শিরোনাম
মৌলভীবাজার প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৯:৩৪, ৮ মে ২০২৫
মৌলভীবাজারে দেশের দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক চা নিলাম কেন্দ্রের অস্থায়ী কার্যালয়ে দিনব্যাপী চা নিলাম অনুষ্ঠিত হয়। ছবি: ঢাকা এক্সপ্রেস
এতে অংশ নেয় পাঁচটি ব্রোকার্স হাউজ। এগুলো হলো, শ্রীমঙ্গল টি ব্রোকার্স হাউজ, জালালাবাদ টি ব্রোকার্স, রুপসী বাংলা টি ব্রোকার্স, জি এস ব্রোকার্স ও সোনার বাংলা টি ব্রোকার্স।
নিলাম পরিচালনা কর্তৃপক্ষ জানায়, বছরের প্রথম চা নিলামে বিপুল পরিমাণ চা বিক্রির অফার করা হলেও বিক্রি হয়েছে অর্ধেকের বেশি চা। মোট এক লাখ ১৪ হাজার ৮৩৮ কেজি চা তোলা হয় নিলামে, যার আনুমানিক বাজারমূল্য ছিল প্রায় দুই কোটি ২৯ লাখ ৬৭ হাজার টাকা।
তারা আরও জানায়, নিলামে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে গ্রিনলিফ চা বাগানের গ্রিন টি ছিলো সবচেয়ে মূল্যবান। এ বাগানের উৎপাদিত প্রিমিয়াম কোয়ালিটির গ্রিন টি বিক্রি হয়েছে রেকর্ড দাম পনেরশ’ টাকায়।
এ ছাড়া, তেলিয়াপাড়া চা বাগানের ব্ল্যাক টি বিক্রি হয়েছে সর্বোচ্চ ৪০০ টাকা কেজি দরে। ব্ল্যাক টি’র সর্বনিম্ন দাম ছিলো ১৬০ টাকা কেজি।
যা এই মৌসুমের জন্য সন্তোষজনক বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
চা বাগান মালিক ও ব্রোকার্স প্রতিনিধিরা জানান, দীর্ঘ খরার পর পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাতের কারণে চায়ের গুণগত মান উন্নত হয়েছে। এর ফলে ক্রেতাদের মধ্যে আস্থা বেড়েছে, যা নিলামে দর ও বিক্রির পরিমাণ বাড়াতে সাহায্য করেছে। আবহাওয়ার অনুকূলে থাকলে চায়ের মান বাড়ার সাথে সাথে চাহিদাও বাড়বে বলে তাদের ধারণা।
সংশ্লিষ্টরা আরও জানান, চলতি চা মৌসুম জুড়ে ৪৮ টি নিলামের পরিকল্পনা রয়েছে তাদের। মৌসুমের শুরুতেই চায়ের গুণমান, চাহিদা ও বিক্রির পরিমাণ বাড়ায় তারা মনে করছেন, এটি চা শিল্পের জন্য ইতিবাচক বার্তা বহন করবে।
শ্রীমঙ্গল সোনার বাংলা টি বোকার্সের পরিচালক মো: শহীদ আহমদ বলেন, ‘মৌসুমের প্রথম নিলামে যে পরিমান চা অফার করা হয়েছিলো তার প্রায় ৭০ শতাংশ বিক্রি হয়েছে। তবে চট্টগ্রামের ক্রেতা-বিক্রেতারা এ নিলামে অংশগ্রহণ করলে চা বিক্রি আরও বাড়তো।’
চলতি চা মৌসুমের প্রতি মাসে ৪ টি নিলাম অনুষ্ঠিত হবে জানিয়ে শ্রীমঙ্গল চা পাতা ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মো: চেরাগ আলী সকল বায়াররাকে চা নিলামে অংশগ্রহণ করার আহ্বান জানান।
চা নিলাম কেন্দ্রের সভাপতি ও এমআর খাঁন এবং চা বাগানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো: সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘তীব্র খরা ও প্রতিকূল আবহাওয়া থাকায় চায়ের গুণগত মান নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা ছিলো, কিন্তু সম্প্রতি ভালো বৃষ্টিপাত হওয়ায় চা উৎপাদন ভালো হচ্ছে। আবহাওয়া অনুকূল এবং চায়ের গুনগত মান ঠিক থাকলে এবার চায়ের ভালো দাম পাওয়া যাবে।’
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ৮ ডিসেম্বর শ্রীমঙ্গলে দেশের দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক চা নিলাম কেন্দ্রের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়। এরপর ২০১৮ সালের ১৪ মে প্রথমবারের মতো এখানে চা নিলাম অনুষ্ঠিত হয়। তখন থেকেই এই কেন্দ্রে নিয়মিতভাবে চা নিলাম পরিচালিত হয়ে আসছে। বিগত চা অর্থবছরের শেষ নিলাম পর্যন্ত শ্রীমঙ্গলে মোট ১৩ লাখ ২৯ হাজার ১২১ কেজি চা অফার করা হয়। এর মধ্যে বিক্রি হয় ১১ লাখ ৪৮ হাজার ৮৯৩ কেজি। বিক্রি করা চায়ের গড় মূল্য ছিল ১৭৫ টাকা প্রতি কেজি।
ঢাকা এক্সপ্রেস/এনএ