয়নি, তবে রেঞ্জার্স ও ফ্রন্টিয়ার কোরসহ এ বাহিনীর গুরুত্ব উল্লেখযোগ্য। সব মিলিয়ে পাকিস্তানের সামরিক জনবল ১৭ লাখ। জনশক্তিতে ভারত পাকিস্তানের তুলনায় পাঁচগুণেরও বেশি এগিয়ে। পাশাপাশি ভারতের রিজার্ভ ও আধাসামরিক বাহিনীও বড় আকারের। 


প্রতিরক্ষা বাজেট

২০২৫-২৬ অর্থবছরে ভারতের প্রতিরক্ষা বাজেট ৭ হাজার ৯০০ কোটি ডলার, যা যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের পর বিশ্বে তৃতীয় সর্বোচ্চ। এটি ভারতের মোট জিডিপির ২ দশমিক ১ শতাংশ। গত বছরের তুলনায় এবছর ৯ দশমিক ৫ শতাংশ বাজেট বৃদ্ধি করেছে ভারত। 

পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা বাজেট ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ কোটি ডলারের মধ্যে। তবে চলমান অর্থনৈতিক সংকটের কারণে দেশটি শীর্ষ বাজেটধারী দেশগুলোর তালিকায় নেই। পাকিস্তানের সামরিক ব্যয় দেশটির জিডিপির ৩ দশমিক ৬ শতাংশ। বৈদেশিক সামরিক সহায়তা হিসেবে পাকিস্তান বছরে প্রায় ১০ কোটি ডলার পেয়ে থাকে, যা মূলত চীন ও যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসে।  

প্রতিরক্ষা বাজেটে ভারতের ব্যবধান পাকিস্তানের তুলনায় ছয় থেকে আট গুণ বেশি। ভারতের এই বিপুল ব্যয় সামরিক খাতে প্রযুক্তি, অবকাঠামো এবং জনবল আধুনিকীকরণে বড় ভূমিকা রাখছে। অন্যদিকে বাজেট সীমাবদ্ধতার মধ্যেও পাকিস্তান চীনের সহায়তায় সামরিক সক্ষমতা ধরে রাখার চেষ্টা করছে। পাকিস্তানের সামরিক ব্যয়ের বড় অংশ বৃহৎ সেনাবাহিনী ও পারমাণবিক অস্ত্রের সুরক্ষায় ব্যবহৃত হয়। 

সেনাবাহিনী 

ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সংঘাতের কেন্দ্রে রয়েছে দেশদুটির সেনাবাহিনী। ১৯৪৭, ১৯৬৫ এবং ১৯৯৯ সালে উভয় দেশের মধ্যে প্রচলিত ঘরানার যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছে।   

ভারতীয় সেনাবাহিনী বর্তমানে ৪ হাজার ৬১৪টি ট্যাংক, ১ লাখ ৫১ হাজার ২৪৮টি সাঁজোয়া যান এবং ৯ হাজার ৭১৯টি কামান পরিচালনা করে। দেশটির বিশেষ বাহিনীর মধ্যে রয়েছে প্যারা এসএফ, ঘাতক ফোর্স এবং মেরিন কমান্ডো ফোর্স (মার্কোস)।  

পাকিস্তানের কাছে রয়েছে ৩ হাজার ৭৪২টি ট্যাংক, আনুমানিক ৫০ হাজার সাঁজোয়া যান এবং ৪ হাজার ৪৭২টি কামান। বিশেষ বাহিনীর মধ্যে রয়েছে এসএসজি, এসএসজি নৌ ও স্পেশাল সার্ভিস উইং, যেগুলো আকারে ছোট হলেও কার্যকারিতায় গুরুত্বপূর্ণ।  

সংখ্যাগত দিক থেকে ট্যাংক, সাঁজোয়া যান এবং কামানের ক্ষেত্রে ভারত স্পষ্ট সুবিধাজনক অবস্থানে থাকলেও পাকিস্তানের ট্যাংকবহরও বেশ প্রতিযোগিতামূলক। চীনের ভিটি–৪ মডেলের মাধ্যমে পাকিস্তান তাদের ট্যাংকবহর আধুনিকায়ন করেছে। এছাড়াও রয়েছে এম-১১৩ ও আল–ফাহাদসহ বৈচিত্র্যপূর্ণ স্থল সমরযান।

বিমানবাহিনী

আধুনিক যুদ্ধে দ্রুত প্রতিক্রিয়া এবং নির্ভুল আক্রমণের জন্য বিমানবাহিনীর ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। গ্লোবাল ফায়ারপাওয়ার অনুযায়ী, ভারতের মোট বিমান সংখ্যা ২ হাজার ২২৯টি। এর মধ্যে যুদ্ধবিমান রয়েছে ৫১৩ থেকে ৬০৬টি। ভারতের বিমানবহরে আধুনিক যুদ্ধবিমান হিসেবে এসইউ–৩০এমকেআই, রাফায়েল এবং তেজস রয়েছে। এ ছাড়া আকাশ প্রতিরক্ষায় এস–৪০০ ব্যবস্থা এবং হেলিকপ্টার ইউনিটে অ্যাপাচি ও চিনুক অন্তর্ভুক্ত। ভারতের কাছে চারটি ‘এয়ারবর্ন আর্লি ওয়ার্নিং অ্যান্ড কন্ট্রোল (এইডব্লিউঅ্যান্ডসি)’ ব্যবস্থাও রয়েছে।  

পাকিস্তানের বিমান সংখ্যা ১ হাজার ৩৯৯ থেকে ১ হাজার ৪৩৪টি। যুদ্ধবিমান রয়েছে ৩২৮ থেকে ৩৮৭টি। আধুনিক যুদ্ধবিমানের মধ্যে রয়েছে এফ–১৬ ফাইটিং ফ্যালকন, জেএফ–১৭ থান্ডার এবং মিরাজ থ্রি/ফাইভ। পাকিস্তানের কাছে ভারতের তুলনায় বেশি যুদ্ধে ব্যবহারের উপযোগী হেলিকপ্টার রয়েছে, যার মধ্যে এএইচ–১এফ কোবরা অন্যতম। পাশাপাশি পাকিস্তানের রয়েছে সাতটি এইডব্লিউঅ্যান্ডসি ব্যবস্থা, যা ভারতের তুলনায় বেশি।  

বিমানবহরের আকার ও বৈচিত্র্যে ভারত এগিয়ে থাকলেও স্কোয়াড্রন ঘাটতির সমস্যা রয়েছে। অন্যদিকে, পাকিস্তান তুলনামূলক ছোট বিমানবহর হলেও ধারাবাহিকভাবে আধুনিকায়নের মাধ্যমে সক্ষমতা বৃদ্ধি করছে। পাশাপাশি, অতিরিক্ত এইডব্লিউঅ্যান্ডসি ব্যবস্থার মাধ্যমে নজরদারিতে বাড়তি সুবিধা পাচ্ছে।


নৌবাহিনী

ভারত মহাসাগরে ভারতের সামুদ্রিক স্বার্থ রক্ষা এবং আরব সাগরে পাকিস্তানের সম্ভাব্য অভিযান ঠেকাতে নৌ-সক্ষমতা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।   

ভারতের নৌবাহিনীর অধীনে রয়েছে ২৯৪টি জাহাজ, যার মধ্যে বিমানবাহী রণতরী রয়েছে দুটি। সাবমেরিন রয়েছে ১৮টি, যার মধ্যে পারমাণবিক শক্তিচালিত সাবমেরিন আইএনএস আরিহান্ট অন্তর্ভুক্ত। এ ছাড়া রয়েছে ১৩টি ডেস্ট্রয়ার, ১৪টি ফ্রিগেট, ১০৬টি প্যাট্রোল নৌযান এবং নৌবাহিনীর জন্য ব্যবহৃত ৭৫টি যুদ্ধবিমান। ভারতীয় নৌবাহিনীর সদস্যসংখ্যা ৬৭ হাজার ৭০০। 

পাকিস্তানের নৌবাহিনীর জাহাজসংখ্যা ১২১টি। রয়েছে ৮টি সাবমেরিন, ৯টি ফ্রিগেট, ১৭টি প্যাট্রোল নৌযান এবং ৮টি যুদ্ধবিমান। বাহিনীর সদস্যসংখ্যা ২৩ হাজার ৮০০।  

নৌবাহিনীর আকার, সক্ষমতা ও গভীর সমুদ্রে অভিযান পরিচালনার দিক থেকে ভারত পাকিস্তানের তুলনায় অনেক এগিয়ে। পাকিস্তানের নৌবাহিনী মূলত উপকূলীয় প্রতিরক্ষা এবং আঞ্চলিক অপারেশনের ওপর নির্ভরশীল। বিমানবাহী রণতরীর অনুপস্থিতি এবং সীমিত যুদ্ধবিমান থাকার কারণে গভীর সমুদ্রে পাকিস্তানের নৌ-তৎপরতা তুলনামূলক সীমিত।


পারমাণবিক সক্ষমতা

ভারত ও পাকিস্তান উভয় দেশই পারমাণবিক অস্ত্রের অধিকারী। দেশ দুটির প্রতিরক্ষা কৌশলে এ সক্ষমতা বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।  

ভারতের রয়েছে ১৩০ থেকে ১৪০টি পারমাণবিক অস্ত্র। ডেলিভারি সিস্টেমের মধ্যে রয়েছে অগ্নি–থ্রি ও অগ্নি–ফাইভ ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র (পাল্লা ৩ হাজার থেকে ৫ হাজার কিলোমিটার), মিরাজ ২০০০ ও রাফায়েল যুদ্ধবিমান এবং সামুদ্রিক প্রতিরক্ষায় আইএনএস আরিহান্ট সাবমেরিন। ভারত ‘নো ফার্স্ট ইউজ’ নীতির পক্ষে, অর্থাৎ আগে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার না করার অঙ্গীকার তাদের। তবে পারমাণবিক হামলার শিকার হলে ভারত ব্যাপক প্রতিশোধমূলক হামলার নীতিতে অটল।  

পাকিস্তানের হাতে রয়েছে ১৪০ থেকে ১৫০টি পারমাণবিক অস্ত্র, যা সংখ্যায় ভারতের চেয়ে কিছুটা বেশি। ডেলিভারি সিস্টেমের মধ্যে আছে শাহিন–টু ও শাহিন–থ্রি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র, এফ–১৬ যুদ্ধবিমান এবং বাবর ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র। পাকিস্তান ‘ফুল-স্পেকট্রাম ডেটারেন্স’ নীতিতে বিশ্বাসী। অর্থাৎ, প্রয়োজনে যুদ্ধক্ষেত্রে আগেভাগেই পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করতে পারে দেশটি।  


কৌশলগত জোট ও জটিল মূল্যায়ন

ভারতের কৌশলগত জোটে রয়েছে ইসরায়েল, রাশিয়া ও ফ্রান্সের মতো শক্তিধর দেশ। পাকিস্তানের ঘনিষ্ঠ মিত্র চীন, পাশাপাশি রয়েছে সীমিত পরিসরে যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনও।  

জনবল, সামরিক ব্যয় ও প্রচলিত প্রতিরক্ষা শক্তিতে ভারতের এগিয়ে থাকা স্পষ্ট হলেও পাকিস্তানের সামরিক সক্ষমতাকে হালকাভাবে দেখার সুযোগ নেই। দেশটির পারমাণবিক ও কৌশলগত অস্ত্রভাণ্ডার, অপ্রতিসম যুদ্ধকৌশল এবং চীনের জোরালো সমর্থন পাকিস্তানকে একটি শক্ত প্রতিরক্ষা অবস্থানে রেখেছে।  
ভারতের প্রতিরক্ষা আধুনিকায়নে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে আছে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা, চীন ও পাকিস্তান সীমান্তে দ্বৈত মনোযোগ এবং পুরোনো বিমানবহর। সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানে অতিরিক্ত মনোযোগও ভারতীয় সামরিক নীতিতে কিছু দুর্বলতা তৈরি করছে।  

অন্যদিকে পাকিস্তানের জন্য বড় বাধা হয়ে আছে অর্থনৈতিক সংকট, ছোট আকারের জনশক্তি, পুরোনো সামরিক সরঞ্জাম এবং স্থায়ী আঞ্চলিক উত্তেজনা।  

 

ঢাকা এক্সপ্রেস/এসএআর 

আরও পড়ুন