ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৭ জুন ২০২৫

৪ আষাঢ় ১৪৩২, ২০ জ্বিলহজ্জ ১৪৪৬

শিরোনাম

Scroll
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়ে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের আদেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল
Scroll
সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে সচিবালয়ে আবারো বিক্ষোভে কর্মচারীরা
Scroll
ঈদযাত্রার ১৫ দিনে দেশে ৩৭৯টি সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৩৯০ ও আহত ১১৮২ জন: বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি
Scroll
কক্সবাজারের রামুতে যাত্রীবাহী বাস ও কাভার্ডভ্যানের সংঘর্ষে বাবা-ছেলেসহ নিহত ৩, আহত ১০
Scroll
নেপাল থেকে আসা বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হয়েছে
Scroll
চারদিনের পাল্টাপাল্টি হামলায় ইসরায়েলে নিহত ২০, ইরানে ২২৪ জন
Scroll
পরিবারসহ বাঙ্কারে লুকিয়েছেন ইরানের সর্বোচ্চ ধর্ময়ি নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি
Scroll
সিক্রেট ইন্টেলিজেন্স সার্ভিস বা এমআই সিক্সের ইতিহাসে প্রথম নারী প্রধান হচ্ছেন ব্লেইজ মেট্রেওয়েলি
Scroll
নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপ-২০২৫-এ ভারত ও পাকিস্তানের ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে শ্রীলঙ্কায় কলম্বোয়

ইসরায়েল-ইরান যুদ্ধ: কীভাবে শেষ হতে পারে এই ভয়াবহ সংঘর্ষ?

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ: ২৩:১৮, ১৬ জুন ২০২৫

ইসরায়েল-ইরান যুদ্ধ: কীভাবে শেষ হতে পারে এই ভয়াবহ সংঘর্ষ?

ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধ এখন আর কোনো গোপন উত্তেজনা নয়—এটি রূপ নিয়েছে প্রকাশ্য সংঘর্ষে। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, যত দিন লাগুক, ইরানের পারমাণবিক সক্ষমতা ধ্বংস এবং সামরিক শক্তিকে পঙ্গু করতে আঘাত হানতে থাকবে ইসরায়েল।

উত্তর দিচ্ছে ইরানও—ড্রোন ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে। কিন্তু এই লড়াইয়ের পরিণতি কী? কেমন হতে পারে যুদ্ধের শেষ অধ্যায়? ‘ফরেন পলিসি’তে বিশ্লেষকদ্বয় চারটি সম্ভাব্য চিত্র তুলে ধরেছেন, যার প্রতিটি মধ্যপ্রাচ্যের ভবিষ্যতের জন্য গভীর সংকেত বহন করে।

প্রথম দৃশ্যপট: মুখ রক্ষার ‘আত্মসমর্পণ’

ইরান হয়তো দৃশ্যমান কয়েকটি প্রতিশোধমূলক হামলার মাধ্যমে দেখাতে চাইবে যে, তারা ইসরায়েলের আঘাতে চুপ করে থাকেনি। তারপর আন্তর্জাতিক চাপের মুখে দ্রুত যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হতে পারে।

এটি অনেকটাই ২০২৪ সালের ইসরায়েল-হিজবুল্লাহ যুদ্ধের পুনরাবৃত্তি হবে, যেখানে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির পর হিজবুল্লাহ যুদ্ধ থামিয়ে দিয়েছিল মুখ রক্ষার একটি যুক্তির আশ্রয়ে।

এখন ইরানও একই পরিস্থিতিতে পড়েছে—ইসরায়েলের একের পর এক আঘাতে শীর্ষ সেনা কর্মকর্তারা নিহত, কমান্ড কাঠামো ভেঙে পড়েছে। এমন প্রেক্ষাপটে দ্রুত প্রতিশোধ নেওয়া কঠিন। তাই হয়তো ইরান কৌশলগতভাবে পিছু হটে, ভবিষ্যতের জন্য প্রতিশোধ জমিয়ে রাখবে।

দ্বিতীয় দৃশ্যপট: সীমিত প্রতিশোধ ও আলোচনার চাপ

ইরান কিছু সফল ক্ষেপণাস্ত্র বা সন্ত্রাসী হামলা চালাতে পারে, যা ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ভেদ করবে। তবে এতে আন্তর্জাতিক চাপ বাড়বে যুদ্ধ থামানোর জন্য।

ইউরোপীয় দেশগুলো ইতিমধ্যে শান্তির আহ্বান জানিয়েছে। এমনকি ডোনাল্ড ট্রাম্প পর্যন্ত পারমাণবিক আলোচনায় ফেরার জন্য তেহরানকে আহ্বান জানিয়েছেন। ট্রাম্প লিখেছেন: “আর কোনো মৃত্যু নয়, আর কোনো ধ্বংস নয়। এখনই করো, পরে নয়।”

এই আহ্বান ইরানের কাছে লোভনীয় হতে পারে—অর্থনীতি চরম দুরবস্থায়, নিষেধাজ্ঞা শিথিল করা দরকার। কিন্তু যুদ্ধ চলাকালে আলোচনায় বসা রাজনৈতিক আত্মঘাতী হতে পারে। তাছাড়া, এমন চুক্তিকে ট্রাম্প নিজের কৃতিত্ব হিসেবে দেখালে, ইরানের জন্য এটি আরও অপমানজনক হবে।

তৃতীয় দৃশ্যপট: পুরো মধ্যপ্রাচ্যে ছড়িয়ে পড়া যুদ্ধ

সবচেয়ে ভয়াবহ দৃশ্য হলো—এই যুদ্ধ যদি ইরান যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের বিরুদ্ধে সরাসরি সংঘর্ষে নিয়ে যায়। ইরান ইতিমধ্যেই মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন ঘাঁটিগুলোতে হামলার হুমকি দিয়েছে। জর্ডান জানিয়েছে, তারা তাদের আকাশসীমায় ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র ভূপাতিত করেছে। মার্কিন ঘাঁটি রয়েছে সৌদি আরব, কুয়েত ও জর্ডানে—এই ঘাঁটিগুলো হামলার লক্ষ্যবস্তু হতে পারে।

যদি যুদ্ধ এ পর্যায়ে পৌঁছায়, তবে যুক্তরাষ্ট্র হয়তো ইসরায়েলের অসমাপ্ত কাজ শেষ করতে সরাসরি ইরানের পরমাণু স্থাপনায় হামলা চালাতে পারে। এর ফলে মধ্যপ্রাচ্য এক ভয়াবহ, অনিয়ন্ত্রিত সংঘাতে জড়িয়ে পড়বে।

চতুর্থ দৃশ্যপট: দীর্ঘমেয়াদি স্নায়ুযুদ্ধ ও গুপ্ত সংঘর্ষ

সব যুদ্ধের একটি আনুষ্ঠানিক ‘শেষ’ নেই। এটি হতে পারে বছরের পর বছর ধরে চলা কম মাত্রার সংঘর্ষ—ড্রোন হামলা, গুপ্তহত্যা, সাইবার নাশকতা, প্রতিশোধমূলক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা।

ইসরায়েল নিরবিচারে আঘাত হানবে, ইরানও সন্ত্রাসী হামলা চালাবে। শান্তি আসবে না, যুদ্ধও পুরোপুরি থামবে না—এই অবস্থায় ইরান হয়তো গোপনে পরমাণু কর্মসূচি এগিয়ে নেবে আন্তর্জাতিক নজরদারির বাইরে।

সবকিছু একসাথে—সম্ভাব্য সংমিশ্রণ

একটি দৃশ্য নয়—এর সংমিশ্রণও বাস্তবতা হতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, এখন যুদ্ধবিরতি হলেও ইরান ভবিষ্যতে প্রতিশোধ নিতে পারে। মার্কিন-ইরান পারমাণবিক আলোচনায় অগ্রগতি হলেও সন্ত্রাসী হামলা থেমে নাও যেতে পারে।

সব মিলিয়ে এই যুদ্ধ যে দীর্ঘস্থায়ী, বহুমাত্রিক এবং পুরো মধ্যপ্রাচ্যের জন্য নির্ধারক হতে যাচ্ছে—তা এখন নিশ্চিত।

এমআরএইচ

আরও পড়ুন