শিরোনাম
লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৭:১২, ৮ মে ২০২৫ | আপডেট: ১৭:৪৬, ৮ মে ২০২৫
দগ্ধ নুরুল আলম (৪৫)। ছবি: ঢাকা এক্সপ্রেস
এদিকে, স্থানীয়রা দগ্ধ অবস্থায় রহিমা ও আলমকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। সদর হাসপাতালে তাদেরকে ভর্তি রেখে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য সদর হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসক আরমান হোসেন তাদেরকে ঢাকা মেডিকেল কলেজের বার্ণ ইউনিটে রেফার করেছেন। রহিমার শরীরের প্রায় ৫০ শতাংশ ও আলমের পা-হাত-বুকসহ শরীরের ৩০ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে।
দগ্ধ রহিমা উত্তর চরআবাবিল ইউনিয়নের গাইয়ারচর এলাকার আব্দুল হামিদের মেয়ে ও আলম একই ইউনিয়নের চরপক্ষী গ্রামে আব্দুর মান্নানের ছেলে। আলম পেশায় ব্যবসায়ী।
নুর আলমের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কয়েক বছর আগে আলম একই ইউনিয়নের গাইয়ারচর এলাকার রহিমাকে বিয়ে করেন। এটি দুইজনেরই দ্বিতীয় বিয়ে ছিলো। বিয়ের পর প্রায় ৯ লাখ টাকা ধার-দেনা করে আলম চরে দোকানঘর নির্মাণ করে ব্যবসা করে আসছেন।
সেই সুযোগে দক্ষিণ চরবংশী ইউনিয়নের চরকাছিয়া গ্রামের কানিবগার চরের কাদির সিকদারের সঙ্গে রহিমা পরকিয়া প্রেমে জড়িয়ে পড়েন। ২০২৪ সালে ২২ জুলাই দোকান থেকে এসে তিনি কাদির ও রহিমাকে একা ঘরে দেখতে পান।
এ ঘটনায় আলম রায়পুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগসহ স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিদেরকেও জানান। কিন্তু ঘটনার কোনো সুরাহা হয়নি। এর মধ্যে রহিমা তার পরকিয়া প্রেমিকের সঙ্গে অবাধে মেলামেশা শুরু করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে আলম। এ ঘটনায় আলম স্ত্রী ও নিজের শরীরে আগুন লাগিয়ে দেন। পরে স্থানীয়রা আগুন নিভিয়ে তাদেরকে হাসপাতালে ভর্তি করেন।
এ প্রসঙ্গে নুর আলম বলেন, ‘কোথাও কোনো বিচার না পেয়ে প্রচন্ড রাগ হয়। এতে পেট্টোল কিনে বাড়িতে এসে দেখি কাদিরসহ তার লোকজন বসে আছে। এ নিয়ে ঘরে ঢুকে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে রাগে ক্ষোভে পেট্টোল ঢেলে রহিমার গায়ে আগুন লাগিয়ে দিয়েছি। নিজের গায়েও আগুন লাগিয়েছি।’
এ ঘটনায় কথা বলা যায়নি রহিমার সঙ্গে। তবে তার ভাগ্নি লুবনা আক্তার বলেন, ‘পেট্টোল ঢেলে আমার খালার শরীরে আলম আগুন লাগিয়ে দেয়।’
এ সময় ধস্তাধস্তি করায় খালার শরীরের আগুন আলমের গায়েও লাগে। তবে কি কারণে আগুন লাগানো হয়েছে তা বলেতে পারেনি সে।
সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. অরুপ পাল বলেন, ‘দগ্ধ অবস্থায় দুইজন রোগীকে হাসপাতালে আনা হয়েছে। এর মধ্যে নারীর শরীরের প্রায় ৫০ শতাংশ ও পুরুষের প্রায় ৩০ শতাংশ দগ্ধ হয়। তাদেরকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।’
রায়পুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নিজাম উদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, ‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এর আগেই দগ্ধদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতালেও পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
ঢাকা এক্সপ্রেস/এনএ