শিরোনাম
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২১:৩৫, ২৯ মে ২০২৫
আকাশ চৌধুরীর বিরুদ্ধে এর আগেও একাধিক সহিংসতার অভিযোগ রয়েছে। গত বছর নগরীর মুরাদপুরে একটি ধর্মীয় কর্মসূচিতে পুলিশের সামনেই লাঠি হাতে হামলা চালিয়ে তিনি ভাইরাল হয়েছিলেন। তাঁর রাজনৈতিক পরিচয় নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই বিতর্ক থাকলেও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ দেখা যায়নি।
ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের কর্মসূচিতে ‘অ্যান্টি শাহবাগ মুভমেন্ট’-এর ব্যানারে সংঘবদ্ধ একটি দল হঠাৎ হামলা চালায়। নেতা-কর্মীরা যখন নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য চট্টগ্রাম ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি সংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছিলেন, তখন আকাশ চৌধুরী পিছন থেকে এসে এক নারীকে লাথি মারেন। এরপর আরও একজনকে লাথি দিয়ে ফেলে দেন তিনি।
হামলায় অন্তত ৮-১০ জন আহত হন, যাঁদের মধ্যে তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। গুরুতর আহতদের মধ্যে রয়েছেন সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট চট্টগ্রাম মহানগরের সভাপতি রিপা মজুমদার, গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিল চট্টগ্রাম জেলা সাধারণ সম্পাদক শ্রীকান্ত বিশ্বাস সিকু এবং অর্থ সম্পাদক সুদীপ্ত গুহ।
সংবাদ সম্মেলনে গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি এ্যানি চৌধুরী অভিযোগ করেন, ‘শিবির-সংশ্লিষ্ট’ একটি সংগঠিত দল পরিকল্পিতভাবে হামলা চালিয়েছে। তিনি জানান, যিনি তাঁকে লাথি মেরেছেন, তিনি আকাশ চৌধুরী—যাঁর পরিচিতি ছাত্রশিবিরের সাবেক কর্মী ও জামায়াত নেতা শাহজাহান চৌধুরীর অনুসারী হিসেবে।
তবে ছাত্রশিবিরের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, আকাশ এখন আর তাঁদের সংগঠনের সঙ্গে জড়িত নন এবং তাঁর ব্যক্তিগত আচরণের দায় শিবির নেবে না।
হামলার সময় ঘটনাস্থলে পুলিশ উপস্থিত থাকলেও তারা হামলাকারীদের ঠেকাতে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেয়নি বলে অভিযোগ করেছেন জোটের নেতারা। ঘটনার পর কোতোয়ালি থানা জানিয়েছে, পুলিশ বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেছে এবং দুইজনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে। তবে আকাশ চৌধুরী এখনও গ্রেপ্তারের বাইরে রয়েছেন।
এই হামলার সূত্রপাত জামায়াত নেতা এ টি এম আজহারুল ইসলামের মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় উচ্চ আদালতের খালাসের প্রতিবাদ থেকে। এর জের ধরে ২৭ মে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে এক শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে হামলার প্রতিবাদে ২৮ মে চট্টগ্রামে নতুন করে কর্মসূচি দেয় গণতান্ত্রিক ছাত্র জোট।
সংবাদ সম্মেলনে হামলায় জড়িত হিসেবে যাঁদের নাম প্রকাশ করা হয়েছে, তাঁরা হলেন: আবরার হোসাইন রিয়াদ, আকাশ চৌধুরী, তৌকির ও আসফার। তাঁদের সবাইকে জামায়াত-শিবির সংশ্লিষ্ট বলে দাবি করা হয়েছে।
জোটের নেত্রী এ্যানি চৌধুরী বলেন, “এই হামলা শুধু একটি রাজনৈতিক কর্মসূচির ওপর নয়, এটি বাংলাদেশের বিচারব্যবস্থা, গণতন্ত্র এবং নারীর নিরাপত্তার ওপরও সরাসরি আঘাত।” তিনি দাবি করেন, ‘শুধু রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ নয়, নারী কর্মীদেরকেও গালিগালাজ, শারীরিক লাঞ্ছনা ও হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে—যা অত্যন্ত নিন্দনীয়।’
ঢাকা এক্সপ্রেস/ এমআরএইচ