শিরোনাম
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ০৮:৫২, ৩১ জুলাই ২০২৫ | আপডেট: ০৯:২৩, ৩১ জুলাই ২০২৫
ছবি: সংগৃহীত
বুধবার (৩০ জুলাই) এক সংবাদ সম্মেলনে মার্ক কার্নি বলেন, ফিলিস্তিনের গাজায় মানুষের দুর্দশা অসহনীয়। দ্রুত এর অবনতি হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে আগামী সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠেয় জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৮০তম সম্মেলনে ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে কানাডার।
তবে এই স্বীকৃতি কিছু বিষয়ের ওপর নির্ভর করবে বলে উল্লেখ করেন কানাডার প্রেসিডেন্ট।
কার্নি বলেন, ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষ ও প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের পক্ষ থেকে সংস্কারের প্রতিশ্রুতি এবং ২০২৬ সালে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের অঙ্গীকারের ভিত্তিতেই এই স্বীকৃতি দেওয়া হবে।
তিনি আরো জানান, হামাস ফিলিস্তিনের ভবিষ্যতে কোনো ভূমিকা রাখতে পারবে না এবং তারা আগামী নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না— এটিই শর্ত। তবে অনেকের মতে, এই শর্ত একটি গণতান্ত্রিক নির্বাচনের স্বচ্ছতা ও বৈধতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে পারে।
কার্নি বলেন, দুই রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধান ধরে রাখার মানে হচ্ছে, যারা শান্তিকে সহিংসতার ওপর প্রাধান্য দেয়, তাদের পাশে দাঁড়ানো।
সেপ্টেম্বরে ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হবে বলে কয়েক দিন আগে জানিয়েছিলেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ। পরে ইসরায়েল কিছু শর্ত না মানলে ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়ার কথা বলেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার। জাতিসংঘের ১৯৩ সদস্যদেশের মধ্যে বর্তমানে প্রায় ১৫০টি দেশই আনুষ্ঠানিকভাবে ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেয়।
ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্যের ঘোষণার পর থেকেই মার্ক কার্নির ওপর চাপ বাড়ছিল। এরই মধ্যে গত মঙ্গলবার তাকে উদ্দেশ করে একটি চিঠি লেখেন কানাডার প্রায় ২০০ জন সাবেক রাষ্ট্রদূত ও কূটনীতিক। তাতে ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়। চিঠিতে বলা হয়, দখলকৃত পশ্চিম তীর ও গাজায় ইসরায়েলের কর্মকাণ্ড কানাডার স্বার্থ ও মূল্যবোধকে ক্ষুণ্ন করেছে।
ইসরায়েলের প্রধান মিত্র যুক্তরাষ্ট্র শুরু থেকেই ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার বিরোধিতা করে আসছে। তাদের দাবি, এতে হামাস পুরস্কৃত হবে।
ট্রাম্প প্রশাসন ইসরায়েলকে নিরঙ্কুশ সমর্থন দিয়ে আসছে, যদিও জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞ এবং মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, গাজায় ইসরায়েল গণহত্যা চালাচ্ছে। ২০২৩ সালে যুদ্ধ শুরুর পর থেকে গাজায় ইসরায়েলি হামলায় ৬০ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং অধিকাংশ এলাকা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।
এদিকে বুধবার কানাডার মুসলিম সম্প্রদায়ের জাতীয় পরিষদ প্রধানমন্ত্রী কার্নির ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছে। তবে একইসঙ্গে গাজায় ইসরায়েলি হামলা বন্ধে আরো কার্যকর পদক্ষেপ নিতে কানাডার প্রতি আহ্বানও জানিয়েছে তারা।
তারা এক বিবৃতিতে বলেছে, গাজায় ইসরায়েলের আচরণ ট্রাম্প প্রশাসনের সেই চাপের মতো, যেখানে কানাডাকে যুক্তরাষ্ট্রের ৫১তম রাজ্য বানাতে বলা হয়েছিল।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়, কানাডাকে অবশ্যই আমাদের মূল্যবোধের পক্ষে দাঁড়িয়ে স্বাধীন পররাষ্ট্রনীতি অনুসরণ করতে হবে। বিশেষ করে যখন ট্রাম্প প্রশাসন গাজা দখলের পক্ষে দাঁড়ায় এবং একইসঙ্গে কানাডার সার্বভৌমত্ব নিয়েও প্রশ্ন তোলে।
ঢাকা এক্সপ্রেস/আরইউ