ঢাকা, রোববার, ০১ জুন ২০২৫

১৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, ০৪ জ্বিলহজ্জ ১৪৪৬

‘নোবেল কীভাবে কাউকে আটকে রাখবে?’—প্রাক্তন স্ত্রীর প্রশ্ন

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা

প্রকাশ: ২০:৩৭, ২০ মে ২০২৫

‘নোবেল কীভাবে কাউকে আটকে রাখবে?’—প্রাক্তন স্ত্রীর প্রশ্ন

বিতর্কিত কণ্ঠশিল্পী মাঈনুল আহসান নোবেলকে ধর্ষণ ও শারীরিক নির্যাতনের গুরুতর অভিযোগে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের ডেমরা থানা। অভিযোগ অনুযায়ী, তিনি এক কলেজছাত্রীকে সাত মাস ধরে বাসায় আটকে রেখে ধর্ষণ ও নির্যাতন করেছেন।

ঘটনার বিবরণ

ডেমরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদুর রহমান জানান, ‘গত বছরের নভেম্বরে অভিযুক্ত নোবেল ওই কলেজছাত্রীকে বিয়ের আশ্বাস দিয়ে নিজের বাসায় নিয়ে আসেন এবং বৈধ বিবাহ ছাড়াই তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেন। এরপর তাকে দীর্ঘ সাত মাস আটকে রেখে ধর্ষণ ও মারধর করেন। এমনকি এসব নির্যাতনের ভিডিওচিত্রও ধারণ করেন তিনি।’

সম্প্রতি নির্যাতনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ঘটনা প্রকাশ্যে আসে। এরপর ভুক্তভোগী জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ ফোন করে পুলিশের সহায়তা চান। পুলিশ তাৎক্ষণিক অভিযান চালিয়ে তাকে উদ্ধার করে এবং অভিযুক্ত নোবেলকে গ্রেপ্তার করে।

গ্রেপ্তারের সময় নোবেল ডেমরা স্টাফ কোয়ার্টার এলাকাতে অবস্থান করছিলেন। পুলিশ জানায়, তিনি ঘটনার পর আত্মগোপনে চলে যান এবং সীমান্ত পাড়ি দিয়ে দেশত্যাগের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। এ জন্য একটি মাইক্রোবাসও ভাড়া করেছিলেন। তবে পুলিশের তৎপরতায় সোমবার দিবাগত রাত ২টার দিকে তাকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়।

প্রাক্তন স্ত্রীর প্রতিক্রিয়া

নোবেলের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের খবরে প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন তার প্রাক্তন স্ত্রী সালসাবিল মাহমুদ। তিনি বর্তমানে বাংলাদেশের বাইরে অবস্থান করছেন। নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া স্ট্যাটাসে তিনি লেখেন— ‘আমি এখন মালয়েশিয়ায় রয়েছি। ফেসবুকে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে এই খবর দেখে জানলাম। নোবেলের সঙ্গে আমার অনেক দিন দেখা হয় না ঠিক, কিন্তু ফোনে কথা হয়। আর যে অভিযোগ শুনলাম, ‘সাত মাস ধরে নোবেল আটকে রেখে ধর্ষণ’- আসলে ওর সঙ্গে সাত মাস কারো পক্ষে থাকা সম্ভব এটা আমার বিশ্বাস হয় না। আর ও নেশাগ্রস্ত, ও কিভাবে আটকে রাখবে?’

নোবেল মাদকাসক্ত উল্লেখ করে সালসাবিল বলেন, ‘ও দীর্ঘদিন ধরে রিহ্যাবে ছিল। তারপর ছাড়া পেয়েছে। এরপর আমার সঙ্গে কথা হতো, কিন্তু ওর সঙ্গে যে কোনো মেয়ে থাকত সেটা আমি জানতাম না। যেহেতু মামলা হয়েছে, ধর্ষণের- এখন আদালতে প্রমাণ হবে সত্য-মিথ্যা, আমাকেও সেভাবে অপেক্ষা করতে হবে।’ 

পুলিশের বক্তব্য

ডিএমপি’র মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস বিভাগের উপকমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান বলেন— ‘নোবেলের বিরুদ্ধে ধর্ষণসহ একাধিক মামলা রয়েছে। নতুন অভিযোগের ভিত্তিতে ডেমরা থানায় মামলা রুজু হয় এবং সেখান থেকেই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।”

পূর্বের বিতর্ক

এটাই প্রথম নয়—নোবেল এর আগেও বিভিন্ন বিতর্ক ও আইনি জটিলতার মধ্যে জড়িয়েছেন। এর মধ্যে রয়েছে:

-মাদকাসক্তির অভিযোগ

-প্রতারণা ও হুমকি

-চুক্তি ভঙ্গ করে বিদেশি অনুষ্ঠান বাতিল

-সামাজিক মাধ্যমে উসকানিমূলক মন্তব্য

এই ঘটনাগুলোর কারণে নোবেল ইতোমধ্যে সামাজিক ও সাংস্কৃতিক মহলে একাধিকবার সমালোচিত হয়েছেন।

ঢাকা এক্সপ্রেস/ এমআরএইচ

আরও পড়ুন