শিরোনাম
বিনোদন ডেস্ক
প্রকাশ: ১০:৪৫, ১৩ মে ২০২৫
ছবি: সংগৃহীত
এতে সম্মানসূচক স্বর্ণপাম দেওয়া হবে কিংবদন্তি আমেরিকান অভিনেতা ও নির্মাতা রবার্ট ডি নিরোকে। যিনি ১৪ বছর আগে ২০১১ সালে কানের জুরিপ্রধানের দায়িত্ব পালন করেছিলেন। বুধবার আবার একটি মাস্টারক্লাসও নেবেন তিনি।
এবার কানের উদ্বোধনী ও সমাপনী আসর সঞ্চালনায় রয়েছেন ফরাসি অভিনেতা লওরা লাফি।
উপস্থিত থাকবেন উৎসবের সভাপতি ইরিস নোব্লোক ও উৎসব পরিচালক থিয়েরি ফ্রেমোঁ। বরাবরের মতো বিশেষ অতিথিদের বরণ করে নেবেন এবারের আসরের মূল প্রতিযোগিতা বিভাগের প্রধান বিচারক জুলিয়েট বিনোশ। কানের ইতিহাসে চতুর্থ নারী হিসেবে জুরিপ্রধানের দায়িত্ব পালন করছেন তিনি।
তার আগে এ নজির গড়েছিলেন যথাক্রমে অলিভিয়া দে হাভিল্যান্ড, সোফিয়া লরেন ও গ্রেটা গারউইগ।
উদ্বোধনী ছবি হিসেবে প্রদর্শিত হবে আমেলি বনিনের কমেডি-ড্রামা ‘পাতি আঁ জো’। উদ্বোধনী আয়োজনে লাল গালিচায় হাঁটবেন আমেরিকান মডেল বেলা হাদিদ। সুইস ঘড়ির ব্র্যান্ড ‘চোপার্ড’-এর প্রতিনিধি হয়ে অংশ নেবেন তিনি।
কান নিয়ে বাংলাদেশে মাতামাতি হয় সব সময়। ২০২১ সালে আঁ সার্তে রিগায় ‘রেহানা মরিয়ম নূর’সিলেকশন হয়। তবে আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ সাদের ছবিটি পুরস্কার জিততে পারেনি। এবার সত্যিকার অর্থেই কান নিয়ে মাতামাতির সুযোগ তৈরি হয়েছে বাংলাদেশের।
কারণ প্রথমবার স্বর্ণপামের লড়াইয়ে বাংলাদেশ। কানের স্বল্পদৈর্ঘ্য বিভাগের মূল প্রতিযোগিতায় জায়গা করে নিয়েছে আদনান আল রাজীবের ‘আলী’। সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের ব্যবস্থাপনায় আদনান ও তার সতীর্থরা উপস্থিত থাকবেন উৎসবে। ছবিটি প্রদর্শিত হবে ২৩ মে সকাল ১১টায় (সাল দুবুসি) ও দুপুর ১টায় (সাল বাজিন)। এ ছাড়া কানের বাণিজ্যিক শাখা মার্শে দ্যু ফিল্মে অংশ নেবে এবাদুর রহমানের ‘বাঙালি বিলাস’।
এবার মূল প্রতিযোগিতায় জায়গা করে নিয়েছে ২২টি ছবি। এ ছাড়া আঁ সার্তে রিগায় ২০টি, আউট অব কম্পিটিশনে সাতটি, মিডনাইট স্ক্রিনিংয়ে পাঁচটি, কান প্রিমিয়ারে ১০টি এবং স্পেশাল স্ক্রিনিংয়ে নয়টি ছবি প্রদর্শিত হবে। এবার মূল প্রতিযোগিতায় কোনো কোরীয় ছবি জায়গা পায়নি। গত এক যুগে এবারই এমনটা ঘটল। মূল প্রতিযোগিতায় এবার বিশেষ নজরে থাকবে ‘জুন মেখ’ (দ্য ইয়ং মাদারস হোম)। বেলজিয়ামের দুই সহোদর লুক দারদেন জ্যঁ-পিয়ের দারদেন বানিয়েছেন ছবিটি। এ নিয়ে দশমবার স্বর্ণপামের লড়াইয়ে ভাতৃদ্বয়। এর আগে ১৯৯৯ ও ২০০৫-এ দুইবার স্বর্ণপাম জিতেছেন তাঁরা। প্রতিযোগিতায় এশিয়ার একমাত্র প্রতিনিধি জাপানের চিয়ে হায়াকাওয়া। তিনি থাকবেন ‘রেনোয়া’ ছবিটি নিয়ে। প্রতিযোগিতার বাইরে হলেও ‘হাইয়েস্ট টু লোয়েস্ট’ নিয়ে থাকবে সবার বিশেষ আগ্রহ। কারণ এটি নির্মাণ করেছেন স্পাইক লি। ছবিটিকে বলা হচ্ছে, জাপানের কিংবদন্তি নির্মাতা আকিরা কুরোসাওয়ার ‘হাই অ্যান্ড লো’র (১৯৬৩) ইংরেজি পুনর্ব্যাখ্যা। এতে আছেন অস্কারজয়ী অভিনেতা ডেনজেল ওয়াশিংটন। তিনিও হাজির হবেন কান সৈকতে।
২০১৫ সালে কানের আঁ সার্তে রিগায় অংশ নিয়ে পুরস্কৃত হয়েছিল ভারতের নীরাজ গাইওয়ানের ‘মাসান’। এক দশক পর নতুন ছবি ‘হোমবাউন্ড’ নিয়ে পৌঁছে গেলেন একই বিভাগে। এ ছবিতে আছেন তিন তরুণ অভিনয়শিল্পী ইশান খাট্টার, জাহ্নবী কাপুর ও বিশাল জেতোয়া। গত বছর অবশ্য কানের মূল প্রতিযোগিতায় ছিল ভারতের পায়েল কাপাডিয়ার ‘অল উই ইমাজিন অ্যাজ লাইট’। পুরস্কারও জিতেছিল। তবে এবার মূল প্রতিযোগিতায় দেশটির কোনো ছবির ঠাঁই হয়নি। এশিয়ার আরেক প্রতিনিধি হিসেবে আঁ সার্তে রিগায় জায়গা করে নিয়েছে জাপানের কেই ইশিকাওয়ার ছবি ‘আ পেল ভিউ অব হিলস’।
গত বছর কানের মূল প্রতিযোগিতার জুরি বোর্ডে নয় সদস্যের পাঁচজনই ছিলেন নারী। একই চিত্র এই আসরেও। এবারো প্রধান বিচারকের আসনে নারী—ফরাসী নির্মাতা জুলিয়েট বিনোশ। বাকি চারজন হলেন আমেরিকান নির্মাতা-অভিনেত্রী হ্যালি বেরি, ভারতীয় নির্মাতা পায়েল কাপাডিয়া, ইতালীয় অভিনেত্রী আলবা ররওয়াকের ও ফরাসি-মরোক্কান লেখক লেইলা স্লিমানি। পুরুষ বিচারকদের মধ্যে আছেন কঙ্গোলিয় নির্মাতা-প্রযোজক দিয়েদো হামাদি, কোরীয় নির্মাতা হং সাংসু, মেক্সিকান নির্মাতা-প্রযোজক কার্লোস রেগাডাস ও আমেরিকান অভিনেতা জেরেমি স্ট্রং।
প্রতি বছরই কানের একটি অফিশিয়াল পোস্টার রাখা হয়। যেটি উৎসবের মূল ভবনের সামনে টানানো থাকে। এবারো ব্যতিক্রম ঘটেনি, তবে ঘটেছে বিরল ঘটনা। প্রথমবার জোড়া পোস্টার বাছাই করেছে কর্তৃপক্ষ। ফরাসি নির্মাতা ক্লদ লোলুশের কালজয়ী ছবি ‘আ ম্যান অ্যান্ড আ ওম্যান’-এর (১৯৬৬) দৃশ্য থেকে বানানো হয়েছে পোস্টার। এ দৃশ্যে রয়েছেন ফরাসি অভিনয়শিল্পী আনুক এমে ও জ্যঁ-লুই ত্রাতিনোঁ। দুটি পোস্টার উৎসব ভবনের বিভিন্ন পাশে টানানো হয়েছে। উল্লেখ্য, মুক্তির বছর কান উৎসবে স্বর্ণপাম জিতেছিল ‘আ ম্যান অ্যান্ড আ ওম্যান’। পরের বছর গল্প ও চিত্রনাট্য এবং সেরা বিদেশি ভাষার অস্কার জিতেছিল।
ঢাকা এক্সপ্রেস/আরইউ