শিরোনাম
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৫:১২, ২৭ মে ২০২৫
সূত্রটি জানিয়েছে, অভিযান শেষে সুব্রতকে ঢাকায় নেওয়া হবে এবং পরে একটি সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে অভিযানের বিস্তারিত জানানো হবে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ভোর ৫টা থেকে সকাল ৮টা পর্যন্ত সেনাবাহিনীর পাঁচটি যান নিয়ে সোনার বাংলা মসজিদের পাশে অবস্থিত একটি তিনতলা বাড়ি ঘিরে রাখা হয়। বাড়িটির মালিক স্থানীয় মীর মহিউদ্দিন। তার বাড়ির নিচতলায় গত কয়েকদিন ধরে এক অপরিচিত দাড়িওয়ালা ব্যক্তিকে থাকতে দেখা যাচ্ছিল, যিনি দিনে একবার বাইরে বের হতেন।
সেনা সদস্যরা ওই বাড়ির নিচতলায় অভিযান চালিয়ে শিক্ষার্থীদের নিরাপদ দূরত্বে সরিয়ে রাখেন। একজন শিক্ষার্থী বলেন, “আমাদের নির্দিষ্ট দুটি রুমে বসিয়ে রাখেন সেনাবাহিনীর সদস্যরা। তাঁরা বারবার বলছিলেন— ‘তোমাদের কোনো ভয় নেই।’”
সকাল ৮টার দিকে একটি কালো মাইক্রোবাসে করে সুব্রত বাইন ও তার এক সহযোগীকে হাতকড়া ও রশি বাঁধা অবস্থায় নিয়ে যাওয়া হয়।
এ অভিযান সম্পর্কে জানতে চাইলে কুষ্টিয়া জেলা পুলিশের মুখপাত্র ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) ফয়সাল মাহমুদ বলেন, ‘এখানে আমাদের কোনো অভিযান ছিল না। অন্য কোনো বাহিনী করেছে কি না জানি না, জানার চেষ্টা করছি।’
এ বক্তব্য থেকে ধারণা করা যায়, সেনাবাহিনীর এই অভিযান ছিল সম্পূর্ণ গোপন এবং স্থানীয় প্রশাসনকে অগ্রিম জানানো হয়নি।
সরকারি একটি গোয়েন্দা সূত্র জানায়, সাম্প্রতিক সময়ে রাজধানীতে সংঘটিত সন্ত্রাসী কার্যক্রমের সঙ্গে পলাতক শীর্ষ সন্ত্রাসীদের পুনরায় সক্রিয় হয়ে ওঠা সম্পর্কিত কিছু তথ্য পাওয়া গেছে। সুব্রত বাইন ছিলেন সেসব ‘ছায়াসন্ত্রাসী’ নেতাদের অন্যতম।
একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘২০০১ সালের পর কিছু বাংলাদেশি শীর্ষ সন্ত্রাসীকে ভারতে রাজনৈতিক আশ্রয় দেওয়া হয়েছিল। সরকারের পরিবর্তনের পর এদের অনেকে দেশে ফিরেছেন। এদের সংগঠিত হয়ে আবারও রাজধানীসহ বিভিন্ন এলাকায় অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড চালানোর তথ্য আমরা পেয়েছি।’ তিনি আরও বলেন, “সুব্রত বাইনকে আটকের মাধ্যমে সেই সন্ত্রাসী চক্রের নেটওয়ার্ক ভেঙে দেওয়া সম্ভব হবে।”
সুব্রত বাইন ৯০-এর দশকের শেষ থেকে ২০০০-এর দশকের শুরুতে ঢাকার একাধিক খুন, চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে পরিচিত। তিনি একাধিকবার গ্রেপ্তার এড়িয়ে দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে গিয়েছিলেন। বিভিন্ন সময়ে তার নামে গ্রেফতারি পরোয়ানা থাকলেও তাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না।
অনেক বছর ভারত ও নেপালে আত্মগোপনে ছিলেন তিনি। দীর্ঘদিন পর আবার দেশে ফিরে সংগঠিত হচ্ছিলেন বলে ধারণা গোয়েন্দাদের।
সরকারের পক্ষ থেকে একাধিক সূত্র জানিয়েছে, অভিযানে অর্জিত তথ্য ও পরিকল্পনা নিয়ে খুব শিগগিরই সংবাদ সম্মেলন করা হবে। সেই সম্মেলনে গ্রেপ্তার, উদ্ধারকৃত অস্ত্র বা গুরুত্বপূর্ণ আলামতের বিষয়েও জানানো হতে পারে।
ঢাকা এক্সপ্রেস/ এমআরএইচ