ঢাকা, সোমবার, ০৪ আগস্ট ২০২৫

১৯ শ্রাবণ ১৪৩২, ০৮ সফর ১৪৪৭

শিরোনাম

Scroll
এনসিপির ২৪ দফা ‘নতুন বাংলাদেশের ইশতেহার’ ঘোষণা
Scroll
আগামী ৫ বা ৮ আগস্টে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে নির্বাচনের সময় ঘোষণা করতে পারেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস
Scroll
শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে সূচনা বক্তব্য শুরু, সরাসরি সম্প্রচার হচ্ছে বিচার
Scroll
পাল্টা শুল্ক নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চুক্তি চূড়ান্ত হবে এ মাসেই
Scroll
ঢাকায় আজ তিন সমাবেশ, দুই পরীক্ষা: যান চলাচলের বিশেষ নির্দেশনা ডিএমপির
Scroll
বিমান বিধ্বস্তের ১৪ দিনের মাথায় খুলেছে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ
Scroll
পদ্মা সেতুর টোলপ্লাজায় মোটরসাইকেলে বাসের ধাক্কা, নিহত ২
Scroll
পরমাণু বিজ্ঞানী অধ্যাপক শমশের আলী ইন্তেকাল করেছেন
Scroll
গাজায় ত্রাণের অপেক্ষায় থাকা মানুষকে গুলি, নিহত আরো ৬২ জন
Scroll
নারী কোপা আমেরিকার ফাইনালে কলম্বিয়াকে হারিয়ে শিরোপা ব্রাজিলের

বেনাপোলে অকেজো কোটি টাকার বাস টার্মিনাল

যশোর প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২১:৫৩, ৩ আগস্ট ২০২৫

বেনাপোলে অকেজো কোটি টাকার বাস টার্মিনাল

ছবি: ঢাকা এক্সপ্রেস

আট বছর আগে ১৬ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত যশোরের বেনাপোল পৌরবাস টার্মিনালটি কোন কাজে আসছে না। সেখানে যাত্রীবাহী কোন বাস না থাকায় টার্মিনালটি খাঁ খাঁ করছে। বিগত আওয়ামী লীগ সরকার ২০১৭ সালে বাস টার্মিনালটি নির্মাণের পর দুবার উদ্বোধন করা হলেও এখান থেকে কোনো বাস ছাড়া হয় না, কোনো বাস দাঁড়ায়ও না। যে কারণে কাজে আসছে না মোটা অংকের ব্যয়ে নির্মিত এই টার্মিনাল।

মহাসড়কে বেনাপোল চেকপোস্ট থেকে কাগজপুকুর পর্যন্ত ভয়াবহ যানজট মুক্ত রাখতে টার্মিনালটি নির্মাণ করেছিল বেনাপোল পৌরসভা। কিন্তু বাস মালিক ও শ্রমিক সহ স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তির স্বার্থের কারণে সফল হচ্ছে না। ফলে যাত্রী ও সাধারণ নাগরিকের সীমাহীন ভোগান্তি রয়েই গেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, দেশের প্রধান স্থলবন্দর ও ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট যশোরের বেনাপোলে অবস্থিত। এই ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে দিনে হাজার হাজার মানুষ বাংলাদেশ-ভারত যাতায়াত করে। প্রধান সড়কের শেষ প্রান্তে নো-ম্যান্সল্যান্ড সংলগ্ন স্থানে ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট হওয়ায় যাত্রী ও পরিবহনের চাপে সেখানে এবং যশোর রোডের প্রায় ৩ কিলোমিটার জুড়ে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। পরিস্থিতি মোকাবিলায় বেনাপোল পৌরসভা শহরের প্রবেশ মুখে কাগজপুকুর এলাকায় মহাসড়কের ধারে নতুন টার্মিনাল নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। প্রায় ১৬ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত নতুন টার্মিনালটি ২০১৭ সালে উদ্বোধন করেন তখনকার সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। কিন্তু সেই থেকে এখনও পর্যন্ত টার্মিনালটি ব্যবহৃত হয়নি। মালিক-শ্রমিকরা তাদের যানবাহন আগের মতোই নো-ম্যান্সল্যান্ডের কাছাকাছি চেকপোস্ট বাস টার্মিনাল পর্যন্ত নিয়ে যাচ্ছে।

ফ্যাসিবাদ আওয়ামীলীগ সরকারের পতনের পর বেনাপোল পৌরসভার প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব নেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ডা. কাজী নাজিব হাসান। যশোর জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. আজাহারুল ইসলামের নির্দেশনায় তিনি গত বছর ৭ নভেম্বর টার্মিনালটি নতুন করে চালুর উদ্যোগ নেন। কিন্তু এ দফায়ও মাত্র সাত দিনের মতো সচল ছিল টার্মিনালটি। পরে যানবাহন মালিক-শ্রমিকরা টার্মিনালে গাড়ি না ঢুকিয়ে আগের মতো ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট এলাকায় নিয়ে যান। মালিক-শ্রমিকরা কৌশলের আশ্রয় নিয়ে সব সময় টার্মিনালে দু-একটি বাস রাখছেন।

অভিযোগ রয়েছে, নতুন টার্মিনালটি যাতে ব্যবহৃত না হয়, তার পেছন থেকে যারা কলকাঠি নাড়েন, তাদের শীর্ষে আছেন বেনাপোল ট্রান্সপোর্ট মালিক সমিতির এক নেতা বলেন, ‘পৃথিবীর কোনো দেশের সীমান্তের চেকপোস্ট থেকে তিন-চার কিলোমিটার দূরে টার্মিনাল নেই। এত দূরে টার্মিনাল নির্মাণ করা অবাস্তব চিন্তা। সে কারণে টার্মিনালটি ব্যবহৃত হচ্ছে না।’

স্থানীয় অনেকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চেকপোস্ট থেকে দূরবর্তী স্থানে টার্মিনাল করার সিদ্ধান্তটি কতটা যুক্তিপূর্ণ ছিল- তা নিয়ে তাদের মধ্যে সন্দেহ আছে। শার্শা উপজেলা বিএনপির নবনির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক নূরুজ্জামান লিটনও এত দূরে টার্মিনাল নির্মাণের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তিনি বলেন, এ বিষয়ে পানি অনেক দূর গড়িয়েছে। বিষয়টি এখন আছে নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের হাতে।

জানতে চাইলে শার্শা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও বেনাপোল পৌরসভার প্রশাসক ডা. কাজী নাজিব হাসান বলেন, ‘গত ৭ নভেম্বর জেলা প্রশাসকের নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা নতুন বাসটার্মিনালটি চালু করেছি। সেখানে নামাজের স্থান, ব্রেস্ট ফিডিং কর্নার, আনসারদের থাকার ব্যবস্থাসহ আধুনিক সব সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা হয়েছে। তা সত্ত্বেও বাসমালিকরা এই টার্মিনাল ব্যবহার না করে নো-ম্যান্সল্যান্ডের কাছে বেনাপোল স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ পরিচালিত টার্মিনালে বাস নিয়ে যাচ্ছেন। অথচ ওই টার্মিনালটি শুধু আন্তঃদেশীয় বাস প্রবেশের জন্য নির্ধারিত।'

ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট থেকে তিন-চার কিলোমিটার দূরে বাসটার্মিনাল হতে পারে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে ডা. কাজী নাজিব বলেন, শাটল বাস চালানোর মতো অপশন দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু বাসমালিকরা সেই অপশন না নিয়ে ধর্মঘট করেন। এখন বন্দর কর্তৃপেক্ষর সদিচ্ছার ওপর নতুন টার্মিনাল সচল হওয়া-না হওয়া নির্ভর করছে।

বেনাপোল বন্দরের পরিচালক মো. শামীম হোসেন বলেন, ‘মাত্র কয়েক মাস হলো আমি এখানে যোগ দিয়েছি। ফলে অনেক কিছুই এখনো বুঝতে পারিনি। তবে দেখছি, বন্দরের পুরোনো টার্মিনালই ব্যবহৃত হচ্ছে। এখন যেহেতু আন্তঃদেশীয় যাত্রীর চাপ কম, তাই তেমন সমস্যা হচ্ছে না। কিন্তু যাত্রীর চাপ বাড়লে নতুন টার্মিনাল ব্যবহারের উদ্যোগ নেওয়া হবে। এ বিষয়ে যশোর জেলা প্রশাসনের রেজুলেশনও আমি দেখেছি।’

যোগাযোগ করা হলে যশোরের জেলা প্রশাসক মো. আজাহারুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি এখন নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করছে। মন্ত্রণালয় যেভাবে সিদ্ধান্ত দেবে, সেভাবেই কার্যকর করা হবে।

ঢাকা এক্সপ্রেস/ইউকে

এ সম্পর্কিত খবর

আরও পড়ুন