ঢাকা, শনিবার, ০২ আগস্ট ২০২৫

১৮ শ্রাবণ ১৪৩২, ০৭ সফর ১৪৪৭

কর্মস্থলে স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা গবেষণায় নস্ট্রির আত্মপ্রকাশ

দেশের প্রথম পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা বিষয়ক গবেষণা সম্মেলন

রাজশাহী প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১৮:০০, ২ আগস্ট ২০২৫

দেশের প্রথম পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা বিষয়ক গবেষণা সম্মেলন

ছবি: ঢাকা এক্সপ্রেস

শ্রমিকদের পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা সুরক্ষার যাত্রায় আজ একটি ঐতিহাসিক মাইলফলক স্পর্শ করলো বাংলাদেশ। রাজশাহীতে অবস্থিত ন্যাশনাল অক্যুপেশনাল সেইফটি অ্যান্ড হেলথ ট্রেনিং অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউট (নস্ট্রি)-এর সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত হলো দেশের প্রথম পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা (ওএসএইচ) বিষয়ক গবেষণা সম্মেলন।

সম্মেলনের আয়োজন করে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর (ডাইফ), কারিগরি ও আর্থিক সহায়তা প্রদান করেছে ইন্টারন্যাশনাল লেবার অর্গানাইজেশন (আইএলও)।

‘Safe Work, Sustainable Future: Bridging Research & Practice’-এই প্রতিপাদ্যে আয়োজিত সম্মেলনটি দেশের সকল শ্রমখাত জুড়ে নিরাপদ ও টেকসই কর্মপরিবেশ গঠনের পথে একটি ঐতিহাসিক পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের মাননীয় উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন। তিনি বলেন, শ্রমখাতের উন্নয়নে আমাদেরকে সকল স্টেকহোল্ডারদের সহযোগিতা নিয়ে কাজ করতে হবে। প্রত্যেক শ্রমিকের অধিকার রয়েছে শোভন কর্মপরিবেশে কাজ করার এবং দিনশেষে নিরাপদে ও সুস্থভাবে ঘরে ফেরার। আমাদেরকে তা নিশ্চিত করতে হবে। আন্তর্জাতিক মানের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে দেশের শ্রমখাতের উন্নয়নে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং গবেষণাভিত্তিক নীতিনির্ধারণে কাজ করে যাচ্ছে সরকার।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব জনাব এ এইচ এম শফিকুজ্জামান। তিনি বলেন, ‘বর্তমানে বিশ্বের সেরা ১০টি গ্রিন ফ্যাক্টরির মধ্যে ৮টিই বাংলাদেশে অবস্থিত। এটি বাংলাদেশের বিরাট অর্জন। শ্রমখাতের নানা সমস্যা ও সম্ভাবনা নিয়ে নস্ট্রি গবেষণা করবে এবং এই গবেষণা তথ্য থেকে শ্রম খাতের কল্যাণে নীতি ও কর্মপন্থা নির্ধারণ করা হবে। এই প্রতিষ্ঠান কেবল বাংলাদেশের শ্রমখাতেই অবদান রাখবে তা নয় বরং এশিয়ায় শ্রমবিষয়ে তথ্য ও গবেষণার একটি কেন্দ্র হবে এই প্রতিষ্ঠান।

সম্মেলনের সভাপতিত্ব করেন কারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের মহাপরিদর্শক (অতিরিক্ত সচিব) জনাব ওমর মো. ইমরুল মহসিন। তিনি বলেন, আমরা এমন একটি সময়ে অবস্থান করছি, যেখানে গবেষণাই হতে পারে কার্যকর নীতি ও প্রয়োগের পথপ্রদর্শক। গার্মেন্টস, ট্যানারি, জাহাজ ভাঙা শিল্প ও নির্মাণখাতসহ সকল ফরমাল ও ইনফরমাল সেক্টরে ঝুঁকি হ্রাসে নস্ট্রির বৈজ্ঞানিক গবেষণা ও লক্ষ্যভিত্তিক প্রশিক্ষণ দেশের শ্রমখাতের উন্নয়নে অবদান রাখবে।

আইএলও'র টেকনিক্যাল স্পেশালিস্ট (লেবার ইন্সপেকশন অ্যান্ড ওএসএইচ) মি. রন জনসন বলেন, ‘বাংলাদেশের শিল্পখাতে দ্রুত প্রবৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে ওএসএইচ ব্যবস্থার উন্নয়ন অপরিহার্য। কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনা প্রতিরোধভিত্তিক সংস্কৃতি গড়ে তোলার মাধ্যমে শ্রমিকদের সুরক্ষা ও টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে আইএলও বাংলাদেশকে সহায়তা দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

সম্মেলনে গবেষক, শিক্ষাবিদ, শ্রমিক নেতৃবৃন্দ, শিল্প প্রতিষ্ঠান মালিক, সরকারি কর্মকর্তা ও উন্নয়ন সহযোগীসহ ২০০ জনেরও বেশি অংশগ্রহণকারী উপস্থিত ছিলেন। এতে ১১টি রিভিউকৃত গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপিত হয় এবং ওএসএইচ খাতের মূল চ্যালেঞ্জসমূহ ও উদ্ভাবনী সমাধান নিয়ে বিশ্লেষণধর্মী প্যানেল আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।

কনফারেন্সে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন শ্রম সংস্কার কমিশনের প্রধান সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহম্মদ, সমন্বয় ও সংস্কার বিভাগের সচিব জাহেদা পারভিন, লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) প্রফেসর ড. রেহানা খানমসহ শ্রমখাত সংশ্লিষ্ট অংশীজনবৃন্দ।

ঢাকা এক্সপ্রেস/ইউকে

এ সম্পর্কিত খবর

আরও পড়ুন