ঢাকা, রোববার, ১৫ জুন ২০২৫

১ আষাঢ় ১৪৩২, ১৮ জ্বিলহজ্জ ১৪৪৬

শিরোনাম

Scroll
দশ দিনের ছুটি শেষে আজ খুলেছে সরকারি অফিস
Scroll
গোপালগঞ্জে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাকে ৩ বাসের ধাক্কা, এটিএসআইসহ নিহত ২
Scroll
সিলেটে দুই উপদেষ্টার গাড়িবহর আটকে বিক্ষোভে নেতৃত্ব দেওয়ায় যুবদল নেতা বহিষ্কার
Scroll
হরমুজ প্রণালি বন্ধ করল ইরান, তেলের বাজারে অস্থিরতা বাড়ছে
Scroll
সহজেই ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে চুক্তি করতে পারি এবং রক্তক্ষয়ী সংঘাতের অবসান ঘটাতে পারি: মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প
Scroll
ইসরায়েল হামলা বন্ধ করলে আমরাও বন্ধ করব: ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি
Scroll
গুরুত্বপূর্ণ হরমুজ প্রণালী বন্ধ করে দিতে পারে ইরান
Scroll
ভারতে হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত, পাইলটসহ নিহত ৭
Scroll
দীর্ঘ ১০৪ বছরের রেকর্ড গুঁড়িয়ে দিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার মহানায়ক টেম্বা বাভুমা

ইরানের যে গোপন স্থানে যেতে পারবে না ইসরায়েল

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ: ২২:৫২, ১৪ জুন ২০২৫

ইরানের যে গোপন স্থানে যেতে পারবে না ইসরায়েল

ইরানের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান চালিয়ে পারমাণবিক কর্মসূচি ধ্বংস করার পরিকল্পনা বহুদিন ধরেই করে আসছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। তবে সাম্প্রতিক হামলাতেও দেখা যাচ্ছে—ইরানের প্রকৃত প্রতিরক্ষা প্রাচীর কোনো ক্ষেপণাস্ত্র ব্যাটারি নয়, বরং দেশটির গভীর ভূগর্ভে নির্মিত পারমাণবিক স্থাপনাগুলো।

ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী আইডিএফ জানায়, চলমান সংঘাতের শুরুতেই তারা ইরানের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাগুলোকে প্রথম লক্ষ্য করেছে। সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশিত বেশ কয়েকটি ভিডিওতে দেখা গেছে, ক্ষেপণাস্ত্র ব্যাটারি ধ্বংস করা হচ্ছে। আইডিএফ মুখপাত্র এফি ডেফরিন দাবি করেছেন, ‘তেহরান পর্যন্ত ইসরায়েলি বিমান কার্যত মুক্তভাবে উড়তে পারছে।’

কিন্তু সামরিক বিশ্লেষকদের মতে, এটাই পারমাণবিক কর্মসূচির মূল সুরক্ষা ব্যবস্থাকে ভাঙার চাবিকাঠি নয়।

ইরানের গুরুত্বপূর্ণ বেশির ভাগ পারমাণবিক স্থাপনাই গভীর ভূগর্ভে অবস্থিত। যেমন, ফোরদোর জ্বালানি সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্রটি ৮০ মিটার গভীরে বলে ধারণা করা হয়। একইভাবে, মাউন্ট কোলাং-এ নির্মাণাধীন নতুন স্থাপনাটি আরও গভীরে ও আরও সুরক্ষিত।

এই ধরনের ঘাঁটি ধ্বংসে প্রয়োজন ‘বাঙ্কার বাস্টার’ বোমা, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি ৩০ হাজার পাউন্ড ওজনের GBU-57/B বা Massive Ordnance Penetrator (MOP)। যা ৬০ মিটার পর্যন্ত কংক্রিট ভেদ করতে পারে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র এই মুহূর্তে হামলায় অংশ নিচ্ছে না এবং ইসরায়েলের অস্ত্রাগারে MOP নেই।

ইসরায়েলের অস্ত্রের সীমাবদ্ধতা

ইসরায়েলি অস্ত্রাগারে রয়েছে ROCKS ও Air LORA নামের ক্ষেপণাস্ত্র, যেগুলো ৬ মিটার পর্যন্ত কংক্রিট ভেদ করতে পারে। যুক্তরাজ্যের RUSI-এর বিশ্লেষক জাস্টিন ব্রঙ্ক বলেন, ‘এত গভীর লক্ষ্যবস্তু ধ্বংস করতে হলে বহুবার এক স্থানেই নিখুঁতভাবে আঘাত হানতে হবে, যাতে ধাপে ধাপে ভিতরে প্রবেশ সম্ভব হয়।’

তবে সাবেক ইসরায়েলি কূটনীতিক ও প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা আলোন পিঙ্কাস প্রশ্ন তুলেছেন, ইসরায়েলের অস্ত্র মজুদে এত দীর্ঘমেয়াদি অভিযানের জন্য পর্যাপ্ত সক্ষমতা আদৌ আছে কি না।

বাস্তব কৌশল: সুড়ঙ্গ ধ্বংস ও দেরি ঘটানো

বিশ্লেষকদের মতে, প্রবেশ ও নির্গমন সুড়ঙ্গগুলো লক্ষ্য করে হামলাই হতে পারে সবচেয়ে বাস্তবসম্মত কৌশল। এর ফলে পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর কার্যকারিতা সাময়িকভাবে অচল হয়ে পড়তে পারে।

তবে RUSI বলছে, ইরান এই সুড়ঙ্গগুলো খুব দ্রুতই পুনর্গঠন করতে সক্ষম। অতীতে যেমন, বিজ্ঞানীদের হত্যার মাধ্যমে কিছু সময় কর্মসূচি বিলম্বিত করা সম্ভব হয়েছিল, এখনো হয়তো তা সম্ভব। কিন্তু যতদিন ইরানের সরকার ক্ষমতায় আছে, ততদিন এই কর্মসূচি পুনর্গঠন চলবে বলেই মনে করা হচ্ছে।

বিশ্লেষক জাস্টিন ব্রঙ্কসহ অনেকে মনে করেন—ইরানের পরমাণু কর্মসূচি সম্পূর্ণ ধ্বংস করা সামরিকভাবে প্রায় অসম্ভব। ইসরায়েলের বর্তমান সক্ষমতা দিয়ে হয়তো সময়ক্ষেপণ সম্ভব, কিন্তু দীর্ঘমেয়াদে এই কর্মসূচিকে নিশ্চিহ্ন করা খুবই কঠিন।

এমআরএইচ

আরও পড়ুন