ঢাকা, শনিবার, ০২ আগস্ট ২০২৫

১৮ শ্রাবণ ১৪৩২, ০৭ সফর ১৪৪৭

সারা দেশে বন নিধনের জন্য বন বিভাগ কম দায়ী নয়: পার্বত্য উপদেষ্টা

রাঙ্গামাটি প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১৬:৪০, ২ আগস্ট ২০২৫

সারা দেশে বন নিধনের জন্য বন বিভাগ কম দায়ী নয়: পার্বত্য উপদেষ্টা

ছবি: ঢাকা এক্সপ্রেস

পার্বত্য চট্টগ্রাসহ সারা দেশে বন নিধনের জন্য বন বিভাগ কোনও অংশে কম দায়ী নয় মন্তব্য করে পার্বত্য উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা বলেছেন, কেন এমন হয়েছে সেটা ভাবতে হবে। সেটা থেকে উত্তরণের জন্য দায়িত্ব নিতে হবে। মাতামুহুরী নদী হয়েছে মাতামুহুরী রিজার্ভ ফরেস্ট থেকে, সাঙ্গু রিজার্ভ ফরেস্ট থেকে সাঙ্গু নদী সৃষ্টি হয়েছে, শুধুমাত্র কর্ণফুলী নদী হয়েছে ভারতের লুসাই পাহাড় থেকে। আমাদের খুব বেশি নদী ভারত থেকে আসে নাই, বেশিরভাগ নদী সেলফ ক্রিয়েটেড। তাই বনগুলো বাঁচাতে হবে। শনিবার সকালে রাঙামাটিতে সপ্তাহব্যাপী বৃক্ষ মেলা উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পার্বত্য উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা এসব কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে তিনি আরো বলেন, কোন গাছ কোন প্রকৃতির এবং অর্থনৈতিকভাবে যেসব গাছ আছে তা নিয়ে একটি সার্ভে করা দরকার। কোনো গাছের বিকল্প নির্ধারণ না করে বন্ধ করা ঠিক নয়। সেগুন গাছ বন্ধ করা হয়তো বনবিভাগ বলবে, জুমচাষ বন্ধের দাবিও করতে পারে, তবে সেটা কোনোভাবেই সঠিক হবে না। শুধু আম, কাঁঠাল নয়, প্রাকৃতিক ভারসাম্য রাখার জন্য কি কি গাছ লাগানো যায়, তা নির্ধারণ করা উচিত বলে তিনি জানান।

পরিবেশ বিষয়ে পার্বত্য অঞ্চলের আদিকাল থেকে বসবাসকারীরা অনেক বেশি সচেতন দাবি করে উপদেষ্টা বলেন, পাহাড়ধস এসব মানুষের বাড়িঘরে হয় না। প্রকৃতিকে যারা চিনেন না, তারাই পাহাড়ধসের শিকার হন মন্তব্য করেছেন পার্বত্য উপদেষ্টা।

‘পরিকল্পিত বনায়ন করি, সবুজ বাংলাদেশ গড়ি’ এই প্রতিপাদ্যে শনিবার সকালে রাঙামাটিতে শুরু হয়েছে সাত দিনব্যাপী বৃক্ষমেলা। বৃক্ষ মেলা উপলক্ষে সকালে রাঙামাটি জেলা প্রশাসক কার্যালয় থেকে একটি র‌্যালি শুরু হয়ে শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে জিমনেশিয়ামে মেলা প্রাঙ্গণে গিয়ে শেষ হয়। এ সময় আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

রাঙামাটি জেলা প্রশাসন ও বন বিভাগের আয়োজনে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে রাঙামাটি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিব উল্লাহর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এম এ আকমল হোসেন আজাদ, পুলিশ সুপার এস এম ফরহাদ হোসেন, সিভিল সার্জন নুয়েন খীসা, পার্বত্য চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা এসএম সাজ্জাদ হোসেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম উত্তর বন বিভাগের রাঙামাটি সদর রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. কামরুল ইসলাম।

এ সময় বক্তারা বলেন, প্রতিনিয়ত নির্বিচারে গাছ কাটা হচ্ছে, বন ধ্বংস করা হচ্ছে। অথচ এসব গাছ, বন মানবজাতির জন্য খাবার তৈরি করছে। বিপরীতে আমরা কিছু তৈরি করতে পারি না। ঔষধি গাছগুলো মানুষের ঔষুধ তৈরিতে ব্যবহার হচ্ছে। উপকারী বন্ধু গাছকে অবহেলা করলে মানবজাতি টিকে থাকতে পারবে না। তাই প্রত্যেকের অন্তত প্রতি বছর তিনটি গাছ লাগানো উচিত। একই সাথে সেইসব গাছের রক্ষণাবেক্ষণ, যত্নও নেওয়া উচিত। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কথা চিন্তা করে গাছ লাগানোর ব্যাপারে আমাদের সচেতন হওয়া দরকার।

পরে জেলার বিভিন্ন বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মাঝে গাছের চারা বিতরণ করেন উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা। মেলা উপলক্ষে বিভিন্ন জাতের ফলদ, বনজ ও ঔষুধি চারা বিক্রি করা হচ্ছে।

ঢাকা এক্সপ্রেস/ইউকে

এ সম্পর্কিত খবর

আরও পড়ুন