শিরোনাম
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:১৯, ২২ এপ্রিল ২০২৫
এ বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সরকারি চাকরিতে কাউকে অগ্রাধিকার দিতে হলে আইন, বিধি বা প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে তা নিশ্চিত করতে হয়। কোনো নির্দিষ্ট আইনি কাঠামো ছাড়া বা বিদ্যমান বিধি না বদলে শহীদ পরিবারের সদস্যদের এই সুবিধা দেওয়া সম্ভব নয়। এজন্য প্রয়োজন আলাদা প্রজ্ঞাপন বা নিয়োগবিধি সংশোধন।
এদিকে জনপ্রশাসন বিশেষজ্ঞ ফিরোজ মিয়া বলেন, ‘সরকারি চাকরিতে অগ্রাধিকার দিতে হলে আলাদা করে প্রজ্ঞাপন জারি করতে হবে। অনেক দপ্তরের নিজস্ব নিয়োগবিধি রয়েছে। ফলে প্রত্যেক দপ্তরের ক্ষেত্রেই আলাদা করে বিধি সংশোধনের প্রয়োজন হবে। শুধু একটি সাধারণ নির্দেশনায় এটি সম্ভব নয়।’
কোটা সংস্কার নিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মধ্য দিয়ে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতন হয়। তার আগে ২৩ জুলাই জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বিধি-১ শাখা একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে সরকারি চাকরিতে ৯৩ শতাংশ পদ মেধার ভিত্তিতে এবং বাকি ৭ শতাংশ কোটা রাখার সিদ্ধান্ত জানায়। তবে সেই ৭ শতাংশের মধ্যে গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ পরিবারের সদস্যদের অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে কিছু বলা হয়নি।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বিধি-১ অধিশাখার যুগ্ম সচিব মোহাম্মদ শামীম সোহেল বলেন, ‘আমরা এ বিষয়ে কোনো নির্দেশনা পাইনি। সরকারের পক্ষ থেকে কিছু জানানো হলে তখন সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এদিকে, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের স্মৃতি সংরক্ষণ ও শহীদ পরিবার-আহতদের পুনর্বাসনসহ কর্মসংস্থানের জন্য ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান অধিদপ্তর’ গঠনের প্রক্রিয়া শেষ পর্যায়ে রয়েছে। এই অধিদপ্তরের মাধ্যমে আহতদের চিকিৎসা, শহীদ পরিবারের আর্থিক সহায়তা, প্রশিক্ষণ ও সহজ শর্তে ঋণ দেওয়ার পাশাপাশি কর্মসংস্থানের ব্যবস্থাও নেওয়ার কথা বলা হলেও, কীভাবে সেই ব্যবস্থা করা হবে—এ বিষয়ে খসড়ায় বিস্তারিত কোনো নির্দেশনা নেই।
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মোহাম্মদ ফারুক হোসেন জানান, ‘অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠার পরই এই কর্মসংস্থানের বিধি নির্ধারণ করা হবে।’
উল্লেখ্য, এর আগে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের মতো জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদদের সন্তানদের জন্য স্কুল ভর্তিতে কোটা রাখা হলেও সমালোচনার মুখে তা বাতিল করে প্রতি শ্রেণিতে একটি আসন বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। তবে এ ধরনের পদক্ষেপের বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
সার্বিকভাবে, শহীদ পরিবারের জন্য চাকরিতে অগ্রাধিকার দেওয়ার বিষয়ে সরকারের প্রতিশ্রুতি থাকলেও, তা বাস্তবায়নের পথে এখনো কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি হয়নি। এতে করে সংশ্লিষ্ট পরিবারগুলো অনিশ্চয়তায় দিন কাটাচ্ছে।
ঢাকা এক্সপ্রেস/ বিডি