ঢাকা, সোমবার, ১৬ জুন ২০২৫

১ আষাঢ় ১৪৩২, ১৮ জ্বিলহজ্জ ১৪৪৬

হাইফাকে প্রধান টার্গেট কেন করছে ইরান

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ: ১৫:২৩, ১৫ জুন ২০২৫

হাইফাকে প্রধান টার্গেট কেন করছে ইরান

ইরান-ইসরায়েল উত্তেজনার মধ্যে ইসরায়েলের তৃতীয় বৃহত্তম শহর হাইফায় পাল্টা ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইরান—এমন খবর ছড়িয়ে পড়েছে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গণমাধ্যমে। শনিবার রাতভর ইরান থেকে ছোড়া একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হাইফা এবং আশপাশের এলাকায় আঘাত হানার দাবি উঠে এসেছে ওয়াশিংটন পোস্ট, চ্যানেল ১২, টাইমস অব ইসরায়েল, বিবিসি ও আল–জাজিরার প্রতিবেদনে।

বিস্ফোরণ, অগ্নিকাণ্ড ও বিভ্রান্তি

ওয়াশিংটন পোস্ট জানায়, হাইফায় বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, শহরে বড় ধরনের অগ্নিকাণ্ড হয়েছে, যা ক্ষেপণাস্ত্র হামলার ফল হতে পারে। তবে বিবিসি শুরুতে হামলার খবর দিলেও পরে জানায়, হাইফায় সরাসরি ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাত হানার বিষয়টি নিশ্চিত নয়।

ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন দাবি করেছে, শনিবার রাতে ইসরায়েলের দিকে ১০০টির বেশি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়, যার মূল লক্ষ্য ছিল হাইফা ও তেল আবিব।

হাইফা কেন ইরানের নিশানায়?

হাইফা কেবল একটি শহর নয়—এটি ইসরায়েলের একটি গুরুত্বপূর্ণ সামরিক, অর্থনৈতিক ও কৌশলগত কেন্দ্র। নিউইয়র্ক টাইমস ও ওয়াশিংটন পোস্ট বলছে, হাইফায় ইসরায়েলের সবচেয়ে বড় তেল শোধনাগার, গুরুত্বপূর্ণ রাসায়নিক কারখানা এবং একটি বিশাল নৌঘাঁটি রয়েছে। এটি ইসরায়েলের প্রধান গভীর সমুদ্রবন্দর, যার মাধ্যমে দেশটির প্রায় অর্ধেক বাণিজ্যিক পণ্য পরিবাহিত হয়।

আল-জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, হাইফায় অবস্থিত গ্যাস অবকাঠামোও ইরানের হামলার অন্যতম লক্ষ্য হতে পারে। কারণ, তেহরান আগেই হুঁশিয়ারি দিয়েছিল, ইসরায়েল যদি ইরানের জ্বালানি অবকাঠামোতে হামলা চালায়, তাহলে তারা একই ধরনের জবাব দেবে।

প্রতিরক্ষামূলক প্রস্তুতি ছিল

রয়টার্স জানায়, হাইফার কৌশলগত গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সেখানে আগে থেকেই ‘আয়রন ডোম’ ও অন্যান্য প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থা মোতায়েন করে রেখেছিল ইসরায়েল। তবে এতদিন এই শহর সরাসরি বড় ধরনের হামলার শিকার হয়নি।

বিশ্লেষকদের মতে, হাইফায় হামলা ইঙ্গিতবাহী

আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন, হাইফার মতো গুরুত্বপূর্ণ শহরে হামলা চালিয়ে ইরান শুধু সামরিক জবাবই দেয়নি, বরং রাজনৈতিক ও কৌশলগত বার্তাও দিয়েছে। এই হামলার মধ্য দিয়ে তারা দেখিয়েছে, ইসরায়েলের অভ্যন্তরে গভীরে প্রবেশ করে আঘাত হানার সক্ষমতা তাদের রয়েছে।

ইরান-ইসরায়েলের চলমান এই পাল্টাপাল্টি হামলা মধ্যপ্রাচ্যের নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলছে। বিশেষ করে হাইফার মতো স্থানে হামলা সংঘাতকে এক নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে পারে, যা শুধু এই দুই দেশের নয়—বরং পুরো অঞ্চলের জন্যই বিপজ্জনক পরিণতির ইঙ্গিত বহন করছে।

এমআরএইচ

আরও পড়ুন