শিরোনাম
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৪:৩৩, ৩ আগস্ট ২০২৫
ছবি: সংগৃহীত
রবিবার (৩ আগস্ট) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত রাজধানীর একাধিক এলাকা ঘুরে সড়কে যানজটের চিত্র দেখা গেছে।
জানা গেছে, জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে বিজয়ের প্রথম বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে আজ ছাত্রদলের উদ্যোগে শাহবাগে ‘ছাত্র সমাবেশ’ এবং এনসিপির উদ্যোগে ঢাকা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ‘জুলাই ঘোষণাপত্র ও সনদের’ দাবিতে জনসমাবেশ আয়োজন করা হয়েছে। এ ছাড়া সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ‘জুলাই জাগরণ’ অনুষ্ঠান করছে সাইমুম শিল্পীগোষ্ঠী।
এসব রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশ নিতে হাজারো নেতাকর্মী সমাবেশস্থলের দিকে যাচ্ছেন। ফলে রাজধানীর সড়কগুলোতে গাড়ির পাশাপাশি মানুষেরও বাড়তি চাপ তৈরি হয়েছে।
এ ছাড়া আজ অনুষ্ঠিত হচ্ছে এইচএসসি/সমমান এবং বিসিএস পরীক্ষা। এর প্রভাবও রয়েছে সড়কে। ফলে বিভিন্ন স্থানে দীর্ঘ যানজট তৈরি হয়েছে। এতে বিপাকে পড়েছেন নগরবাসী। কোথাও কোথাও দেখা দিয়েছে গণপরিবহন সংকটও।
ফার্মগেটে দাঁড়িয়ে থাকা যাত্রী রবিউল সরকার বলেন, বিমানবন্দর যাব বলে গাড়ির জন্য দাঁড়িয়ে আছি। বাস আসে কিন্তু বাসে পা রাখার জায়গা নেই। রাস্তায় যানজট গাড়িও নড়ছে না। এর মধ্যে আবার তীব্র গরম। সব মিলিয়ে চরম ভোগান্তির মুখে পড়লাম।
শ্যামলীতে যানজটে অপেক্ষমাণ সিএনজিচালক বিপুল বিশ্বাস বলেন, গাড়ি সামনের দিকে যাচ্ছে না। প্রচুর যানজট। এমনিতেই রবিবার যানজট একটু বেশি থাকে। তবে আজ আরো বেশি। আধা ঘণ্টার বেশি দাঁড়িয়ে আছি এক জায়গায়। বিকল্প কোনো রাস্তা পাচ্ছি না গাড়ি নিয়ে বের হওয়ার। আজ রাস্তায় অনেক ভোগান্তি হবে সবার।
ঠিকানা পরিবহনের চালক সিদ্দিক মিয়া বলেন, আমিন বাজারের ওই পাশে জ্যাম পাইনি। তবে আমিন বাজার পার হয়ে তারপর থেকে জ্যাম পেয়েছি।
কারওয়ানবাজারে রিপন নামে এক চাকরিজীবী বলেন, ‘গাড়িতেই উঠতে আজ অনেক সময় লেগেছে। তাও ঝুলে ঝুলে এসেছি। বিশ্বরোড় থেকে কারওয়ানবাজার আসতে সাধারণত এক-দেড়ঘণ্টা লাগে, সেখানে আজ দুই ঘণ্টারও বেশি সময় লেগেছে।’
বাসচালক শফিক বলেন, টেকনিক্যাল সিগন্যাল থেকে শ্যামলী পর্যন্ত আসতেই ৩৫ মিনিট লাগছে। যানজট না থাকলে আসতে সর্বোচ্চ ১০ মিনিট লাগতো। রাস্তায় মোটামুটি জ্যাম আছে ভালোই।
গাড়িতে উঠতে না পেরে আসাদগেট থেকে হেঁটেই কারওয়ানবাজারের দিকে রওনা হন ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেন। তিনি বলেন, গাড়ির জন্য অনেকক্ষণ অপেক্ষা করছি। গাড়িও কম আবার ভিড়ও, তাই অপেক্ষা না করে হেঁটে রওনা দিলাম।
সেখানে দাঁড়িয়ে বাসের জন্য অপেক্ষা করা আরেক যাত্রী বাদল মিয়া বলেন, কয়েকটা বাস সামনে দিয়ে গেল। ভেতরের ওঠার মতো পরিস্থিতি দেখলাম না। গুলিস্থান যাবো। না পেলে হেঁটে ভেঙে ভেঙে যেতে হবে।
এদিকে, সড়কে প্রচণ্ড চাপের প্রভাব পড়ে মেট্রোরেলেও। ফার্মগেট, পল্লবী, মিরপুরসহ বিভিন্ন স্টেশনে যাত্রীদের দীর্ঘ লাইন দেখা যায়। ফার্মগেট স্টেশনে টিকিটের জন্য অপেক্ষমাণ যাত্রী আসিফ আলী বলেন, রাস্তায় জ্যাম দেখে মেট্রো ধরলাম। কিন্তু এখানে এসেও দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে।
দুই দলের সমাবেশ ঘিরে রাজধানীতে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণের কথা আগে থেকে জানিয়েছিল ডিএমপি। শনিবার ডিএমপির এক গণবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, রবিবার ছাত্রদলের উদ্যোগে শাহবাগ মোড়ে ‘ছাত্র সমাবেশ’, এনসিপির উদ্যোগে ঢাকা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ‘জুলাই ঘোষণাপত্র ও সনদের’ দাবিতে জনসমাবেশ এবং সাইমুম শিল্পী-গোষ্ঠীর উদ্যোগে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ‘জুলাই জাগরণ’ অনুষ্ঠান উপলক্ষ্যে এসব এলাকায় যান চলাচল সীমিত থাকবে। তাই সমাবেশ চলাকালীন সময় বিকল্প পথ ব্যবহার করতে অনুরোধ করা হলো।
ডাইভারশন পয়েন্ট এবং বিকল্প সড়ক: হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল মোড় : সোনারগাঁও সিগন্যাল/বাংলামোটর ক্রসিং হয়ে উত্তর দিক থেকে আগত যানবাহনগুলো হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল ক্রসিং এ সোজা শাহবাগের দিকে না গিয়ে বামে মোড় নিয়ে হেয়ার রোড/মিন্টু রোড হয়ে যাতায়াত করবে।
কাটাবন মোড় : সায়েন্সল্যাব ক্রসিং হয়ে পশ্চিম দিক থেকে আগত যানবাহনগুলো কাটাবন মোড় থেকে শাহবাগের দিকে না গিয়ে ডানে মোড় নিয়ে নীলক্ষেত/পলাশী হয়ে অথবা কাটাবন মোড় থেকে বামে মোড় নিয়ে সোনারগাঁও (হাতিরপুল) রোড হয়ে বাংলামোটর লিংক রোড দিয়ে চলাচল করবে।
মৎস্য ভবন মোড় : হাইকোর্ট/কদম ফোয়ারা ক্রসিং হয়ে আগত যানবাহনগুলো মৎস্য ভবন থেকে শাহবাগের দিকে না গিয়ে সোজা হেয়ার রোড/শহীদ ক্যাপ্টেন মনসুর আলী সরণি (মগবাজার রোড) হয়ে চলাচল করবে।
অপরদিকে কাকরাইল মসজিদ ক্রসিং হয়ে উত্তর দিক থেকে আগত যানবাহন মৎস্যভবন ক্রসিং থেকে শাহবাগের দিকে না গিয়ে সোজা হাইকোর্ট হয়ে গুলিস্তান/ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে চলাচল করবে।
টিএসসি/রাজু ভাস্কর্য : নীলক্ষেত ক্রসিং/দোয়েল চত্বর ক্রসিং থেকে আসা যানবাহন টিএসটি/রাজু ভাস্কর্য ক্রসিংয়ে এসে শাহবাগের দিকে না গিয়ে দোয়েল চত্বর/নীলক্ষেত ক্রসিং হয়ে চলাচল করবে।
এছাড়া শহীদ মিনার সংলগ্ন সড়ক এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের প্রবেশ পথ যথাসম্ভব পরিহার করার জন্য অনুরোধ জানিয়েছে পুলিশ।
ঢাকা এক্সপ্রেস/আরইউ