শিরোনাম
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ১৮:০৩, ১৬ জুন ২০২৫
তেহরানে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইসমাইল বাঘাঈ হামানে বলেন, “সাম্প্রতিক ঘটনাবলির প্রেক্ষাপটে এনপিটি থেকে সরে যাওয়ার বিষয়ে উপযুক্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। বিষয়টি নিয়ে পার্লামেন্টে একটি প্রস্তাব প্রণয়ন করা হয়েছে এবং পরবর্তী ধাপে সরকার ও সংসদ একযোগে কাজ করবে।”
১৯৭০ সালে ইরান এনপিটি চুক্তিতে স্বাক্ষর করে। চুক্তিটি শান্তিপূর্ণ পরমাণু শক্তির ব্যবহারের অধিকার দিলেও পারমাণবিক অস্ত্র তৈরিতে কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। সম্প্রতি আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (IAEA) অভিযোগ করে, ইরান এই চুক্তির শর্ত লঙ্ঘন করছে।
এ প্রেক্ষাপটে গত সপ্তাহে ইরানের একটি পরমাণু স্থাপনায় বড় ধরনের বিমান হামলা চালায় ইসরায়েল। তেহরান দাবি করেছে, আইএইএ-র প্রস্তাবই মূলত ইসরায়েলি হামলার পথ উন্মুক্ত করেছে। মুখপাত্র বাঘাঈ বলেন, “যেসব দেশ এই প্রস্তাবে ভোট দিয়েছে, তারাই ইসরায়েলের হামলার মদদ দিয়েছে।”
ইরান অবশ্য শুরু থেকেই দাবি করে আসছে, তাদের পরমাণু কর্মসূচি পুরোপুরি শান্তিপূর্ণ। এমনকি সোমবার প্রেসিডেন্ট মাসউদ পেজেশকিয়ান বলেন, “পারমাণবিক অস্ত্র উৎপাদন ইসলামি শরিয়াহ এবং সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনেয়ির ফতোয়ার পরিপন্থি।”
তবে একই দিন ইরানের পার্লামেন্টে এনপিটি থেকে সরে যাওয়ার প্রস্তাবকে গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করা হয়। ধারণা করা হচ্ছে, চুক্তি থেকে সরে গেলে ইরান তার পরমাণু কার্যক্রম আরও প্রকাশ্যভাবে পরিচালনা করতে পারবে। এমনকি পরমাণু অস্ত্র পরীক্ষার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না বলে কূটনৈতিক মহলে গুঞ্জন উঠেছে।
উল্লেখ্য, ইসরায়েল কখনোই এনপিটি চুক্তিতে স্বাক্ষর করেনি। আন্তর্জাতিক মহলে দীর্ঘদিন ধরেই ধারণা রয়েছে, দেশটির কাছে পরমাণু অস্ত্র রয়েছে—যদিও ইসরায়েল কখনো তা স্বীকার বা অস্বীকার করেনি।
ইরান দাবি করেছে, “মধ্যপ্রাচ্যে একমাত্র গণবিধ্বংসী অস্ত্রের অধিকারী রাষ্ট্র হলো ইসরায়েল।” বিশ্লেষকরা বলছেন, ইরান যদি সত্যিই এনপিটি থেকে সরে যায়, তাহলে তা হবে পরমাণু কূটনীতির এক নতুন উত্তাল অধ্যায়ের সূচনা, যার প্রভাব পড়বে গোটা বিশ্ব রাজনীতিতে।
এমআরএইচ