ঢাকা, শুক্রবার, ০৮ আগস্ট ২০২৫

২৪ শ্রাবণ ১৪৩২, ১৩ সফর ১৪৪৭

গাজা দখলের পরিকল্পনায় ইসরায়েলি মন্ত্রিসভার সম্মতি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ: ১২:০৯, ৮ আগস্ট ২০২৫

গাজা দখলের পরিকল্পনায় ইসরায়েলি মন্ত্রিসভার সম্মতি

ইসরায়েলের পতাকা, ছবি: সংগৃহীত

গাজা উপত্যকা পুরোপুরি দখলের লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর প্রস্তাবিত সামরিক পরিকল্পনা আনুষ্ঠানিক অনুমোদন দিয়েছে ইসরায়েলের নিরাপত্তা মন্ত্রিসভা। শুক্রবার (৮ আগস্ট) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।

ইসরায়েলি দৈনিক টাইমস অব ইসরাইল-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, নিরাপত্তা মন্ত্রিসভা শুধু গাজা দখলের সামরিক পরিকল্পনাতেই সম্মতি দেয়নি, বরং যুদ্ধক্ষেত্রের বাইরে থাকা বেসামরিক ফিলিস্তিনিদের জন্য মানবিক সহায়তা দেওয়ার সিদ্ধান্তও নিয়েছে। মন্ত্রিসভা হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি চুক্তির বিনিময়ে পাঁচটি শর্তের একটি তালিকা প্রণয়ন করেছে, যা অধিকাংশ সদস্য সমর্থন করেছেন।

এই শর্তগুলো হলো—

১. হামাসকে সম্পূর্ণ নিরস্ত্রীকরণ।

২. হামাসের হাতে থাকা ৫০ জন জিম্মিকে মুক্ত করা, যাদের মধ্যে প্রায় ২০ জন জীবিত বলে ধারণা।

৩. গাজা উপত্যকার পূর্ণ নিরস্ত্রীকরণ।

৪. গাজায় ইসরায়েলের নিরাপত্তা নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা।

৫. গাজার প্রশাসন হামাস বা ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের হাতে না দিয়ে বিকল্প কোনো বেসামরিক সরকারের কাছে হস্তান্তর।

এর আগে, বৃহস্পতিবার মার্কিন সংবাদমাধ্যম ফক্স নিউজ–কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নেতানিয়াহু বলেন, চলমান সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান শেষ হলে গাজার শাসন এমন এক বেসামরিক প্রশাসনের হাতে তুলে দেওয়া হবে, যারা ইসরায়েল ধ্বংসে আগ্রহী নয়। তবে এই প্রশাসন কারা পরিচালনা করবে বা কোন কাঠামোর অধীনে কাজ করবে—সে বিষয়ে কোনো স্পষ্ট পরিকল্পনা তিনি উপস্থাপন করেননি।

নেতানিয়াহু আরো স্পষ্ট করে বলেন, আমরা হামাসকে উৎখাত করতে চাই, কিন্তু গাজা নিজেদের কাছে রাখতে চাই না। আমরা শুধু একটি নিরাপত্তা বেষ্টনী চাই, যাতে গাজা থেকে আমাদের প্রতি হুমকি না আসে। গাজার শাসন আমরা এমন আরব শক্তির হাতে দিতে চাই, যারা কার্যকরভাবে শাসন করতে পারবে এবং আমাদের নিরাপত্তার জন্য ঝুঁকি তৈরি করবে না।

তবে এই পরিকল্পনা ইসরায়েলের ভেতরেই তীব্র সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। বিরোধীদলীয় নেতা ইয়ার লাপিদ একে ভবিষ্যতের জন্য বিপজ্জনক আখ্যা দিয়ে বলেন, ‘এটি মানে আরো যুদ্ধ, আরো জিম্মির মৃত্যু এবং বিপুল পরিমাণ অর্থের অপচয়। সরকারের এই কৌশল দীর্ঘমেয়াদে ইসরায়েলের জন্য অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করবে।

বিশ্লেষকদের মতে, ইসরায়েলের এই নতুন দখল পরিকল্পনা শুধু গাজার রাজনৈতিক ও মানবিক সংকটকেই আরো জটিল করবে না, বরং মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে উত্তেজনার আগুন জ্বালাতে পারে।

ঢাকা এক্সপ্রেস/ইউকে

আরও পড়ুন