শিরোনাম
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ২২:২২, ১৪ জুন ২০২৫
এর আগে শুক্রবার ভোরে ইসরায়েল নজিরবিহীনভাবে ইরানের একাধিক সামরিক ও পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালায়। ওই হামলার প্রতিক্রিয়ায় ইরান পরের রাতেই পাল্টা জবাব দেয়। রাজধানী তেহরান থেকে ছোড়া একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র তেল আবিব, রামাত গান ও রিশন লিৎসিয়ন অঞ্চলে আঘাত হানে।
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) দাবি করেছে, বেশিরভাগ ক্ষেপণাস্ত্র ভূপাতিত করা হয়েছে। তবে কয়েকটি আঘাত জনবসতিপূর্ণ এলাকায় হওয়ায় প্রাণহানি ও ধ্বংসযজ্ঞ এড়ানো যায়নি।
তেল আবিবের একটি বহুতল ভবনে সরাসরি আঘাত হানার ঘটনা বর্ণনা করতে গিয়ে বাসিন্দা টালি হোরেশ বলেন, ‘আমরা ঘরের দরজা বন্ধ করে খবর দেখছিলাম। হঠাৎ এত বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটল যে পুরো ভবন কেঁপে উঠল। লিভিং রুম ধোঁয়ায় ভরে যায়, আমরা আবার নিরাপদ কক্ষে আশ্রয় নিই।’
উদ্ধারকর্মীরা পৌঁছাতে প্রায় দুই ঘণ্টা সময় লেগে যায়। ততক্ষণে ভবনের নিচতলা ব্যাপকভাবে ধ্বংস হয়ে যায়। আইডিএফ-এর সাবেক কর্নেল মাইকেল ডেভিড বলেন, ‘এত বড় মাত্রার হামলা অতীতে কখনো দেখিনি।’
তেল আবিবের নিকটবর্তী রিশন শহরে ক্ষেপণাস্ত্র আঘাতে দুইজন নিহত হন—একজন ৭৩ বছর বয়সী পুরুষ এবং এক নারী। আহত হন অন্তত ২০ জন। উদ্ধারকাজে নিয়োজিত ফায়ার সার্ভিস ক্যাপ্টেন ইদান চেন ওয়ালা জানান, ‘একটি ধ্বংসস্তূপ থেকে আমি তিন মাস বয়সী এক শিশুকে জীবিত উদ্ধার করি।’
তিনি বলেন, ‘ওপরের ঘরে মানুষ আটকা ছিল এবং সামনে আগুন জ্বলছিল। সেই ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যে আমরা উদ্ধার চালাই।’
রামাত গান শহরের বাসিন্দা অভি গাতেনিও বলেন, ‘আমি সন্তানদের নিয়ে ঘুমাচ্ছিলাম। সাইরেন বাজতেই নিরাপদ কক্ষে আশ্রয় নিই। কয়েক মিনিট পর বিকট বিস্ফোরণের শব্দ শুনি। বাইরে গিয়ে দেখি ধ্বংসস্তূপের নিচে এক প্রবীণ দম্পতি আটকা পড়েছে। তাদের উদ্ধারে সাহায্য করি।’
তিনি বলেন, ‘ঈশ্বরকে ধন্যবাদ, আমার সন্তানদের কিছু হয়নি। কাচের টুকরো মাটিতে পড়ে ছিল—এটা ওদের গায়ে লাগলে মৃত্যুও হতে পারত।’
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী আশঙ্কা করছে, এ ধরনের পাল্টাপাল্টি হামলা মধ্যপ্রাচ্যে আরও বড় সংঘাতে রূপ নিতে পারে। ইতিমধ্যে উচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়েছে এবং জরুরি সেবাসমূহ প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
এমআরএইচ