শিরোনাম
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৯:৩৪, ৩ আগস্ট ২০২৫ | আপডেট: ১৯:৪৩, ৩ আগস্ট ২০২৫
ছবি: সংগৃহীত
‘নতুন বাংলাদেশের জন্য ইশতেহার’ শীর্ষক তাদের দলীয় ঘোষণা ও অঙ্গীকারনামায় আছে-
১। নতুন সংবিধান ও সেকেন্ড রিপাবলিক
২। জুলাই অভ্যুত্থানের স্বীকৃতি ও বিচার
৩। গণতন্ত্র ও রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের সংস্কার
৪। ন্যায়ভিত্তিক বিচারব্যবস্থা ও আইন সংস্কার
৫। সেবামুখী প্রশাসন ও দুর্নীতি দমন
৬। জনবান্ধব আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী
৭। গ্রাম পার্লামেন্ট ও স্থানীয় সরকার
৮। স্বাধীন গণমাধ্যম ও শক্তিশালী নাগরিক সমাজ
৯। সার্বজনীন স্বাস্থ্য
১০। জাতিগঠনে শিক্ষানীতি
১১। গবেষণা, উদ্ভাবন ও তথ্যপ্রযুক্তি বিপ্লব
১২। ধর্ম, সম্প্রদায় ও জাতিসত্বার মর্যাদা
১৩। নারীর নিরাপত্তা, অধিকার ও ক্ষমতায়ন
১৪। মানবকেন্দ্রিক ও কল্যাণমুখী অর্থনীতি
১৫। তারুণ্য ও কর্মসংস্থান
১৬। বহুমুখী বাণিজ্য ও শিল্পায়ন নীতি
১৭। টেকসই কৃষি ও খাদ্য সার্বভৌমত্ব
১৮। শ্রমিক-কৃষকের অধিকার
১৯। জাতীয় সম্পদ ব্যবস্থাপনা
২০। নগরায়ন, পরিবহন ও আবাসন পরিকল্পনা
২১। জলবায়ু সহনশীলতা ও নদী-সমুদ্র রক্ষা
২২। প্রবাসী বাংলাদেশির মর্যাদা ও অধিকার
২৩। বাংলাদেশপন্থী পররাষ্ট্রনীতি
২৪। জাতীয় প্রতিরক্ষা কৌশল
নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘আমরা একটি গণপরিষদের মাধ্যমে নতুন সংবিধান প্রণয়ন করব, যা একনায়কতন্ত্র, পরিবারতন্ত্র ও ফ্যাসিবাদী কাঠামোর অবসান ঘটাবে। এই সংবিধানে থাকবে আইন, বিচার ও নির্বাহী বিভাগের মধ্যে সুনির্দিষ্ট ক্ষমতার বিভাজন ও ভারসাম্য। নাগরিকের জীবন, জীবিকা, মর্যাদা ও অধিকার হবে রাষ্ট্রের মূল অঙ্গীকার।’
তিনি বলেন, ‘আমরা জুলাই ঘোষণাপত্র ও সনদের সাংবিধানিক স্বীকৃতি দেবো। এটি হবে নতুন বাংলাদেশের ভিত্তিপ্রস্তর।’
জুলাই অভ্যুত্থান, শাপলা গণহত্যা ও বিচার দাবি
ইশতেহারে জুলাই অভ্যুত্থানকে স্বীকৃতি দিয়ে বলা হয়, এটি ছিল উপনিবেশবিরোধী লড়াই ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাভিত্তিক নতুন বাংলাদেশের আকাঙ্ক্ষা। ঘোষণায় উল্লেখ করা হয়—
‘আমরা জুলাইয়ে সংঘটিত গণহত্যা, শাপলা চত্বরে হামলা, বিডিআর হত্যাকাণ্ড, গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যাসহ আওয়ামী ফ্যাসিবাদের সময়ে সংঘটিত সব মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার নিশ্চিত করব।’
শহীদদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি, আহতদের সুচিকিৎসা ও পুনর্বাসন, এবং জুলাই স্মৃতির সংরক্ষণে পদক্ষেপ নেওয়ার অঙ্গীকার করে বলা হয়, ‘জুলাইয়ের জাতীয় ঐক্য ও হাজারো শহীদের আত্মত্যাগ আমাদের প্রেরণা। আমরা সবসময় ফ্যাসিবাদবিরোধী লড়াইয়ের সহযোদ্ধাদের পাশে থাকব।’
নতুন রাজনীতির ইঙ্গিত
ইশতেহারের সারমর্মে উঠে আসে, এনসিপি কেবল রাজনৈতিক দল নয়, বরং একটি রাষ্ট্রগঠনের আন্দোলন হিসেবে নিজেদের তুলে ধরছে। দলটির ভাষায়, এটি হচ্ছে ‘পুরাতনের অবসান ও নতুন বাংলাদেশের সূচনা’—যেখানে মূল হবে নাগরিকের অধিকার, রাষ্ট্রের দায়বদ্ধতা, গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান ও অংশগ্রহণমূলক শাসন।
এই ঘোষণায় দেশের প্রচলিত রাজনীতি, প্রশাসন ও বিচারব্যবস্থার প্রতি গভীর অনাস্থা প্রকাশ পেয়েছে এবং সমান্তরাল একটি কাঠামো তৈরির কথা বলা হয়েছে, যেটি তারা বলছে—সেকেন্ড রিপাবলিক।
জাতীয় নাগরিক পার্টির ২৪ দফা ইশতেহার দেশের বর্তমান রাজনৈতিক, প্রশাসনিক ও সামাজিক কাঠামোর বিরুদ্ধে একটি রূপান্তরকামী আন্দোলনের দিকনির্দেশনা। তাদের ঘোষিত সেকেন্ড রিপাবলিকের রূপরেখা, নতুন সংবিধান ও পুরাতন শাসনব্যবস্থার প্রত্যাখ্যান—সব মিলিয়ে এটি বর্তমান সময়ের একটি ব্যতিক্রমধর্মী ও উচ্চাভিলাষী ইশতেহার হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
ঢাকা এক্সপ্রেস/ইউকে